1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডেটা সেন্টার আকর্ষণে জার্মানির একটি অঞ্চলের সাফল্য

২৫ অক্টোবর ২০২১

ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসারের ক্ষেত্রে জার্মানি অনেক শিল্পোন্নত দেশের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে৷ কিন্তু ডেটা সেন্টার গড়ে তোলার ক্ষেত্রে জার্মানির একটি এলাকা যথেষ্ট অগ্রগতি দেখাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/429tP
ছবি: imago/photothek/T. Koehler

ডিজিটাল অবকাঠামোর জংশন গড়ছে জার্মানি

ফ্রাংকফুর্ট শহরের কাছে হাটার্সহাইম শহরে গির্জার চূড়াই সবচেয়ে উঁচু স্থাপনা৷ শহরের জনসংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার৷ শহরের টাউন হলে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা চলছে৷ শহরের মেয়র ক্লাউস শিডলিং বলেন, ‘‘এখন আমরা ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে ‘স্মার্ট সিটিস' যুগে এসে পড়েছি৷ এ ক্ষেত্রে গোটা অঞ্চলে পথিকৃতের ভূমিকা নিয়ে আমরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট৷''

শহরের পূর্ব প্রান্তে নতুন ডেটা সেন্টার গড়ে তুলতে ২০০ কোটি ইউরো ব্যয় হয়েছে, যা দিয়ে দুটি আধুনিক গাড়ি কারখানা গড়ে তোলা যেত৷ 

ডিজিটাল অবকাঠামোর জংশন গড়ছে জার্মানি

শহরের মেয়র ক্লাউস শিডলিং জার্মানিতে ডেটা সেন্টারের রাজা হিসেবে পরিচিত৷ আন্তর্জাতিক স্তরে বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করতে তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন৷ এর মধ্যে আরও তিনটি ডেটা সেন্টার গড়ার পরিকল্পনা হয়েছে৷ ফলে শহরের কোষাগারে রাজস্বের অংক আরও বাড়তে চলেছে৷ ক্লাউস শিডলিং বলেন, ‘‘আগে জানতাম না যে মাঝারি মাপের এমন ডেটা সেন্টার ক্যাম্পাসের বিদ্যুতের চাহিদা ৫০, ৬০ বা ৭০ হাজার জনসংখ্যার কোনো শহরের মতো৷ ফলে পর্যাপ্ত বিদ্যুতের জোগান অপরিহার্য৷ তাছাড়া ফাইবার অপটিক সংযোগ নিশ্চিত করাও অত্যন্ত জরুরি৷''

জার্মানির রাইন-মাইন অঞ্চলে ডেটা সেন্টারের রমরমা দেখার মতো৷ কোম্পানিগুলির কাছে  নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ইন্টারনেটের এই যুগে ব্যাংক, বিমা কোম্পানি বা সোশাল মিডিয়া চ্যানেলের সংবেদনশীল তথ্যভাণ্ডার কড়া পাহারার মধ্যে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব তাদের কাঁধে বর্তায়৷

ফ্রাংকফুর্ট শহরের ডিই-সিআইএক্স ডিজিটাল হাইওয়ের সংযোগস্থল হিসেবে পরিচিত৷ সেখানে ৬৫ হাজার ইন্টারনেট প্রোভাইডারের তথ্যের মধ্যে সমন্বয় করা হয় ও ফরওয়ার্ড করা হয়৷ সেখানে অত্যন্ত জটিল প্রযুক্তির প্রয়োজন পড়ে৷

ব্যবসা এত ভালো চলছে যে এরই মধ্যে স্থপতিদের কোম্পানিগুলি ডেটা সেন্টারের ডিজাইনে বিশেষভাবে হাত পাকিয়েছে৷ প্রধানত এশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরা এই সব উদ্যোগে অর্থ ঢালছেন৷ টিটিএসপি এইচডাব্লিউপি কোম্পানির প্রতিনিধি ক্রিস্টিয়ান ক্রাউটহামেল বলেন, ‘‘আমরা এখনো পর্যন্ত এক বিনিয়োগকারীর সঙ্গে লেনদেন করেছিলাম, যিনি জার্মানিতে এমন প্রকল্পের অর্থায়ন করেন৷ ইতোমধ্যে কিছু দ্বিধাগ্রস্ত পার্টিও দেখা যাচ্ছে৷ তবে প্রায় ৯০ শতাংশ প্রোজেক্ট ডেভেলপারই ইংরাজিভাষী অঞ্চলের মানুষ৷'' 

হানাউ শহরের প্রাক্তন সামরিক স্থাপনায় অদূর ভবিষ্যতে নতুন এক ডেটা সেন্টার গড়ে ওঠার কথা৷ সিংগাপুরের রাষ্ট্রীয় পেনশন ফান্ড সেটির অর্থায়ন করছে৷

পৌর কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট শর্ত বেঁধে দিয়েছে৷ কাছের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপর নির্ভরতার বদলে এই ডেটা সেন্টারকে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ কাজে লাগাতে হবে৷ হানাউ শহরের শিল্পায়ন দপ্তরের প্রতিনিধি এরিকা শুলটে বলেন, ‘‘এই সব লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে, অর্থাৎ ২০২৪ সালে কাজ শুরু হলে ৮০ শতাংশ বিদ্যুতের উৎস পরিবেশবান্ধব হতে হবে৷ আরও পাঁচ বছর পর ১০০ শতাংশই পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ হতে হবে৷''

স্থানীয় জ্বালানি কোম্পানির প্রধান মারিও বেকের কাছে সেটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ৷ হানাউ শহরের প্রায় এক লাখ মানুষ ও বড় শিল্প কোম্পানিগুলির সম্মিলিত চাহিদার তুলনায় পরিকল্পিত ডেটা সেন্টারে দ্বিগুণ পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে৷ পাশের উইন্ড পার্ক থেকে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ আসতে পারে৷ এমন প্রেক্ষাপটে পুরানো জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির গুরুত্বও নতুন করে বেড়ে গেছে৷

তা সত্ত্বেও ডেটা সেন্টারের জন্য সবুজ বিদ্যুতের চাহিদা পুরোপুরি মেটানো সম্ভব হবে না৷ কিন্তু  স্থানীয় জ্বালানি কোম্পানির প্রধান মারিও বেক যথেষ্ট আশাবাদী৷ তিনি বলেন, ‘‘ডেটা সেন্টার কোম্পানির বিপুল বিদ্যুতের চাহিদার দৌলতে রাষ্ট্রীয় ভরতুকি ছাড়াই অনেক গ্রিন ইলেকট্রিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে৷ কারণ এমন অনেক কোম্পানি পুনর্ব্যবহারযোগ্য বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরাসরি চুক্তি স্বাক্ষর করছে৷ এই প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতির কারণে এমন বিদ্যুতের মূল্যও প্রতিযোগিতার বাজারে যথেষ্ট ন্যায্য থাকছে৷''

ফ্রাংকফুর্ট শহর জার্মানির আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত৷ অদূর ভবিষ্যতে গোটা অঞ্চল ডিজিটাল অবকাঠামোর জংশন হয়ে উঠবে৷

কার্ল হারেনব্রক/এসবি