তীব্র গরমে নাজেহাল বার্লিনের গৃহহীন মানুষ
জার্মানির রাজধানী বার্লিনে আড়াই থেকে সাড়ে ছয় হাজার মানুষ গৃহহীন৷ মাথার ওপর ছাদের অভাব থাকায় তাপদাহে তারাই আছেন সবচেয়ে বেশি বিপদে৷ একটি প্রকল্প চেষ্টা করছে গৃহহীনদের কষ্ট কিছুটা কমানোর৷
রেকর্ড তাপমাত্রা
ইউরোপের বেশিরভাগ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ৷ ২০ জুলাই বার্লিনে তাপমাত্রা পৌঁছায় রেকর্ড ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে৷ বার্লিনের অধিবাসীরা ফ্যান ছেড়ে বা জানালার পর্দা নামিয়ে তাপ থেকে কিছুটা রক্ষা পাচ্ছেন৷ কিন্তু গৃহহীনদের জন্য সংকট ভয়াবহ৷ খোলা জায়গায় রাত কাটানো গৃহহীনদের শরীর শীতল করার জন্য নেই কোনো ব্যবস্থা৷
গরমে শীতল সহায়তা
বার্লিনের শ্যোনেব্যার্গ জেলায় চালু হয়েছে ‘হিটৎসেহিল্ফে’ বা ‘গরমে সহায়তা’ নামের একটি প্রকল্প৷ বার্লিন সেনেটের অর্থায়নে এই পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে আইবি বার্লিন-ব্রান্ডেনবুর্গ৷ এতে খরচ হয়েছে এক লাখ ছয় হাজার ইউরো৷ এর আওতায় একটি বাড়িতে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গৃহহীনদের আধা ঘণ্টার জন্য বিশ্রামের বিছানা এবং স্নানের জন্য বাথরুম৷
খাবার ও পানীয়
ভবনটি মূলত শীতকালে ‘কাল্টেহিল্ফে’ বা ‘শীতের সহায়তা’ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের রাত্রিযাপনের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো৷ তবে এখন তীব্র গরমে দিনের বেলাও এর প্রয়োজন আরো বেশি হয়ে দেখা দিয়েছে৷ শ্যোনেব্যার্গ জেলা কর্তৃপক্ষই এই ভবন বরাদ্দের ব্যবস্থা করেছে৷ নিদ্রা এবং স্নান ছাড়াও গৃহহীনদের জন্য বিনামূল্যে খাবার ও শীতল পানীয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে৷
গৃহহীনদের পরিতৃপ্তি
বার্লিনের অন্য অনেক গৃহহীনের মতো হিটৎসেহিল্ফে তীব্র গরমে আশ্রয় জুগিয়েছে বুলগেরিয়া থেকে আসা লিলিয়ানা এবং এলিয়াসকেও৷ মহামারির কারণে চাকরি ও বাসস্থান হারিয়ে একসময় যোগ দিতে বাধ্য হন যৌন পেশাতেও৷ অন্যদিকে, এলিয়াস তার সব কাগজপত্র হারিয়ে ফেলায় এখন কোথাও কোনো কাজও পাচ্ছেন না৷ প্রচণ্ড গরমে কয়েক ঘণ্টা মাথা গোঁজার ঠাঁই এবং ঠান্ডা জলে স্নান তাদের জোগাচ্ছে সারাদিনের চলার শক্তি৷
আসতে শুরু করেছেন অনেকেই
শুরুতে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এমন পদক্ষেপকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখছিলেন অনেকেই৷ কিন্তু ধীরে ধীরে তারা এই প্রকল্পে আস্থা অর্জন করতে শুরু করেছেন৷ এখন গৃহহীনদের অনেকেই এই আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়মিত আসতে শুরু করেছেন৷
‘সচেতনতা প্রয়োজন’
চরম তাপমাত্রার বিপদ সম্পর্কে বার্লিনের বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বার্লিনের বাম দলের রাজনীতিবিদ সেনেটর কাটিয়া কিপিং৷ তিনি বলেন, ‘‘শীতকালে কাল্টেহিল্ফের জন্য হটলাইনের নম্বর অনেকের কাছেই রয়েছে৷ কিন্তু গ্রীষ্মের তীব্রতার ব্যাপারটি অনেকেরই জানা ছিল না৷’’