1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টিকার খবর নাই, সেরাম ৫০০ কোটি টাকা চায়

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৪ জানুয়ারি ২০২১

অক্সফোর্ডের টিকা বাংলাদেশ ও ভারত একই দিনে পাবে এধরনের কোনো কথা চুক্তিতে নাই বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস-এর চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজা৷

https://p.dw.com/p/3nUet
Indien Bangladesch Corona Pandemie Frau mit Maske
ছবি: Syed Mahamudur Rahman/NurPhoto/picture alliance

তিনি জানান, ‘‘আমাদের সাথে যে চুক্তি হয়েছে তাতে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ভ্যাক্সিনের অনুমোদন দেওয়ার এক  মাসের মধ্যে অক্সফোর্ড টিকার প্রথম চালানটি পাবে৷ বাকি চালানগুলো আসবে ছয় মাসের মধ্যে৷''

গত নভেম্বরে বেক্সিমকোর মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তিন কোটি ডোজ অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন আনার চুক্তি করে৷ জানুয়ারি মাসে তার প্রথম চালান ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা৷ কিন্তু রোববার সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভারত সরকার জরুরি ভিত্তিতে টিকাটি ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার সাথে শর্ত আরোপ করে দিয়েছে- এটি আপাতত অন্য কোনো দেশে রপ্তানি করা যাবে না৷ তিনি বলেন, এই মূহুর্তে আমরা কেবল ভারত সরকারকেই এই টিকা দিতে পারব৷ কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছেও বিক্রি করা যাবে না৷

ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকা ভারতে উৎপাদনের দায়িত্ব পেয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট৷ তারা এক বিলিয়ন ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে৷

এই বক্তব্যে বাংলাদেশের টিকা পাওয়া নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়৷ সোমবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেন, ‘‘এটি নিয়ে দিল্লিতে যোগাযোগ করা হচ্ছে৷ আমরা পরিস্থিতি জানার চেষ্টা করছি৷'' আর দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি চুক্তি অনুযায়ী টিকা পাব৷ তবে কবে পাব বলতে পারছি না৷''

অবশ্য এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ স্বাস্থ্য প্রশাসন বলেছে, ‘‘চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ভারত যেদিন টিকা পাবে, বাংলাদেশও সেদিন পাবে৷ আর দামও হবে এক৷''

‘‘ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে আমাদের কোনো হেরফের হবে না’’: রাব্বুর রেজা

কিন্তু চুক্তিতে এধরনের কোনো শর্ত নেই বলে এখন জানাচ্ছে বেক্সিমকো৷ ন্যাশনাল ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির চেয়ার ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘‘আমরাও তো জানতাম ভারত যেদিন টিকা পাবে বাংলাদেশও সেদিন পাবে৷ কিন্তু এখন তো পরিস্থিতি পাল্টে গেছে৷ ভারত টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে জেনেছি৷ আমরা আলাপ আলোচনা করছি৷ এখনও সঠিক কোনো তথ্য নাই আমাদের কাছে৷ কবে টিকা পাব তা এখন আর নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না৷''

রাব্বুর রেজা বলেন, ‘‘আমরা সেরাম ইনস্টিটিউটের সাথে কথা বলেছি৷ কথা বলে মনে হয়েছে তারা আমাদের সাথে যে চুক্তি আছে তা অনুযায়ী তারা টিকা দেবে৷ ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে আমাদের চুক্তির কোনো হেরফের হবেনা৷''

আর সেরাম ইনস্টিটিউট সোমবার জানিয়েছে, ভারতের প্রয়োজন মেটানোর পর তারা রপ্তানি করতে পারবে৷ তার অনুমতির প্রক্রিয়াও চলছে৷ তবে এরজন্য কয়েক মাস লেগে যেতে পারে৷

বাংলাদেশেঅক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদনের জন্য আজ(সোমবার) ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে মাত্র৷ এত দেরি হলো কেন জানতে চাইলে ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘‘আমরা ভারতের অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিলাম৷ ভারত তো মাত্র একদিন আগে অনুমোদন দিয়েছে৷ আশা করি দ্রুতই আমরা অনুমোদন পাব৷''

‘‘আমরাও জানতাম ভারত যেদিন টিকা পাবে বাংলাদেশও সেদিন পাবে‘‘:মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা

আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সেটার জন্য আমরা বসে থাকব না৷ ভ্যাকসিনের প্রয়োগ পর্যায়ে পেলেই হবে৷''

এদিকে সেরাম ইনস্টিটিউ টিকার জন্য ৬০ মিলিয়ন ডলারের ব্যাংক গ্যারান্টি চেয়েছে৷ বাংলাদেশ তার জন্যও কাজ করছে৷ রাব্বুর রেজা বলেন, ‘‘তারা শুরুতে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের অর্ধেক মানে দেড় কোটির জন্য ব্যাংক গ্যারান্টি চেয়েছে৷ আমরা মনে হয় তাদের ওই গ্যারান্টি এরইমধ্যে দিয়ে দেয়া হয়েছে৷''

চুক্তি অনুসারে প্রতি ডোজ টিকার দাম ৪৫০ টাকা বা পাঁচ ডলার৷ পরিহন খরচ ৮৫ টাকা বা এক ডলার ধরা হয়েছে৷