ট্রেন যখন হাসপাতাল
ভারতে সাত কামরার একটি ট্রেনে হাসপাতাল স্থাপন করে গত ২৭ বছর ধরে দরিদ্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে৷ ট্রেনের নাম ‘লাইফলাইন এক্সপ্রেস’৷
শুরুর কথা
‘লাইফলাইন এক্সপ্রেস’ এর যাত্রা শুরু ১৯৯১ সালে৷ তখন থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ লক্ষ মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছে এই হাসপাতাল৷ ‘ইম্প্যাক্ট ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন’ নামের অলাভজনক একটি সংস্থা এই হাসপাতাল গড়ে তোলে৷
এক জেলায় এক মাস
সরকারি স্বাস্থ্যসেবা অপ্রতুল এমন জেলায় গিয়ে দরিদ্র মানুষদের সেবা দেয় এই ট্রেন হাসপাতাল৷ প্রায় একমাস অবস্থান করে চোখের ছানি, ফাটা তালুর ক্যানসার, অর্থোপেডিক ইত্যাদি চিকিৎসা দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা৷
স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসক
রেল হাসপাতালে ২০ জন স্থায়ী প্যারামেডিক আছেন৷ এর বাইরে স্থানীয় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে স্বেচ্ছাসেবী ভিত্তিতে চিকিৎসকরা কাজ করেন৷
ভারতের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা
জিডিপির মাত্র এক শতাংশ স্বাস্থ্যসেবায় খরচ করে দেশটি৷ ফলে সরকারি হাসপাতালগুলোকে ভাল চিকিৎসাসেবার সংকট রয়েছে৷ আর দরিদ্র মানুষের পক্ষে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না৷
এক রোগীর কথা
৪১ বছরের ভাওরি দেবির কানে সমস্যা ছিল৷ তাঁর মধ্যকর্ণে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল৷ কিন্তু তিনি যেখানে থাকেন সেখানকার হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই৷ তাই তাঁকে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল৷ কিন্তু এতে ৫০ হাজার রূপি খরচ হতো – যা তাঁর পক্ষে দেয়া সম্ভব ছিল না৷ তবে ভাগ্য ভালa যে, সেই সময় তাঁর এলাকায় গিয়ে হাজির হয় ‘লাইফলাইন এক্সপ্রেস’৷ ফলে বিনামূল্যেই অস্ত্রোপচার করাতে পেরেছেন ভাওরি দেবি৷
দক্ষতা বৃদ্ধি
লাইফলাইন এক্সপ্রেস-এ কাজ করে তরুণ অনেক চিকিৎসক অভিজ্ঞতাও অর্জন করছেন, যা তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে৷ ‘‘যেহেতু তৃণমূলে কাজ করা হয়, তাই নানা ধরনের রোগের মুখোমুখি হওয়া যায়,’’ বলে জানান এক স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসক মেহেক সিক্কা৷
দ্বিতীয় রেল হাসপাতাল
সম্প্রতি ভারতের রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন ‘ইম্প্যাক্ট ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন’ এর কর্মকর্তারা৷ মন্ত্রী তাঁদের আরেকটি ট্রেন দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন৷ ফলে আগামী ছয়মাসের মধ্যে এমন আরেকটি রেল হাসপাতাল চালুর সম্ভাবনা রয়েছে৷