1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডার্ক ম্যাটার-ও আর রহস্য থাকবে না

করনেলিয়া বরমান/এসবি১৯ জুলাই ২০১৪

সুইজারল্যান্ডের জেনিভা শহরে চলছে মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকারের বৈজ্ঞানিক উদ্যোগ৷ একের পর এক পরীক্ষার মাধ্যমে পদার্থবিদরা সেখানে ‘ডার্ক ম্যাটার’-এরও নাগাল পাবার স্বপ্ন দেখছেন৷

https://p.dw.com/p/1Cev5
সার্নে অ্যাটলাস ডিটেক্টরের কন্ট্রোল রুমছবি: DW/F.Schmidt

‘ডার্ক ম্যাটার’-এর খোঁজে

জেনিভা শহরের হ্রদ ও পাহাড়ের মাঝে চলছে বিশাল বৈজ্ঞানিক কর্মযজ্ঞ৷ চুম্বক দিয়ে তৈরি ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রিং, তাতে রয়েছে ৪টি ডিটেক্টর৷ গবেষকরা সেখানে আগামী কয়েক বছরে পার্টিকেলের গতি আরও বেশি বাড়াতে এবং তাদের মধ্যে আরও সংঘাত ঘটাতে চান৷

এই প্রক্রিয়ায় ডিটেক্টরের মধ্যেও আরও বেশি পার্টিকেল ম্যাটার তৈরি হয়৷ তবে তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্টিকেলগুলি খুঁজে পাওয়া আরও কঠিন হয়ে উঠছে৷

গবেষকদের তাই ডিটেক্টর-কে আরও দ্রুত ও সংবেদনশীল করে তুলতে হবে৷ মাটির নীচে রয়েছে এক মিউয়ন চেম্বার৷ এই পার্টিকেলগুলি এত ভারী ও স্থিতিশীল, যে তারা অ্যাটলাস ডিটেক্টরের সব স্তর ভেদ করতে পারে৷ পদার্থবিদদের কাছে মিউয়ন অজানা নতুন পার্টিকেল ম্যাটার-এর ইঙ্গিতবাহক৷

এক যন্ত্র মিউয়ন-এর গতিপথ ও শক্তির পরিমাপ করতে পারে৷ তার মধ্যে রয়েছে গ্যাস ভরা ৪০০টি পাইপ, প্রতিটির মধ্যে বসানো রয়েছে তার৷ পরিমাপের যন্ত্র ডিটেক্টরের এমন এক স্তরে রয়েছে, যা আস্ত ফুটবল মাঠের মতো বড়ো৷ মাক্স প্লাংক ইন্সটিটিউটের হুবার্ট ক্রোহা বলেন, ‘‘গোটা অ্যাটলাস ডিটেক্টর-এর মধ্যে প্রায় ১,২০০ এমন মিউয়ন ডিটেক্টর রয়েছে৷ অর্থাৎ প্রায় ১০ লাখ তার৷ সামান্য কয়েক মাইক্রো মিটার পর্যায়েও মিউয়ন পাইপগুলি দৃশ্যমান থাকতে হবে৷ এমন সব ডিটেক্টর তৈরির ক্ষেত্রে এটাই হলো চ্যালেঞ্জ৷''

এই গবেষণাগারে পদার্থবিদরা অন্য এক ডিটেক্টর স্তর তৈরি করছেন৷ সেটি অ্যাটলাস-এর মাঝখানে বসানো হবে, যেখানে পার্টিকেলগুলির সংঘাত ঘটে এবং ম্যাটার-এর ভগ্নাংশ তৈরি হয়৷ সেন্সর তখন তাদের গতিপথের প্রথম কয়েক সেন্টিমিটার নিপুণভাবে পরিমাপ করে৷ এই সেন্সরের চোখের বিশাল ক্ষমতা – সামান্য কয়েক সেন্টিমিটারে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ পিক্সেল৷ গোটা অ্যাটলাস ডিটেক্টরে যে তথ্য সৃষ্টি হয়, তার এক দশমাংশ এই স্তরে সংগ্রহ করা হয়৷ সার্ন প্রকল্পের ডানিয়েল আডাম ডোবোস বলেন, ‘‘প্রতিদিন নতুন সহকর্মীদের সঙ্গে নতুন চ্যালেঞ্জ৷ গোটা বিশ্বের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, নতুন সহকর্মীদের সঙ্গে পরিচয় হয়৷ তাঁরা নতুন আইডিয়া, নতুন ডিটেক্টর নিয়ে এখানে আসেন৷ গোটা কাঠামোর মধ্যে তাঁদের খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা চলে৷''

৩৫টি দেশের ১৭০টি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা বিশাল অ্যাটলাস ডিটেক্টরের অংশ তৈরি করেন৷ স্ট্যানফোর্ড লিনেয়ার অ্যাকসিলারেটর সেন্টার-এর অধ্যাপক ডং সু বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে পার্টিকেল পদার্থবিদ্যার ক্ষেত্রে সবার নজর সার্ন-এর দিকে৷ অবশ্যই আমরাও অ্যামেরিকায় ভবিষ্যতে বিকল্প দেখতে চাই৷ হয়তো একদিন আমাদেরও এমন সুযোগ আসবে৷''

Wissenschaftler Dr. Lashkar Kashif Bangladesh
অ্যাটলাস ডিটেক্টরছবি: Lashkar Kashif

আগামী বছর কাঠামোর মধ্যে রদবদল শেষ হবার কথা৷ তখন গবেষকরা শক্তির এমন এক ক্ষেত্রে ম্যাটার পরীক্ষা করতে পারবেন, যা পৃথিবীতে এর আগে সম্ভব ছিলো না৷ ম্যাটার-এর অজানা উপাদানও খুঁজে পাবেন৷ পছন্দের তালিকার সবার উপরে রয়েছে ডার্ক ম্যাটার৷ হুবার্ট ক্রোহা বলেন, ‘‘এলএইচসি-তে কী আবিষ্কৃত হবে বা হবে না, তা পার্টিকেল ফিজিক্স-এর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে৷ বিশেষ করে ডার্ক ম্যাটার যদি সত্যি পাওয়া যায়৷ তখন শুধু পার্টিকেল ফিজিসিস্ট নয়, মহাকাশবিজ্ঞানী ও মহাকাশ পদার্থবিদরাও খুশি হবেন৷''

কারণ মহাকাশে ম্যাটার-এর একটা বড় অংশই অদৃশ্য৷ একমাত্র অভিকর্ষের কারণেই তাদের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়৷ এটাই হলো তত্ত্ব৷ এই রহস্যজনক বস্তু কী দিয়ে তৈরি, সেই ধাঁধার সমাধানই হতে পারে বিশ্বের বৃহত্তম গবেষণা যন্ত্রের আগামী সাফল্য৷

বিশেষ ঘোষণা: এই সপ্তাহের অন্বেষণ কুইজে অংশ নিতে ক্লিক করুন এখানে

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য