জার্মানিতে হাইকিংয়ের জন্য সেরা সাত গন্তব্য
জার্মানিতে হাইকিংয়ের জন্য দু’লাখ কিলোমিটার ট্রেল বা লম্বা পথ রয়েছে৷ এই পথ কখনো নদীর তীর ধরে, কখনো ফুলে ভরা মাঠের মধ্য দিয়ে আবার কখনো পাহাড়ের চূড়া ধরে এগিয়ে গেছে৷ এখানে থাকছে হাইকিংয়ের জন্য সেরা সাতটি গন্তব্যের কথা৷
বেগুনি বাগানে হাঁটাহাঁটি
জার্মানির উত্তরাঞ্চলের ল্যুনেবুর্গ হিথ গ্রীষ্মের শেষের দিকে অসাধারণ বেগুনি রং ধারণ করে৷ লাইলাক ফুল ফুটতে শুরু করে তখন৷ মূলত স্থানীয় এক ভেড়া প্রজাতির চারণক্ষেত্রের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে এই হাইকিং ট্রেলটি৷ জার্মানির হামবুর্গ এবং সেলে’র মধ্যকার ২২৩ কিলোমিটার লম্বা এই হাইকিং রুটটি অনেকের বিশেষ পছন্দ৷
রাইনের তীরে ওয়াইনখেত
সরু, কিন্তু অসাধারণ সুন্দর রাইন নদীর উপত্যকা ধরে এগিয়ে গেলে প্রকৃতি এবং ইতিহাসের পাশাপাশি অসাধারণ সব দৃশ্যের দেখা মিলবে৷ জার্মানির বন থেকে ভিসবাডেন শহর অবধি বিস্তৃত ৩২০ কিলোমিটার দীর্ঘ রাইনস্টাইগ ট্রেল ধরে এগিয়ে গেলে বিভিন্ন রাজপ্রাসাদ, দুর্গ, স্মৃতিস্তম্ভ এবং আঙুর খেত দেখা যাবে৷ এই রুটের কিছু অংশ দুর্গম এবং পাড়ি দেয়া একটু কঠিন হলেও সেই চ্যালেঞ্জ অনেক হাইকারকেই বাড়তি আনন্দ দেয়৷
চিত্রশিল্পীদের পথ
অষ্টাদশ শতকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখা যায়, এমন স্থানগুলোর প্রতি পর্যটকদের আগ্রহ বাড়তে থাকে৷ ড্রেসডেনের দক্ষিণে স্যাক্সন সুইজারল্যান্ডের এই অদ্ভূত পাথুরে গঠনকে হঠাৎ করে অনেকে বুনো এবং রোমান্টিক হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করেন৷ আর তখন মালারভেগ (চিত্রশিল্পীদের পথ) ধরে হাইকিং শুরু হয়৷
কাসেলস গ্যেলো
জার্মান হাইকিং অ্যাসোসিয়েশন কিছু জার্মান ট্রেলকে প্রিমিয়াম রেটিং দিয়েছে৷ কঠোর কিছু মানদণ্ড অনুসরন করে এই রেটিং দেয়া হয়েছে৷ দেখা যাচ্ছে, রেটিং পাওয়া ট্রেলগুলোর মধ্যে ২৫টির অবস্থান জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্যালাটিনেট ফরেস্টে৷ সেগুলোর একটি হচ্ছে প্যালাটিনেট এবং এলসাচ-কে সংযুক্তকারী দ্য জার্মান-ফ্রেঞ্চ বুর্গেনভেগ রুট৷
গ্যোটের পথ
জার্মানির উত্তরের হার্ৎস অঞ্চলের এবড়েথেবড়ো এবং পাহাড়ি পথ ধরে হাঁটতে ভালোবাসেন অনেক হাইকার৷ সবুজ-ঘেরা এই পথ ধরে পৌঁছানো যায় হার্ৎসের সর্বোচ্চ চূড়ায়, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,১৪১ মিটার উঁচুতে অবস্থিত৷ এই অঞ্চলে পর্যটকদের পায়ের ছাপ পড়ার অনেক আগেই কবি গ্যোটে সেই চূড়ায় উঠেছিলেন৷
অতীতের স্বাদ
দ্য রেনস্টাইগ ট্রেলটির বিস্তৃতি ১৭০ কিলোমিটার, যেটির অবস্থান জার্মানির কেন্দ্রীয় অঞ্চলের থ্যুরিঙ্গিয়ান ফরেস্টে৷ আইসেনাখ থেকে ব্লাকেনস্টাইন পর্যন্ত বিস্তৃত এই ট্রেলের কথা প্রথম উল্লেখ করা হয়েছিল ত্রয়োদশ শতকে৷ তবে পর্যটকদের কাছে সেটি উন্মুক্ত করা হয় উনবিংশ শতাব্দিতে৷ শীতল যুদ্ধের সময় এই পথের অংশবিশেষে শুধু যাওয়া যেতো, কেননা তখন জার্মানি বিভক্ত ছিল৷
কাদামাখা পথে হাইকিং
প্রতিদিন ভাটার সময় কয়েক ঘণ্টার জন্য জার্মানির নর্থ সি’র উপকূলের কিছু কর্দমাক্ত অংশে হাঁটার সুযোগ মেলে৷ এখানে অবশ্য নির্দিষ্ট কোনো ট্রেল ধরে হাঁটা যায় না, বরং নিজেদের মতো করে নিরাপদ পথ খুঁজে নিতে হয়৷ তবে চাইলে একজন গাইডেরও সহায়তা নেয়া যায়৷