1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শান্তি চুক্তিতে সংকটের আশঙ্কা

১ মার্চ ২০১৮

সরকার কিংবা তালেবান কেউই আফগানিস্তানে যুদ্ধ জেতার মতো অবস্থায় নেই৷ কিন্তু দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি চুক্তি হলে দেশটিতে ইতিমধ্যে বিদ্যমান নাজুক পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে, বলে মনে করছেন ডয়চে ভেলের ফ্লোরিয়ান ভাইগান্ড৷

https://p.dw.com/p/2tV4w
Afghanistan Taliban-Gruppe unterstüzt TAPI-Projekt
ছবি: DW/S. Tanha

পালিয়ে যেতে চাওয়ায় এক তরুণ দম্পতিকে চাবুক মারা হয়েছে, ব্যাভিচারের অভিযোগে আরেক তরুণকে পাথর ছুঁড়ে মারা হয়েছে, কাবুলসহ দেশের অন্যান্য স্থানে তিনটি হামলায় ৩৫ জন নিহত হয়েছেন, একটি বাস থামিয়ে কয়েক ডজন যাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে – আফগানিস্তানে গত এক সপ্তাহের খবর এগুলো৷

তবে সেই সপ্তাহটি যে অস্বাভাবিক ছিল, তা নয়৷ বরং এই সহিংসতা যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশটির অতীতকে মনে করিয়ে দিচ্ছে৷ ২০১৮ সালে এখন পর্যন্ত ১৮ হাজারের বেশি আফগান ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন৷ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে প্রতিদিন প্রায় ৩৮০ জন সাধারণ মানুষ পালাচ্ছেন৷

এরকম নিষ্ঠুর পরিস্থিতিতে কেউ আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির মতের সঙ্গে এতদিন দ্বিমত পোষণ করতে চাইতেন না৷ কারণ তিনি তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ভাবতেন৷ বুধবারের আগ পর্যন্ত তিনি শুধু সেইসব তালেবানের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইতেন, যারা অস্ত্র ত্যাগ করতে রাজি ছিলেন৷ কিন্তু বুধবার কাবুলে আয়োজিত শান্তি সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট গনি জানান, তিনি ‘কোনো শর্ত ছাড়াই' তালেবানের সঙ্গে শান্তি চুক্তি বিষয়ক আলোচনা করতে চান৷ এমনকি এই জঙ্গি সংগঠনকে তিনি ‘রাজনৈতিক দল' হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার অঙ্গীকার করছেন৷ আটক তালেবান যোদ্ধাদের মুক্তি দেয়ার বিষয়টিও তিনি ভেবে দেখছেন৷ দেশের সংবিধান ‘সংস্কার' এর বিষয়টিও প্রেসিডেন্ট উড়িয়ে দিচ্ছেন না৷

শুরুতে প্রেসিডেন্ট গনির এই ‘ইউ-টার্ন' বিস্ময়কর মনে হতে পারে৷

সাম্প্রতিক সময়ে আফগান সরকার ও তালেবান খুব চাপের মধ্যে ছিল৷ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সামরিক সহায়তা পাওয়ার পরও আফগান নিরাপত্তা বাহিনী তালেবানের কাছে বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছিল৷

অন্যদিকে, তালেবান পাকিস্তানের সমর্থন হারানোর আশংকায় ছিল৷ কারণ যুক্তরাষ্ট্র ক্রমাগত তালেবানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পাকিস্তানকে চাপ দিচ্ছিল৷

ফলে এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, কোনো পক্ষেরই যুদ্ধে জেতার সম্ভাবনা নেই৷ এটি শান্তি খোঁজার পক্ষে একটি সুযোগ৷

তালেবান বুঝতে পেরেছে, সমস্যার সমাধানের চাবি আছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে৷ তাই তারা কাবুলের সঙ্গে আলোচনায় না বসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলতে চায়৷

এদিকে, আফগানিস্তান বিষয়ক জার্মানির বিশেষ প্রতিনিধি ও কাবুলে জার্মানির সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্কুস পোটৎসেল বন শহরে আফগানিস্তান বিষয়ক তৃতীয় সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন৷ এর আগে ২০০১ ও ২০১১ সালে বন শহরে এরকম সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল৷

Weigand Florian Kommentarbild App
ফ্লোরিয়ান ভাইগান্ড, ডয়চে ভেলে

এ সব বিবেচনায় মনে হচ্ছে, একটি শান্তি চুক্তি হয়ত আসন্ন৷ কিন্তু বিশ্ব সম্প্রদায় কি তার মূল্য চোকাতে প্রস্তুত?

যুদ্ধপরবর্তী সময়ে তালেবানকে যদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হয় তাহলে দেশটির রাজনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে পশ্চিমা বিশ্ব যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল তার বেশিরভাগ থেকে সরে আসতে হবে৷

গত এক সপ্তাহে আফগানিস্তানে সহিংসতার যে উদাহরণগুলো উপরে দেয়া হয়েছে তাতে তালেবানের কাছে সমাজের সংজ্ঞা কী, তা সবার কাছে স্পষ্ট হওয়ার কথা৷

এটা মনে করার কারণ নেই যে, এখনকার তালেবান ওয়ান ইলেভেনের আগের তালেবানের চেয়ে আলাদা৷ আর এই তথ্য লিবারেল বিশ্বের কাজকে অসম্ভব করে তুলবে৷

তালেবান যদি আফগান সরকারের বৈধ অংশীদার হয় তাহলে ইউরোপের সরকারগুলো, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কীভাবে করদাতাদের বোঝাবে যে, আফগানিস্তানের উন্নয়নে সহায়তা করা চালিয়ে যাওয়া উচিত?

সুতরাং তালেবানের সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি উত্তরের চেয়ে বেশি প্রশ্নই সামনে নিয়ে আসছে৷

ফ্লোরিয়ান ভাইগান্ড/জেডএইচ

সংবাদভাষ্যটি কেমন লাগলো লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য