1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টুইন টাওয়ার হামলার পাঁচ মিনিট আগে

২৯ জুলাই ২০২২

জার্মানির লাইপজিশে নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ার হামলার ঠিক পাঁচ মিনিট আগের একটি ইনস্টলেশন বসিয়েছেন শিল্পী ইয়াদেগার আসিসি৷ ২০০১ সালে এই হামলার ঘটনা ঘটলেও এই ইনস্টলেশন আজকের পৃথিবীর জন্যও বিশেষ বার্তা দেয়৷

https://p.dw.com/p/4Ep06
DW Euromaxx | Asisi
ছবি: DW

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, সকাল৷ নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার৷ আজকের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ভুল মনে হতে পারে৷ কারণ দু'টি বিমান হামলে পড়ার আগের মুহূর্ত এটি৷

লাইপজিশ প্যানোমিটার নামের পরিত্যক্ত এই গ্যাস সংরক্ষণাগারে শিল্পী ইয়াদেগার আসিসি প্রায় সাড়ে তিন হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে ম্যানহাটানের বাস্তবধর্মী প্রতিকৃতি তৈরি করেছেন৷ ৩২ মিটার উঁচু এই শিল্পকর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নিউইয়র্কের অ্যাকুয়েস্টিক সাউন্ড৷

আসিসি বলেন, ‘‘কী হয় যদি আমরা অতীতে চলে যাই এবং সত্যিই মনে হয় যে প্রথম বিমানটি আসার পাঁচ মিনিট আগে আমরা সেখানে রয়েছি এবং তারপর আমি এমন একটা পথ তৈরি করি যা দিয়ে মানুষ আরো অতীতে চলে যেতে পারে ভবিষ্যতের জ্ঞান না নিয়ে৷''

এর বাইরে আরো পাঁচটি ইন্সটলেশন দিয়ে আসিসি হামলার সবচেয়ে দাগ কাটা মুহূর্তগুলো তুলে ধরেছেন৷

এর মধ্যে তখনকার প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের ‘ওয়ার অন টেরর'-এর ঘোষণাটিও আছে৷ প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে গিয়ে যে লক্ষ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল, তা দু'টি সোনার টাওয়ার দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

ওয়ার অন টেররের কারণে সৃষ্ট শরণার্থী সংকটকে পশ্চিমাদের থেকে আলাদা করার জন্য একটি বেড়া দেয়া হয়েছে।

আসিসির ভাষায়, ‘‘সহিংসতার জবাব কী? এখানে হঠাৎ করে এমন কিছু ঘটছে, যার প্রভাব বৈশ্বিক। অথচ এই বৈশ্বিকতার যুগে তা কল্পনাই করা যায় না। আমরা হঠাৎ করে টের পেলাম আমাদের জীবদ্দশায় এমনটিও ঘটতে পারে। আর এভাবে ভবিষ্যতের দিকে তাকালে বুঝতে পারি, যে কী একটা ভঙ্গুর সিস্টেমে আছি আমরা। প্রতিটি ভুল সিদ্ধান্ত শত শত সমস্যার জন্ম দেয়। তাই আমার কাছে এটাই ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি। এটা শুধু নিউইয়র্কের বিষয় নয়, বরং নিউইয়র্কের ঘটনাটি সবার জন্য বর্তমান।''

টুইন টাওয়ার হামলা নিয়ে ভিন্ন কাজ

ভিয়েনায় জন্ম নেয়া এই জার্মান শিল্পী এ পর্যন্ত ১৪টি প্যানোরামা তৈরি করেছেন। এর একটি ২০১১ সালে তৈরি করা গ্রিক শহর পের্গামন। সেখানে তিনি নিজেকেও অমর বানিয়েছেন।

২০১৬ সালে তিনি জার্মান সংস্কারক মার্টিন লুথারের প্রতি অনুরক্তি দেখান।

রাজনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে এটাই ইয়াদেগার আসিসির প্রথম কাজ নয়। শীতল যুদ্ধের সময়কার বার্লিন দেয়াল নিয়ে এই প্যানোরামাটি করেন তিনি।

এই পার্সিয়ান বংশোদ্ভূত শিল্পী এখন নিউইয়র্কের হামলা নিয়ে কাজ করছেন, যদিও ঘটনাটি সরাসরি দেখাচ্ছেন না তিনি।

আসিসি বলেন, ‘‘মুহূর্তটি আবার তৈরি করা সম্ভব নয়। কোন ফর্মেই নয়। একটা অকল্পনীয় অভিজ্ঞতা তখন আমাকে ও পৃথিবীকে নাড়িয়ে দেয়। তবে আমি সেই ছবিগুলো আজ আবারো জাগিয়ে তুলি এবং বলি তা ঠিক পাঁচ মিনিট আগের। আমি স্বাভাবিকতার বিন্যাস তৈরি করি সেই সময়টার, যা যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে। আজ আবার সেই মুহূর্তের মুখোমুখি আমরা। আমি জেগে উঠব এবং দেখব একটা ভিন্ন পৃথিবী।'' 

এই প্যানোরামা তৈরিতে চার বছর লেগেছে। এই ছবি দিয়ে তিনি শুধু নিউইয়র্কের সেই সময়টার কথাই মনে করছেন তা নয়, তার শঙ্কা আছে আরো।

আসিসি বলেন, ‘‘আমি সবসময় এটিকে একটি সার্বজনীন প্রকল্প হিসেবে দেখেছি। এই প্রকল্পটিকে শতবর্ষ পরও দেখানো যাবে। আজকে ইউক্রেন যুদ্ধ দেখাচ্ছে আমি এখানে যা করছি তা কতটা সময়োপযোগী।''

নিউইয়র্ক নাইন ইলেভেন নামের তার এই প্যানোরামায় আসিসি শুধু ওয়ার অন টেররকেই প্রশ্ন করেননি, তিনি সব যুদ্ধের দিকে প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ সব যুদ্ধই সহিংসতা ও কষ্ট বয়ে নিয়ে আসে।

ক্রিস্টিয়ান ভাইবেৎসান/জেডএ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য