জেনেভায় বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি
৪ অক্টোবর ২০২১৩০ সেপ্টেম্বরের এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন ইউরোপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গণহত্যা বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি বাংলাদেশি প্রবাসী, ইউরোপীয় রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং মানবাধিকার কর্মীরা৷ দীর্ঘ আলোচনার পাশাপাশি জেনেভা প্রেস ক্লাবে সেদিন দেখানো হয় ‘ওয়ার ক্রাইমস ১৯৭১' শীর্ষক একটি তথ্যচিত্রও৷
আয়োজকদের পক্ষে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয় যেখানে তারা বলেন, যে ‘‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনা সদস্য ও তাদের দোসরদের সংঘটিত বাংলাদেশে গণহত্যার স্বীকৃতির সময় এসেছে৷ গণহত্যার শিকার এবং তাদের বংশধরদের স্বীকৃতির মাধ্যমে সম্মানিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়ের দাবি৷ স্বীকৃতির আরও গুরুত্বপূর্ণ মর্মার্থ হলো, এই গণহত্যার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করা এবং বিচারের আওতায় আনা৷ দুর্ভাগ্যবশত, বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যা আজ ইতিহাসের একটি বিস্মৃত অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং ‘বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা বিচারহীনতার নামান্তর'৷''
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন ইউরোপ ভিত্তিক প্রবাসী সংগঠন, ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফোরাম (ইবিএফ) সুইজারল্যান্ড মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় সম্মেলনে ইউরোপীয় সংসদের সদস্য (এমইপি) ব্র্যান্ডো বেনিফেই, ব্রিটিশ সাংসদ রুশানারা আলী, ডাচ সংসদের সাবেক সদস্য হ্যারি ভন বোমেল, জার্মান আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এশিয়া বিভাগের প্রধান দেবারতি গুহ, আমস্টারডাম উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ অ্যান্থনি হলস্লাগ, ডি ভক্সক্রান্টের ডাচ সাংবাদিক (তুরস্কের ইস্তানবুল ভিত্তিক) রব ফ্রাইকেন এবং গণহত্যার শিকার পরিবারের সদস্য আসিফ মুনির৷ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, ইবিএফ ইউকে'র প্রেসিডেন্ট আনসার আহমেদ উল্লাহ, সুইজারল্যান্ড মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের পরিচালক খলিলুর রহমান এবং ইবিএফ নেদারল্যান্ডসের প্রেসিডেন্ট বিকাশ চৌধুরী, ফিনল্যান্ডের লেখক ও সিনিয়র গবেষক ডঃ মজিবুর দফতরি সভাপতিত্ব করেন৷
ইউরোপীয় সংসদ সদস্য (এমইপি) ব্র্যান্ডো বেনিফাই বলেন, ‘‘ইবিএফ যে জাতিসংঘের ৪৮তম মানবাধিকার কাউন্সিল অধিবেশনের সময় এই সম্মেলনের আয়োজন করছে তা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ইউরোপীয় নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে৷ আমাদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে৷ অতীতের ভুলগুলি বুঝতে হবে এবং বাংলাদেশ ও ইউরোপ সহ সারা বিশ্বের নতুন প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য একসাথে কাজ করতে হবে৷ আজ আমরা সারা বিশ্বে সামাজিক অন্যায়ের মুখোমুখি এবং রাজনীতিবিদ এবং মানুষ হিসেবে আমরা চুপ থাকতে পারি না৷''
কেন গণহত্যা সম্বন্ধে আলোচনা প্রয়োজন, সে প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলের এশিয়া বিভাগের প্রধান দেবারতি গুহ বলেন, ‘‘কোনো হণহত্যার পেছনে কী কারণ ছিল, তা যাচাই করা সম্পূর্ণ না হলেও আমরা এই অন্যায়ের গভীরতাকে অস্বীকার করতে পারি না৷ যে সব মানুষ অত্যাচার ও নিপীড়নের সম্মুখীন হচ্ছেন, তাদের কষ্ট থেকে চোখ ফিরিয়ে দায়িত্ব এড়াতে পারি না আমরা৷ ফলে, আন্তর্জাতিক আদালত আইসিজে বাংলাদেশ, চীন বা মিয়ানমারের গণহত্যা বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে যত বছরই লাগাক না কেন, আমাদের এই সব মানবতাবিরোধী অপরাধকে চিহ্নিত করতে হবে ও এর বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে৷''
এসএস/কেএম