1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ত্রিশঙ্কু সংসদই ভারতের ভবিষ্যত

সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়১৬ মে ২০০৯

ত্রিশঙ্কু সংসদ হওয়ার সম্ভাবনাই জোরদার, বলছে যাবতীয় সমীক্ষা৷ ভোটগণনার প্রস্তুতি চূড়ান্ত দেশের সর্বত্রই৷ কড়া নজরদারী রয়েছে নিরাপত্তাতেও৷

https://p.dw.com/p/HrUL
ফটো ফিনিশের পথে ভারতছবি: AP

শেষের হাসি হাসবেন কে কিংবা কোন দল ? এ প্রশ্নের কোন সন্তোষজনক জবাব মিলছে না ভারতের নির্বাচনী চিত্রে গত প্রায় দুই দশক ধরে৷ ১৯৮৯ সালের নির্বাচন থেকেই এই ত্রিশঙ্কু সংসদ এবং জোট সরকারের চলন দেখছে ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্র৷ পরিস্থিতি যেদিকেই ঘুরুক না কেন, ২০০৯ – এর সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের ফলাফলে তার কোনরকম বাত্যয় হবে না৷

এবার নাকি ফোটো ফিনিশ

নতুন দিল্লীতে এই মুহূর্তে যে শব্দটি অহরহ শোনা যাচ্ছে তা হল ফোটো ফিনিশ৷ খেলার জগতে নিত্য ব্যবহৃত এই শব্দবন্ধের অর্থ হল, একেবারে ঘাড়ে ঘাড়ে ফলাফল৷ নির্বাচনের দেশজোড়া অংকও সেই ফোটো ফিনিশে শেষ হবে, অর্থাত একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে কোন দলই নিজেদের জায়গা করে নিতে পারবে না, এমন মতামত শোনা যাচ্ছে প্রায় সব সমীক্ষার ফলাফল থেকেই৷

কেথায় দাঁড়িয়ে ইউ পি এ

গত পাঁচ বছর যে জোট ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতায় থেকেছে, সেই ইউ পি এ-র জোটসঙ্গীরা আগের মত নেই৷ বামদলগুলির সঙ্গ ইউ পি এ ত্যাগ করেছে ভোটের বহু আগেই৷ কিন্তু অন্যান্য বহু ক্ষেত্রে নিজেদের যোগ্যতা তারা প্রমান করেছে এমন দাবী তুলেছে কংগ্রেস৷ সরকার পরিচালনায় নিজেদের সাফল্যের খতিয়ানও অবশ্যই উঠে এসেছে বিভিন্ন অনুষঙ্গে৷ রাজ্যভিত্তিক তুল্যমূল্য বিচারে নির্বাচন পরবর্তী কিছু সমীক্ষার ফলাফল বলছে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে সরকার গঠনের দাবীদার হিসাবে কংগ্রেসেরই সামনে থাকার সম্ভাবনা রীতিমত শক্তিশালী৷ যদিও বুথ ফেরত সমীক্ষার এই সবজান্তা তত্ত্বে বিশ্বাস রাখেন না এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়৷ যেমন ধরা যাক, বিজেপির শীর্ষ নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য বিজ্ঞাপিত লালকৃষ্ণ আদবানির কথাই৷ বুথ ফেরত সমীক্ষার সাফল্য ব্যর্থতা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, গত নির্বাচনে বুথ ফেরত সমীক্ষায় বিশ্বাস করে আমরা ঠকেছিলাম, যা বলা হয়েছিল, তার কিছুই মেলেনি৷ এবার ঠকতে চলেছে কংগ্রেস৷ তবে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র কপিল সিব্বাল আবার এই সমীক্ষার সারসত্যে ঘোর আস্থাবাদী৷

জোটে এগিয়ে এন ডি এ

অন্যদিকে বিরোধী জোট বা বিজেপি নেতৃত্বাধীন এন ডি এ-র তুরুপের তাস বিভিন্ন রাজ্যে ভোটসঙ্গী বা জোটসঙ্গী নির্বাচনে তাদের সদ্য অর্জিত সাফল্য৷ সেই দুরূহ অঙ্কের খেলায় বিজেপি দক্ষিণ এবং উত্তর ভারতে নিজেদের যে অবস্থানে নিয়ে যেতে পেরেছে, সেখানে নিজেদের হিসেবনিকেশ ঠিক থাকলে রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিলের সরকার গড়ার ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা অবশ্যই বিজেপি তথা এন ডি এ-রই৷ কারণ, এখন সরকার গঠন মানে সঠিক জোট গঠনের খেলা৷ গত পাঁচ বছর সরকার চালানোর ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ায় অর্জিত সাফল্যের নিরিখে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস অনেকটা নিজেদের একক যোগ্যতাতেই এই নির্বাচনে কোমর বেঁধেছে, জোটসঙ্গী আগেভাগেই নির্বাচন না করে নেওয়াটা হয়তো তাদের ভুল হতে চলেছে, এমন মন্তব্য করে চলেছেন বহু বিশেষজ্ঞ৷ সেই জোটগঠনের হিসাব মাথায় রাখলে কিছুটা এগিয়ে অবশ্যই এন ডি এ বা বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট৷

বামশক্তি বা তৃতীয় ফ্রন্ট

কিন্তু কী অবস্থা বামেদের ? কংগ্রেসের সঙ্গে জোট তারা ত্যাগ করেছে এন পি টি সহ বিভিন্ন ইস্যুতে৷ বামেরা এই নির্বাচন লড়েছে বিভিন্ন রাজ্যে নানান আঞ্চলিক শরিকদের ভরসায়৷ কংগ্রেস বা বিজেপি কোন দলই যদি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়, সেক্ষেত্রে সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে তৃতীয় বিকল্পের সামনে৷ যে তৃতীয় বিকল্প আসলে বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক রাজনৈতিক শক্তির এক মিলিজুলি পরিস্থিতি৷ সেরকম সম্ভাবনা দেখা দিলে বামেরা সরকার গঠনের ব্যাপারে সর্বভারতীয় উদ্যোগ নেবে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে৷ যদিও প্রধান বামদল তথা সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট, এই মুহূর্তে সর্বশক্তি দিয়ে যিনি সেই তৃতীয় ফ্রন্টের দুর্গরক্ষা করে চলেছেন, সেই কারাট চাইছেন, যেনতেন প্রকারেণ বিজেপিকে সরকার গড়া থেকে রুখতেই হবে৷ তার জন্য যদি শেষ পর্যন্ত আবার কংগ্রেসের সঙ্গেই হাত মেলাতে হয়, তাতেও তেমন আপত্তি নেই কারাট এবং কারাটপন্থীদের৷