1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাহাজ ভাঙা শিল্পে নিরাপদ নয় শ্রমিকরা

২ সেপ্টেম্বর ২০০৯

বিষাক্ত রাসায়নিকের ক্রিয়ায় কিংবা দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু বাংলাদেশের চট্টগ্রামের জাহাজ ভাঙা শিল্পে যেন স্বাভাবিক ঘটনা৷ এই কাজ শ্রমিকদের জন্য কোন ভাবেই নিরাপদ নয় বলে অভিযোগ করছে মানবাধিকার এবং পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো৷

https://p.dw.com/p/JNUA
ছবি: AP

মানবাধিকার এবং পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে, যে পরিবেশে শ্রমিকরা কাজ করেন তা তাদের জন্য মৃত্যুফাঁদের সমতুল্য৷

শুধু মাত্র কায়িক শ্রমের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে চট্টগ্রামের জাহাজ ভাঙা শিল্প৷ এই কারখানার শ্রমিকদের কঠিন শ্রমের এই কাজের ব্যাপারে কোন ধরণের কেতাবি জ্ঞান তো থাকেই না, থাকে না মালিকের সঙ্গে স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবিলা করার মতো কোন চুক্তি৷ তাই ক্ষতিকর বিষাক্ত রাসায়নিকের ক্রিয়ায় বা দুর্ঘটনায় মৃত্যু এই শিল্প শ্রমিকদের জন্য স্বাভাবিক ব্যাপার৷

চট্টগ্রামের জাহাজ ভাঙা শিল্পের শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বারবারই হুশিয়ারি উচ্চারণ করে আসছে মানবাধিকার এবং পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো৷ তারা বলছে, যে সব শ্রমিক জাহাজ ভাঙা শিল্পের সঙ্গে জড়িত তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেখানকার মালিকদের আরো বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত৷ কিন্তু জাহাজ ভাঙা শিল্পের এই মালিকরা শুনছেন না সেই কথা৷

Ship-breaking/Abwracken von Schiffen in Chittagong, Bangladesch
মানবাধিকার এবং পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে, যে পরিবেশে শ্রমিকরা কাজ করেন তা তাদের জন্য মৃত্যুফাঁদের সমতুল্যছবি: AP

বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড, বাড়বকুন্ড, ফৌজদারহাট, ভাটিয়ারী এলাকায় এখনো কয়েক হাজার জাহাজ ভাঙার অপেক্ষায় আছে৷ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত লক্ষাধিক শ্রমিক দিনমজুর হিসাবে এখানে কাজ করে থাকেন৷ যাদের অধিকাংশই বয়সে তরুণ এবং তারা কাজ পাবার সময় কোন ধরণের স্বাস্থ্যের ঝুঁকির কথা চিন্তা করেন না৷ এদের দৈনিক মজুরিও হয়ে থাকে অনেক কম৷ অনেক ক্ষেত্রেই তা দৈনিক ২ থেকে ৩ ডলার৷

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বর্তমানে লোহার রডের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৪০ লক্ষ টন৷ এই চাহিদার ৪০ শতাংশ পূরণ করা হয় স্ক্র্যাপ বা পুরাতন ভাঙা জাহাজ থেকেই৷

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিশ্বের বড় বড় জাহাজের ৫০ শতাংশ ভাঙা হয় বাংলাদেশের চট্টগ্রামে৷ আর বিশ্বে প্রতি বছর গড়ে অন্তত ৬০ জন জাহাজ ভাঙা শ্রমিক দুর্ঘটনায় মারা যায়৷ যার একটি বিরাট অংশ বাংলাদেশী শ্রমিক৷

পরিবেশবাদী সংগঠন টক্সিক ওয়াচের গোপাল কৃষ্ন এবছরের শুরুতে বলেছিলেন, চট্টগ্রামের জাহাজ ভাঙা শ্রমিকরা স্বাস্থ্যগত বিষয়ে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত৷ এরা দিনের পর দিন খুব সামান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছেন৷

বিভিন্ন মানবাধিকার বা সামাজিক সংগঠন বহুবার শ্রমিকদের জীবন এবং স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে মালিক এবং সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলেও তাতে কোন সমাধান হয়নি৷

প্রতিবেদক: ঝুমুর বারী

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক