ট্রাম্প ও মাক্রোঁ – চাপের মুখে বন্ধু?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিশ্বনেতাদের তেমন সুসম্পর্ক নেই৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ এর বিরল ব্যতিক্রম৷ কিন্তু প্রকাশ্যে উষ্ণতার নেপথ্যে তাঁদের সম্পর্ক আসলে কতটা দৃঢ়?
শুরুতে মধুর নয়
ট্রাম্প ও ফ্রান্সের তরুণ প্রেসিডেন্টের সম্পর্কের সূচনা তেমন মধুর ছিল না৷ মাক্রোঁ প্রথম সাক্ষাতে করমর্দনের সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাত এত জোরে চেপে ধরেছিলেন যে ট্রাম্প ব্যথায় শিউরে উঠেছিলেন৷ জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত প্যারিস চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেন মাক্রোঁ৷
জাঁকজমকে মুগ্ধ
২০১৭ সালে ফ্রান্সের জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন ট্রাম্প৷ প্যারিসে বর্ণাঢ্য সেই অনুষ্ঠান দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি৷ এমনকি ওয়াশিংটনেও সামরিক শক্তির এমন জাঁকজমকপূর্ণ প্রদর্শন করতে চেয়েছিলেন তিনি৷ তখন থেকেই মাক্রোঁর সঙ্গে তাঁর উষ্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে৷
ট্রাম্প বনাম বাকি বিশ্ব
গত কয়েক বছরে ইউরোপ তথা বাকি অঞ্চলের সহযোগী দেশগুলির সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে৷ বিশেষ করে রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক প্রশ্নে ইউরোপের সঙ্গে বার বার সংঘাত দেখা যাচ্ছে৷ এই অবস্থায় ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইউরোপের নেতারা মাক্রোঁর উপর আস্থা রাখতে বাধ্য হচ্ছেন৷
ট্রাম্প আমলে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর
প্যারিসে আতিথেয়তায় মুগ্ধ ট্রাম্প ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে হোয়াইট হাউসে স্বাগত জানান৷ তাঁদের মধ্যে করমর্দন, আলিঙ্গন, হাত ধরে হাঁটা, মৃদু চুম্বনের মতো অনেক ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি হয়েছে৷ এমনকি মাক্রোঁর জামা থেকে খুসকি ঝেড়ে তাঁকে ‘পার্ফেক্ট’ দেখাতেও কার্পণ্য করেননি ট্রাম্প৷
ইরান নিয়ে তৎপরতা
ট্রাম্পকে ‘ভোলাতে’ মাক্রোঁ ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির নতুন ও বর্ধিত সংস্করণের প্রস্তাব দিয়েছেন – এমন এক ধারণা সৃষ্টি হয়েছে৷ ট্রাম্প যাতে বর্তমান চুক্তি বাতিল না করে নতুন আইডিয়ার ভিত্তিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও আঞ্চলিক প্রভাবে রাশ টানার চেষ্টা করেন, সেটাই ছিল মাক্রোঁর উদ্দেশ্য৷
মতপার্থক্য গোপন নয়
মার্কিন কংগ্রেসে এক ভাষণে মাক্রোঁ ট্রাম্প প্রশাসনের অনেক নীতির খোলামেলা বিরোধিতা করেন৷ মিষ্টি ভাষার মোড়কে তিনি জলবায়ু চুক্তি থেকে শুরু করে সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদের মতো বিষয়ে অ্যামেরিকার অবস্থান বদলানোর ডাক দেন৷ বিশ্বের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাই সঠিক পথ, বলেন মাক্রোঁ৷