তুরস্কে চার থেকে লাখোর উত্তাপ
৩ জুন ২০১৩গত তিন দিনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছে কমপক্ষে এক হাজার মানুষ৷ রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সরকার এভাবে শক্তি প্রয়োগ করেও বিক্ষোভকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না৷ সময় গড়াচ্ছে আর বিক্ষোভের আগুন আরো যেন ছড়িয়ে পড়ছে তুরস্ক জুড়ে৷ ঘটনাটা খুব ছোট৷ ইস্তান্বুলের তাকসিম স্কয়ার এবং পাশের গেজি পার্কের গাছ কাটা চলছিল রাস্তা প্রশস্ত করার নামে৷ তা রোধ করতে পার্কে হাজির হন চারজন পরিবেশবাদী৷ সেখান থেকেই সূত্রপাত৷ পার্কের গাছ কাটার বিষয়টি থেকে এখন প্রধানমন্ত্রী এরদোয়ানের সম্প্রতি নেয়া অনেক পদক্ষেপকেই বিরোধীদল এবং সমাজকর্মীরা দেখছে কতৃত্বপরায়ণতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে৷
এমনটি মনে করা অযৌক্তিকও নয়৷ কামাল আতাতুর্কের ধর্মনিরপেক্ষ তুরস্ক এরদোয়ানের হাত ধরে যেন ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে কট্টর ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র হয়ে ওঠার পথে৷ একে একে এমন সব বিধিনিষেধ চাপানো হচ্ছে যা শুধু কট্টর ইসলামপন্থীরাই কার্যকর করা জরুরি মনে করেন৷ গুরসেল নামের এক পিয়ানিস্ট ও লেখক এ নিয়ে ‘টুইট' করেছিলেন নিজের অ্যাকাউন্টে৷ লিখেছিলেন, ‘‘তুরস্ক আরো ধর্মভিত্তিক হয়ে যাচ্ছে তা কিন্তু নয়, এটা এখন আদতেই আগের চেয়ে অনেক ধর্মীয়৷'' এইটুকু লেখার কারণেই ব্লাসফেমি আইনে মামলা এবং তার পরিণামে গুরসেল এখন কারাগারে৷
সম্প্রতি তুরস্কে প্রকাশ্যে অ্যালকোহল বিক্রির ওপরও বিধিনিষেধ আরোপ করেছে এরদোয়ানের দল একেপি-র সরকার৷ সরকারের তরফ থেকে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে বলা হয়, সব কিছুই করা হচ্ছে তরুণ তুর্কিদের স্বাস্থ্য এবং নৈতিকতার দিকটি ঠিক রাখতে৷ গত মাসে এর বিরুদ্ধে অভিনব এক প্রতিবাদ হয়েছে রাজধানী আঙ্কারায়৷ শ'দুয়েক মানুষ একত্র হয়ে নিজেদের মধ্যে চুমু বিনিময় শুরু করেন নৈতিকতার নামে বাড়াবাড়ির প্রতিবাদে৷ রক্তপাত হয়েছ সেখানেও৷ একেপি সমর্থকরা ছুরি নিয়ে হামলা চালায় তাঁদের ওপর৷ তুরস্কের পরিস্থিতি এখন এমনই৷ বিক্ষোভ মিছিল করলে পুলিশি হামলা, চুম্বন রুখতে ছুরি চালায় সরকার সমর্থকরা৷ চারজনের প্রতিবাদের হাজারো জনতার মিছিল হয়ে যাওয়া কি অস্বাভাবিক?
এসিবি/ডিজি (রয়টার্স)