1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জীবনসংকটে এরশাদ

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১ জুলাই ২০১৯

সাবেক সামরিক শাসক, বর্তমান সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ গুরুতর অসুস্থ৷ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তার চিকৎসা চলছে৷ আইসিইউতে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে তাকে৷

https://p.dw.com/p/3LNlb
Bangladesh Hussain Muhammad Ershad EX-Präsident
ছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images

তার ছোট ভাই ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের রবিবার সংবাদ সম্মেলন করে জানান, ‘‘এরশাদের ফুসফুসে পানি চলে এসেছে, ইনফেকশনও দেখা দিয়েছে৷ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়৷ তিনি রক্তে সংক্রমণ এবং লিভার জটিলতায় ভুগছেন৷''

সোমবার সম্মিলিত এরশাদকে দেখতে যাওয়ার পথে ডয়চে ভেলেকে তিনি জানান, ‘‘গতকাল যে অবস্থা ছিল এখনো তার একই অবস্থা আছে৷ আর খারাপের দিকে যায়নি৷ উনি অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন৷ ফুসফুসের অবস্থা একটু উন্নতির দিকে৷ কিন্তু কিডনির সমস্যা আরো বেড়ে গেছে৷''

অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন, ফুসফুসের অবস্থা একটু উন্নতির দিকে হলেও কিডনির সমস্যা বেড়েছে: জিএম কাদের

এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী সোমবার  প্রায় একই সময়ে সিএমএইচ থেকে ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘অফিসিয়ালি তথ্য হলো, তার শারীরিক অবস্থার গতকালের (রবিবার) চেয়ে কোনো উন্নতি হয়নি৷ তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘২৭ জুন থেকে তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল৷ ৩০ তারিখ তার ফুসফুসে পানি জমে৷ চিকিৎসকরা সেটা বের করার চেষ্টা করছিলেন৷ সে-কারণে ওনার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল৷ এ কারণে তাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেয়া হয়েছে৷ তাকে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়নি৷''

গত ২৬ জুন সকালে এরশাদ অসুস্থ হয়ে পড়লে  তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ রবিবার তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটে৷ এর আগে গত ২০ জানুয়ারি তাকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছিল৷

৯১ বছর বয়সি এরশাদ অনেকদিন ধরেই অসুস্থ৷ অসুস্থতার কারণেই ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারে অংশ নিতে পারেননি৷ ওই সময়েও চিকিৎসার জন্য তিনি সিঙ্গাপুরে ছিলেন। তাকে অনেক দিন ধরে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না৷

একাদশ সংসদে তিনি রংপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি জাতীয় সংসদে শপথ নিতে যান হুইল চেয়ারে করে৷ আর গত রমজানের শেষ দিকে তিনি গুলশানের একটি হোটেলে কূটনীতিকদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে যোগ দেন৷ এরশাদ এরই মধ্যে ট্রাস্ট গঠন করে তার সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ট্রাস্টের হাতে তুলে দিয়েছেন৷

দশম সংসদে এরশাদ মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত হিসেকে দায়িত্ব পালন করেন৷ তিনি এখন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং তার দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটের অংশ৷ তার স্ত্রী রওশন এরশাদ দলের কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন৷ এরশাদের অসুস্থতার কারণে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন তার ছোট ভাই জিএম কাদের৷

দলের চেয়ারম্যান যে কাউকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিতে পারেন: ফখরুল ইমাম

এরই মধ্যে দলের পরবর্তী নেতৃত্ব নিয়ে নানা আলোচনা চলছে৷ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম এমপি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দলের চেয়ারম্যান যে কাউকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিতে পারেন৷ কিন্তু দলের চেয়ারম্যান না থাকলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিনিয়র কো-চেয়ারম্যানই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাবেন৷ দলের পরবর্তী নেতৃত্ব গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে৷''

১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদ তখনকার রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারকে সরিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন৷ সামরিক আইন জারি করে ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধান সামরিক প্রশাসক হিসেবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে রাখেন তিনি৷ এরপর সরাসরি নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন৷ ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করে নির্বাচনের মাধ্যমে পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশের  রাষ্ট্রপতি হন৷ ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি সর্বদলীয় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়াতে বাধ্য হন৷ ১৯৯১ সালে এরশাদ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান৷ ছয় বছর কারাগারে থাকার পর ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি জামিনে মুক্তি পান তিনি৷ ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে কারাগার থেকেই রংপুরের ৫টি আসন থেকে সংসদ সদস্য হন তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য