1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডার্ক ম্যাটারের রহস্য উন্মোচনের প্রচেষ্টা

কর্নেলিয়া বর্মান/এসবি১৪ অক্টোবর ২০১৪

ডার্ক ম্যাটার-এর অস্তিত্ব টের পাওয়া গেলেও এখনো এ নিয়ে অনেক প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায়নি৷ বিজ্ঞানীরা মহাকাশে এবং পৃথিবীতে নানা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা চালিয়ে তত্ত্ব ও বাস্তবের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/1DVEy
Lappland Landschaft Natur
ছবি: imago/blickwinkel

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের উপাদানের এক-ষষ্ঠমাংশও খালি চোখে দেখতে পান না৷ সেই অংশ দৃষ্টির অগোচরেই কাজ করে৷ এখনো পর্যন্ত শুধু অভিকর্ষের টান দেখেই এই সব রহস্যজনক ম্যাটারের অস্তিত্ব টের পাওয়া গেছে৷ সে জন্যই এদের ‘ডার্ক ম্যাটার' বলা হয়৷ আঠার মতোই নক্ষত্র ও ছায়াপথ ধরে রাখে এই ডার্ক ম্যাটার৷ কিন্তু সত্যি কি তার অস্তিত্ব রয়েছে? জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা অবশ্য নতুন কিছু ‘ক্লু' বা সূত্র পেয়েছেন৷ বিশ্বের সেরা টেলিস্কোপগুলি কাজে লাগিয়ে তাঁরা এই অদৃশ্য ম্যাটারের খোঁজ চালাচ্ছেন৷

এটা সম্ভব হয়েছে, কারণ ম্যাটার তার অভিকর্ষ কাজে লাগিয়ে মহাশূন্যকে বেঁকিয়ে দেয় এবং এর মাধ্যমে নক্ষত্রের আলোকে বাঁকা পথে চলতে বাধ্য করে৷ চাঁদের তুলনায় প্রায় ৯ গুণ বড় মহাকাশের একটি অংশের দিকে নজর রাখছেন গবেষকরা এবং সেখানে আলোর গতিপথ খতিয়ে দেখেছেন৷ প্রায় ৬৫০ কোটি আলোকবর্ষ দূর পর্যন্ত লক্ষ্য রাখছেন তাঁরা৷ এভাবে ডার্ক ম্যাটারের বিন্যাস নথিভুক্ত করা সম্ভব হয়েছে৷ তত্ত্বের সঙ্গেও এই ফলাফল মিলে যাচ্ছে৷ অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, যে ডার্ক ম্যাটার টুকরো হয়ে ছোট ছোট কাঠামোয় ভাগ হয়ে যায়৷

২০০৮ সালে অ্যামেরিকার ‘ফার্মি' নামের স্যাটেলাইট গামা রশ্মি পরীক্ষার কাজে মহাকাশে পাড়ি দেয়৷ এতো শক্তিশালী আলোকরশ্মি আর নেই৷ আমাদের ‘মিল্কিওয়ে' গ্যালাক্সির মাঝখানে এই স্যাটেলাইট এত বেশি গামা রশ্মি খুঁজে পেয়েছে, যা সেখানকার সব পরিচিত উৎস একসঙ্গেও তৈরি করতে পারে না৷ ডার্ক ম্যাটার এই বাড়তি বিকীরণের উৎস হতে পারে৷ ছায়াপথের মধ্যভাগে তার পরিমাণ বেশি বলে মনে হচ্ছে৷ ডার্ক ম্যাটার পার্টিকেলগুলির মধ্যে সংঘর্ষ ঘটলে গামা রশ্মির এই বিকিরণ শুরু হয়৷ আলফা ম্যাগনেটিক স্পেকট্রোমিটার এএমএস-ও সম্ভবত ডার্ক ম্যাটারের অস্তিত্বের ইঙ্গিত খুঁজে পেয়েছে৷

প্রায় ৭ টন ভারি বিশাল এই যন্ত্র ২০১১ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন আইএসএস-এ লাগানো হয়েছে৷ এর মূল বৈশিষ্ট্য হলো বিশাল এক চুম্বক৷ তার কাজ চার্জড পার্টিকেলগুলিকে পথভ্রষ্ট করা, যাতে তাদের ভর, চার্জ ও এনার্জি স্থির করা যায়৷ স্পেকট্রোমিটার এই প্রক্রিয়ায় মাত্রাতিরিক্ত পজিট্রন খুঁজে পেয়েছে৷ তত্ত্ব অনুযায়ী দুটি ডার্ক ম্যাটার পার্টিকেলের সংঘর্ষ ঘটলে এই পজিট্রন তৈরি হয়৷

CERN Europäische Organisation für Kernforschung
রহস্যজনক ডার্ক ম্যাটারের জন্য পদার্থবিদরা পার্টিকেল অনুযায়ী একাধিক তত্ত্ব সৃষ্টি করেছেনছবি: 2011 CERN

ইউরোপের এক্সএমএম স্যাটেলাইট এক্স-রে আলোর সাহায্যে গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের গরম গ্যাস পরীক্ষা করেছে৷ গবেষকরা স্পেকট্রামে এক অদ্ভুত সংকেত পেয়েছেন৷ স্বাভাবিক ম্যাটারের মানদণ্ডে তার ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়৷ তাই তাঁদের অনুমান, আসলে ডার্ক ম্যাটার পার্টিকেল ভেঙে যাওয়ার ফলেই এই সংকেত সৃষ্টি হয়৷

এই অনুমান সত্য কি না, জেনিভায় লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার হয়ত শীঘ্রই তা জানিয়ে দেবে৷ ২০১৫ সালে এই অ্যাক্সিলারেটার আবার চালু হবে৷ তখন পার্টিকেলের সংঘাত এমন এক এনার্জি লেভেলে পৌঁছে যাবে যে, তার ফলে ডার্ক ম্যাটার সৃষ্টি হতে পারে৷ মিউনিখে মাক্স প্লাংক ইন্সটিটিউটের ড. হুব্যারট ক্রোহা বলেন, ‘‘এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি৷ আমাদের মনে সব রকম সম্ভাবনা খেলা করছে বটে, কিন্তু চূড়ান্ত উত্তর আসবে এক্সপেরিমেন্ট থেকে৷ একমাত্র লার্জ হেড্রন কোলাইডার-এর পরীক্ষাই এর উত্তর দিতে পারে৷ তাই এই পর্যায়টি উত্তেজনায় ভরপুর৷ কোনো নতুন ইঙ্গিত পাওয়া যাবে কিনা, বাঁধাধরা মডেলের বাইরেও কিছু সম্ভব কিনা, এই সব প্রশ্ন উঠে আসে৷''

স্ট্যান্ডার্ড মডেল বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের ৫ শতাংশও ব্যাখ্যা করতে পারে না৷ রহস্যজনক ডার্ক ম্যাটারের জন্য পদার্থবিদরা পার্টিকেল অনুযায়ী একাধিক তত্ত্ব সৃষ্টি করেছেন৷ এর মধ্যে কোনটা সঠিক দিশায় নিয়ে যাচ্ছে তা জানতে পারলে লক্ষ্যের আরও কাছাকাছি পৌঁছে যাবেন তাঁরা৷ তখন তাঁরা জানতে পারবেন, কোন শক্তি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কেন্দ্রস্থলটিকে ধরে রেখেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য