1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ট্রাসের নীতিতে যুক্তরাজ্যে আর্থিক বিশৃঙ্খলা

৬ অক্টোবর ২০২২

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লিজ ট্রাসের শুরু হয়েছে অত্যন্ত খারাপ ভাবে৷ তার প্রধান নীতিগুলো অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে৷ মেয়াদের শুরুতেই তার অবস্থান নিয়ে দেখা দিয়েছে সন্দেহ৷

https://p.dw.com/p/4Hq3V
BdTD | UK, Birmingham, | Liz Truss und Kwasi Kwarteng bei einem Baustellenbesuch
ছবি: Stefan Rousseau/POOL/AFP/Getty Images

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষকরা গত কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাজ্যে চলমান বিশৃঙ্খল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছেন৷ তবে নতুন করে সৃষ্ট সংকট হয়ত সব কিছুকে ছাড়িয়ে যাবে৷

লিজ ট্রাসের নতুন সরকার গত মাসের ২৩ তারিখে সংক্ষিপ্ত বাজেট ঘোষণা করে৷ দেশকে অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে টেনে তোলার জন্য এটা ছিল তার সরকারের অন্যতম পদক্ষেপ, যেখানে নতুন অর্থমন্ত্রী কাওয়াসি কোয়ারতেং ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ কর ছাড়ের ঘোষণা দেন৷ কাওয়াসি মোট ৪৫ বিলিয়ন পাউন্ড কর ছাড় দেওয়ার ঘোষণা দেন৷ 

এই কর ছাড় ধনীদের বিভিন্নভাবে উপকৃত করবে বলে অভিযোগ ওঠে৷

সংক্ষিপ্ত এই বাজেটের অন্যতম বিতর্কিত দিক হল যুক্তরাজ্যের যেসব মানুষের বার্ষিক আয় এক লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডের ওপরে তাদের আয়কর হ্রাস করা এবং ব্যাংকারদের বোনাসের উপর থেকে ক্যাপ তুলে নেয়া৷

তবে যে বিষয়টি বেশি বিতর্কিত মনে করা হচ্ছে তা হলো এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকারকে নতুন করে ঋণ নিতে হবে৷ ফলে সরকারের ঋণের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে, যা আর্থিক খাতের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে৷

এই পদক্ষেপের ফলে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য রেকর্ড হারে হ্রাস পায়৷

ট্রাসের সরকারের এসব নীতি যুক্তরাজ্যেকে বড় কোন অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য ফেলে দিতে পারে এমন শংকায় এরইমধ্যে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিয়েছে৷ ঘোষণা দিয়েছে ৬৫ বিলিয়ন বন্ড কেনার কর্মসূচি৷

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) নতুন সরকারের এই নীতির সমালোচনা করে৷ তাদের মতে, বড় একটি অর্থনীতির জন্যে পদক্ষেপগুলো অস্বাভাবিক৷ এসব নীতির ফলে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বৈষম্যও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশংকা সংস্থাটির৷

নতুন সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা করতে দেরি করেনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা৷ অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরাও বিরুপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন৷

এমন পরিস্থিতিতে লিজ ট্রাস ও কাওয়াসি কোয়ারতেং ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ধনীদের  করহার ৪৫ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে নামিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে তারা আর নাও আগাতে পারেন৷

অক্সফোর্ডের অর্থনীতিবিদ আন্দ্রে গুডউনের মতে, এমন সময়ে ধনীদের জন্য কর কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে যখন গরীবরা উচ্চ মূল্যস্ফীতির সাথে লড়াই করছে৷ সরকার তার অবস্থান পরিবর্তন করলেও আর্থিক খাতের কোন পরিবর্তন ঘটবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন না৷ নিছক রাজনৈতিক সমস্যার প্রেক্ষিতে এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন৷

কর ছাড় নিয়ে সরকারের অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিতের পর ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে৷ অন্যদিকে জাতীয় বীমার বাজারও অনেকটা পুনরুদ্ধার হয়েছে৷

তবে আর্থিক পদক্ষেপগুলোর প্রেক্ষিতে ট্রাস সরকারের উপর মানুষের আস্থা এরইমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা৷

আর্থার সুলিভান/একেএ