জীবনের জন্য শিক্ষা
পুরো ইউরোপে নতুন ক্লাসে উঠেছে শিক্ষার্থীরা৷ শুরু হয়েছে নতুন বছর৷ লেবাননে সিরীয় শরণার্থী শিশুদের কি অবস্থা? দুর্বিসহ স্মৃতি নিয়ে কেউ স্কুলে পড়ালেখা করলেও, অনেকের জীবনেই নেমে এসেছে বিপর্যয়৷
থেরাপি
বৈরুতের এই স্কুলে যে শিক্ষার্থীদের দেখছেন তারা সিরিয়ার শরণার্থী৷ স্কুলে গান গাইছে তারা৷ এটা একটা থেরাপি যাতে যুদ্ধের ভয়াবহ স্মৃতি এবং আতঙ্ক কাটাতে পারে তারা৷ এছাড়া এখানে নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে তারা৷
দ্বিতীয় জীবন
শিশুদের এমনভাবে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে যেন তারা লেবাননের সরকারি স্কুলে পড়তে পারে৷ এদের মধ্যে একজন সুজানে৷ বড় হয়ে শিল্পী হতে চায় সে৷ স্কুলে পড়ালেখা ছাড়া এই স্বপ্ন পূরণ হবে না, তাই শিক্ষাগ্রহণকে সুজানে ‘দ্বিতীয় জীবন’ বলে মনে করছে৷
পরিবারের সহায়তা নেই
বৈরুতের ঐ স্কুলটিতে অঙ্কের ক্লাসে দেখা যাচ্ছে ডায়নাকে৷ ডায়নার মতো সিরিয়ার এই শরণার্থী শিশুদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো পরিবারের কোনো সহায়তা পায় না তারা, এমনকি বাড়িতে পড়ানোর মতো কেউ নেই৷ স্কুলই পড়ার একমাত্র জায়গা৷
চিন্তার শক্তি
শিশুরা এই স্কুলে একবেলা খেতে পায়৷ যে বেসরকারি সংস্থাটি স্কুলটি পরিচালনা করছে, তার এক কর্মকর্তা জানালেন, একটি গির্জার সহায়তায় এই শিশুদের পড়ালেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ এই শিশুরা ঐ এলাকার আশপাশেই থাকে এবং সেখানকার বাড়ি ভাড়া প্রতি মাসে ৪০০ থেকে ৫০০ ডলার৷ ফলে পরিবারের উপার্জনের প্রায় পুরোটাই বাড়ি ভাড়ায় চলে যায়৷ খাবারের জন্য অর্থ থাকে না৷
বাড়ি থেকে বাড়ি
এই শরণার্থী পরিবারগুলো এমন অ্যাপার্টমেন্টে থাকে, যেখানে হয়ত সিঁড়ির নীচে বা ছাদের চিলেকোঠায় মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছে তারা৷
সৃজনশীলতা
১২ বছর বয়সি আশতাকে সৃজনশীল লেখা লিখতে বলা হয়েছে৷ তাই হয়ত জানলার বাইরে তাকিয়ে সে চিন্তা করছে কি লেখা যায়৷ এর মাধ্যমে নিজের মানসিক চাহিদাগুলোর বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারে তারা৷
হারিয়ে যাওয়ার পথে যে প্রজন্ম
নিজেদের ভাড়া বাড়িতে শিশুদের অঙ্ক বাড়ির কাজ নিয়ে বসেছেন বাবা-মা৷ সিরিয়ার কৃষক বাবা জানালেন, ‘‘আমি তাদের এখানে নিয়ে এসেছি৷ কারণ আমার ধারণা তারা সিরিয়ায় থাকলে অশিক্ষিতই থেকে যেত৷ এটা একটা বড় ধরনের ভুল৷ এর সমাধান করতে না পারলে একটা পুরো প্রজন্ম হারিয়ে যাবে৷’’
সময়ের অপচয়
লেবাননে থাকা যেসব শরণার্থী শিশুরা স্কুলে যায় না, তাদের পুরো সময়টা কাটে টিভি দেখে বা খেলাধুলা করে৷ এনজিওটি জানালো বর্তমানে ৪ লাখ শরণার্থী শিশু রয়েছে৷ কিন্তু মাত্র ৯০ হাজার স্কুলে যায়৷
পথেই জীবন
নারিমান, বয়স ৭৷ এত অল্প বয়সেই সে জীবিকার পথ বেছে নিয়েছে৷ রাস্তায় রাস্তায় টিস্যু পেপার বিক্রি করে সে৷ তার চাচা তাকে এগুলো বিক্রি করতে দিয়েছে, তবে শর্ত হলো সন্ধ্যা ৬ টার আগে চাচার হাতে ১২,০০০ লেবানিজ পাউন্ড অর্থাৎ প্রায় ৮ ডলার তুলে দিতে হবে৷ তাই দিনের প্রায় পুরোটা সময় রাস্তাতেই কাটে তার৷
লক্ষ্যভ্রষ্ট
লেবানন-সিরিয়া সীমান্তের কাছে আরো একটি স্কুল খুলেছে বেসরকারি সংস্থা সাওয়া৷ সংস্থার এক কর্মী বললেন, ‘‘এই শিশুগুলো এমন আতঙ্ক ও ভয়াবহ একটা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে, এখন কোনো কিছুতেই তাদের কিছু যায় আসে না৷ পরোয়া করে না তারা৷