জার্মানিতে শুষ্ক আবহাওয়া, দাবানল আর খরা
জার্মানিতে এবারের গ্রীষ্মে এত সূর্যালোক, আর বৃষ্টি-স্বল্পতা সূর্যস্নানে আগ্রহীদের জন্য আশীর্বাদ বয়ে নিয়ে এসেছে৷ কিন্তু তাপপ্রবাহের একটা নেতিবাচক দিকও রয়েছে৷ দাবানল, খরার কারণে কৃষকরা তাঁদের ফসল নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন৷
ভয়াবহ শুষ্ক
জার্মানির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক কয়েক মাসে বৃষ্টিপাতের খুব একটা দেখা মেলেনি৷ আবহাওয়া অফিস বলছে, সাক্সনি আনহাল্টে প্রতি বর্গমিটারে মাত্র ১৫ লিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে৷ পুরো জার্মানিতে গড়ে প্রতি বর্গমিটারে মাত্র ৫০ লিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে৷
অনিশ্চিত আবহাওয়া
জার্মানি জুড়ে যে সামান্য বৃষ্টিপাত হচ্ছে, গ্রীষ্মে তেমনটা খুব একটা দেখা যায় না৷ অন্যদিকে, জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েকটি শহরে মৌসুমি বৃষ্টির কারণে বন্যায় তলিয়ে গেছে সেলার (বা কেলার) এবং রাস্তাঘাট৷
আগুন সংকেত
পুরো জার্মানি জুড়েই এখন দাবানলের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ ব্র্যান্ডেনবুর্গ সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে রয়েছে৷ ওডার-স্প্রি এলাকায় সম্প্রতি ১০০ হেক্টর অরণ্য এবং গমের ক্ষেত দাবানলে পুড়ে গেছে৷
পানির নতুন উৎস খোঁজা
সাক্সনি-আনহাল্টে দমকলকর্মীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন৷ কারণ, তাঁরা পানির নতুন নতুন উৎস খুঁজছেন আগুন নেভানোর জন্য, যাতে তাঁরা কাছাকাছি ট্যাংকগুলোতে পানি ভরে রাখতে পারেন৷
আগাম ফসল, কম ফলন
তবে এই খরা বা শুষ্কতার কারণে কেবল দাবানলই হচ্ছে না, কৃষকদের জন্যও তা অমঙ্গল বয়ে আনছে৷ শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে কৃষকরা আগাম ফসল লাগাতে শুরু করেছেন৷ আর প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত সময়ে ফসল পেকে যাচ্ছে৷ তবে যথেষ্ট বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফলন হয়েছে অনেক কম৷ হঠাৎ হঠাৎ মৌসুমী বৃষ্টিতে ফসলের আরও ক্ষতি হচ্ছে, কারণ, এতে গোড়া পচে যাচ্ছে৷
চাষে লোকসান
আলু, আখ এবং ভুট্টা সাধারণত শরতে চাষ করা হয়৷ এসব শস্য উৎপাদনে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়৷ এ কারণে এ বছর জার্মানিতে ভুট্টা চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে৷
কোথাও পানি নেই
হেল্মহোলটজ-এর পরিবেশ গবেষণা কেন্দ্রের স্টেফান টোবার জানালেন, ‘‘দুই ধরনের খরা হয়: এক মাসের মধ্যে এক ফোটাও বৃষ্টি না হলে৷ এটাকে বলে কৃষিখাতের জন্য খরা৷ এর অর্থ ভূগর্ভে পানির মাত্রা নীচে নেমে গেছে৷’’
গাছপালার তাপ সহ্য করার ক্ষমতা
তিনি জানালেন, ‘‘ভয়াবহ শুষ্ক অবস্থা চলতে থাকলে গাছপালার জন্য তা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিসাধন করতে পারে৷’’ কয়েকটি জার্মান শহরে কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের বড় গাছপালাগুলোতে পানি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷