জার্মানিতে বিরল প্রকৃতির মাঝে সমৃদ্ধ ইকোসিস্টেম
২২ ডিসেম্বর ২০২০জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে মূল্যবান সম্পদ লুকিয়ে রয়েছে৷ অন্য অনেক জায়গায় বিরল এক বস্তু সেখানে পাওয়া গেছে৷ তা হলো নির্মল ও দূষণমুক্ত ভূগর্ভস্থ পানি৷ শুধু পাইক মাছই পরিষ্কার এই পানি পছন্দ করে না, অন্য অনেক মাছের অস্তিত্বের জন্যও এমন পানি জরুরি৷ নদীর ইল মাছের মতো প্রাণী আজ লুপ্তপ্রায় হয়ে উঠেছে৷ পরিষ্কার ভূগর্ভস্থ পানি ছাড়া এই মাছ বাসা বাঁধতে পারে না৷ কিন্তু কী সেই জায়গা, যার বিষয়ে খুব কম মানুষ খবর রাখে? যেখানে বড় প্রাণী শিকার করতে বের হয়?
ভূগর্ভস্থ পানির এই উৎসে তাপমাত্রা সব সময়ে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে৷ ঠাণ্ডা দিনগুলিতে সেখানকার পরিবেশ অত্যন্ত মনোরম হয়৷ সাধারণ মনে হলেও ছোট এই পুকুরের সুরক্ষার প্রয়োজন৷ স্থানীয় মানুষ জায়গাটির নাম রেখেছেন ‘বাজ পড়া গহ্বর', কারণ দেখলে মনে হবে যেন বাজ পড়েই সেখানকার মাটিতে গহ্বর সৃষ্টি হয়েছে৷ সেই পানির প্রবাহ উপত্যকায় রাইন নদীর সঙ্গে মিশে যাবার আগে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়৷
আশেপাশের পাহাড় থেকে সেই প্রবাহের যাত্রা শুরু হয়৷ পাহাড়ি ছোট নদীতে বৃষ্টির পানি জমা হয়ে উপত্যকার দিকে বয়ে যায়৷ সেই স্রোতের একটি শাখা আমাদের চোখের আড়ালে চলে গেছে৷ পাহাড়ের ফাটলের মধ্যে সেই পানি চলে যায়৷ যাত্রাপথে বালু, নুড়িপাথর ও অন্যান্য পাথর ফিল্টার হিসেবে পানি পরিশোধন করে৷ সেইসঙ্গে মূল্যবান ধাতুও যোগ হয়৷
পানির প্রবাহ পাথরের বাধার মুখে পড়লে উপত্যকার দিকে প্রবাহিত হয়৷ সেখানে আলপ্স পর্বত থেকে আসা ভূগর্ভস্থ পানির সঙ্গে এই প্রবাহ মিশে যায়৷ ফলে গোটা স্তরের নীচে ইউরোপের সবচেয়ে বড় ভূগর্ভস্থ পানির আধার সৃষ্টি হয়৷ উপত্যকার কিছু জায়গায় সেই ভূগর্ভস্থ পানি দৃশ্যমান হয়ে পড়ে৷ আলগা মাটির জায়গায় সেই পানি উপরে উঠে আসে৷ এভাবে ছোট ছোট পুকুর গজিয়ে ওঠে৷
নির্মল ভূগর্ভস্থ পানির দৌলতে সেখানকার প্রাণিজগত বৈচিত্র্যে ভরা৷ পাইক মাছ স্থিতিশীল তাপমাত্রা, পুষ্টি ও কম অক্সিজেনভরা এই পানি পছন্দ করে৷ অনেক পাইক মাছ এক মাদি মাছকে অনুসরণ করে৷ সেই মাদি মাছ পানির মধ্যে অনেক নাচ দেখিয়ে অবশেষে এক প্রার্থীর সঙ্গে মিলিত হয়৷ এমন ছোট স্বর্গরাজ্যগুলির অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে উঠছে৷ কারণ পানির উৎসের আশেপাশে চাষবাস বেড়ে চলেছে৷
আগাছানাশক, কীটনাশক এবং নানা রকম সারের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ভূগর্ভস্থ পানির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি৷ বিশেষ করে সারের মধ্যে নাইট্রেটের মতো পদার্থ জলাভূমির ক্ষতি করে৷
স্যার্জ দুমঁ/এসবি