1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে স্কুলে উগ্র-ডানপন্থি হামলা বাড়ছে

১৫ মে ২০২৩

জার্মানিতে প্রতিদিন পাঁচজন উগ্র-ডানপন্থি হামলার শিকার হচ্ছেন৷ তরুণদের উপর এই ধরনের হামলা বাড়ছে৷

https://p.dw.com/p/4RMHR
Deutschland Cottbus | Demonstration vor dem Schulamt nach Brandbrief zum Thema Rechtsextremismus
ছবি: Patrick Pleul/dpa/picture alliance

এপ্রিলের শেষে জার্মানির দুই স্কুল শিক্ষক মাক্স টেস্কে ও লরা নিকেল একটি চিঠি প্রকাশ করেন৷ এতে তারা তাদের প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্ণবাদী হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন৷

চিঠিতে তারা লিখেছেন, ক্লাস চলার সময় তারা উগ্র-ডানপন্থি গান বাজাতে শুনেছেন৷ এছাড়া স্কুলের আসবাবপত্রে স্বস্তিকা গ্রাফিতি দেখেছেন এবং স্কুলের করিডোরে কটূক্তি শুনেছেন৷ ‘‘আমাদের স্কুলে বিদেশি চেহারার বা বেশি সহনশীল শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত, বুলিং ও সহিংসতার হুমকির মুখোমুখি হয়,'' বলেন তারা৷ তারা আরো সামাজিক কর্মী নিয়োগ, শিক্ষকদের জন্য আরো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং স্কুলগুলোতে গণতন্ত্র প্রচারের জন্য আরো উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন৷

সম্প্রতি জার্মানির কোটবুস শহরে স্কুল কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ের সামনে উগ্র-ডানপন্থি হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেন এই দুই শিক্ষক৷ সেই সময় মাক্স টেস্কে বলেন, ‘‘স্কুলে বর্ণবাদ, যৌনতা ও হোমোফোবিয়ার সমস্যা আমাদের সবাইকে প্রভাবিত করে৷’’ এটি পুরো সমাজের জন্য হুমকি বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷

পরিসংখ্যান

উগ্র-ডানপন্থি, বর্ণবাদী ও ইহুদিবিদ্বেষের শিকারদের পরামর্শ দেয়া সংস্থাগুলোর সংগঠন ভিবিআরজির প্রধান হাইকে ক্লেফনার বলছেন, ২০২২ সালে ইহুদিবিদ্বেষ ও বর্ণবাদী হামলার শিকার হওয়া শিশু ও তরুণের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুন হয়েছে৷ এমন হামলায় শারীরিকভাবে আহত ৫২০ জনের বেশি শিশু ও তরুণ ২০২২ সালে জার্মানির বিভিন্ন ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারে গিয়েছেন বলে জানান তিনি৷

সবমিলিয়ে ২০২২ সালে প্রায় দুই হাজার ১০০টি উগ্র-ডানপন্থি, বর্ণবাদী ও ইহুদিবিদ্বেষ সংক্রান্ত হামলা হয়েছে- যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৭০০টি বেশি৷ এসব হামলার শিকার দুই হাজার ৮৭১ জন বিভিন্ন ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টার পরিদর্শন করেছেন৷

তবে ক্লেফনার বলছেন, ‘‘এই সংখ্যা নাটকীয় বাস্তবতার ক্ষুদ্র একটি অংশ মাত্র৷'' হামলার সংখ্যা আরও অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করেন তিনি৷ ‘‘আমরা এমন অনেক ঘটনা জানি যেখানে ভুক্তভোগীরা বলেছেন যে, তারা বিষয়গুলো প্রকাশ্যে বলতে ভয় পান, কারণ, অপরাধীরা তাদের আশেপাশেই থাকেন৷ এছাড়া তাদের আশঙ্কা, এসব ঘটনার জন্য হয়ত তাদেরকেই দায়ী করা হতে পারে,'' বলেন ক্লেফনার৷

এই ধরনের হামলা ভুক্তভোগীর উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে বলে জানান তিনি৷ যেমন গতবছর ফেব্রুয়ারিতে টুরিঙ্গিয়া রাজ্যের এক সুইমিংপুলে ৭১ বছর বয়সি এক ব্যক্তি আট বছরের এক ছেলের প্রতি বর্ণবাদী মন্তব্য করেছিলেন৷ ছেলেটিকে ধাক্কা ও লাথি দিয়েছিলেন৷ ‘‘এই হামলার কারণে ছেলেটি এখনও আতঙ্কিত জীবনযাপন করছে এবং তাকে থেরাপি নিতে হচ্ছে,'' বলে জানান ক্লেফনার৷

মে মাসের শুরুতে একটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের বার্লিনের কাছে এক লেকের পাড়ে হলিডে ক্যাম্প করতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ অংক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া ছিল এই ক্যাম্পের উদ্দেশ্য৷ বেশিরভাগ শিক্ষার্থী অভিবাসী পরিবারের সন্তান ছিলেন৷ ক্যাম্প চলার সময় স্থানীয় যুবকেরা দশম শ্রেণির ঐ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণ করেছিলেন এবং তাদের মারারও হুমকি দেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে৷ ঐ ঘটনায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে মধ্যরাতে ক্যাম্প ত্যাগ করতে হয়েছিল৷

এই ঘটনাকে ‘ভয়াবহ' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফ্যাজা৷ তিনি বলেন, ‘‘এটি আরো ভয়ানক এই কারণে যে, এই ঘটনায় যারা হামলার শিকার হয়েছেন তাদেরই (অপরাধীদের পরিবর্তে) পিছু হটতে হয়েছে৷’’

ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে সেটি নিশ্চিত করতে এই ঘটনার তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷

পিটার হিল/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য