1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উচ্চশিক্ষা

২৩ জানুয়ারি ২০১২

সম্প্রতি জার্মান সংসদের নিম্নকক্ষে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিকে জার্মানিতে স্বীকৃতি দেয়া সংক্রান্ত একটি আইন পাশ হয়েছে৷ তবে আইনটি কার্যকর হবার আগে চাই সংসদের উচ্চকক্ষের অনুমোদন৷

https://p.dw.com/p/13oDZ
ছবি: picture alliance/ZB

১৯৯৩ সালে ইরিস কাহান ইসরায়েল থেকে জার্মানিতে আসেন৷ তিনি প্রথমে মনে করেছিলেন, জার্মানিতে চাকরি পাওয়ার মত যোগ্যতা তার আছে৷ তিনি ইসরায়েলে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন৷ এরপর দুই বছর স্কুল শিক্ষিকা হওয়ার জন্য বিশেষ একটি কোর্সও করেছেন৷ তবে তা সবই করেছেন ইসরায়েলে৷ কিন্তু তিনি দেখলেন, এইসব কোর্স বা কাজের অভিজ্ঞতা জার্মানিতে কোন কাজে আসছে না৷ প্রতিটি সার্টিফিকেট জার্মানির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হয়েছে৷ মন্ত্রণালয় সবকিছু যাচাই, বাছাই করে দেখবে৷ স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট, বিভিন্ন কোর্সের সার্টিফিকেট, ট্রেনিং সার্টিফিকেট – কোন কিছুই বাদ যাবে না৷

কাহান বলছেন, ‘‘আমার সব সার্টিফিকেট জার্মান ভাষায় অনুবাদ করাতে হবে৷ ইসরায়েলে আমি কাজ করেছি শিক্ষিকা হিসেবে৷ আমার পড়াশোনার মাধ্যম ছিল হিব্রু৷ তাই আমাকে সব কাগজপত্র হিব্রু থেকে জার্মান ভাষায় অনুবাদ করাতে হয়েছে৷ এতে নষ্ট হয়েছে অনেক সময় এবং খরচ হয়েছে অনেক টাকা৷''

সবমিলে প্রায় এক হাজার ইউরো খরচ করতে হয়েছে কাহানকে৷ কিন্তু তারপরেও শেষ রক্ষা হয়নি৷ জার্মান কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, ইসরায়েলের কাগজপত্র জার্মান শিক্ষা এবং কর্ম প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি দিচ্ছে না৷ তিনি যে ইসরায়েলে শিক্ষকতা করেছেন তাও গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়নি৷ কাহান জার্মানিতে গত দুই বছর ধরে একটি কিন্ডারগার্টেনে কাজ করছেন৷ বেতন পাচ্ছেন খুবই সামান্য৷ অথচ একই কাজের জন্য তার জার্মান সহকর্মীরা পাচ্ছেন অনেক বেশি বেতন৷ তাই তিনি বাধ্য হয়ে জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং এক বছরের একটি কোর্স সম্পন্ন করেন৷ তবে এধরণের ঘটনা এই প্রথম নয়৷ দশকের পর দশক ধরে অভিবাসী মানুষদের এই ঝামেলা পোহাতে হয়েছে৷ নিজ দেশে এরা সবাই কাজ করেছেন, পড়াশোনা করেছেন কিন্তু যেই মুহূর্তে জার্মানিতে এসেছেন তাদের সোজা জানিয়ে দেয়া হয়েছে – তাঁর ডিগ্রি বা সার্টিফিকেট জার্মান মান অনুযায়ী নয়৷ এটাকে একটি ভুল সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করেন ইলোনা রিজেন৷ জার্মান অর্থনীতি বিষয়ক ইন্সটিটিউটে শ্রম বাজার ও শিক্ষানীতির দায়িত্বে রয়েছেন তিনি৷

Englischer Garten
ছবি: AP

তিনি জানান: ‘‘জার্মান শ্রম বাজারে একজন প্রার্থীর সবকিছু খুঁটিয়ে দেখা হয়৷ কোথায় পড়াশোনা করেছে, রেজাল্ট কেমন, কাজের অভিজ্ঞতা কেমন – কোন কিছুই বাদ যায় না৷ তবে সমস্যা হয় যখন বিদেশি ডিগ্রিগুলোকে অনুমোদন করা হয় না তখন৷ জার্মানির শ্রম বাজারে অনেক বিদেশি চোখে পড়বে৷ অনেকেই এখানে পড়াশোনা করেননি৷ তাদের বলা হয় আরেকবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে, পড়াশোনা করতে৷ এটা করতেও বেশ ঝামেলা পোহাতে হয় তাদের৷''

তবে আশা করা হচ্ছে নতুন আইনের আওতায় এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবে হাজার হাজার অভিবাসী৷ এখন যত সময় লাগছে ভবিষ্যতে এত সময় লাগবে না৷ মাত্র তিন মাসের মধ্যেই জার্মান কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেবে তার ফলাফল৷ তবে জার্মান সংসদের উচ্চ কক্ষের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে৷ আইনটি কার্যকর হবার আগে উচ্চ কক্ষকে অনুমোদন করতে হবে৷

ইলোনা রিজেন আরো জানান: ‘‘নতুন আইনের আধীনে যেসব অভিবাসী জার্মানিতে বসবাস করছে তাদের কাজ খুঁজতে এখন কোন সমস্যা হবে না৷ যারা নতুন এসেছে তাদের জন্য এটা একটা সুখবর৷ তারা তাদের নিজ দেশ থেকে যে সব যোগ্যাতা নিয়ে আসছে তা তারা এখানে কাজে লাগাতে পারবে সময় নষ্ট না করেই৷''

তবে নতুন এই আইনের ফলে শুধু যে অভিবাসীরাই লাভবান হবে তা কিন্তু নয়৷ জার্মানির শ্রম বাজার এখন দুর্বল৷ প্রয়োজন অনেক যোগ্য কর্মী৷ নতুন এই আইনটি কার্যকর হলে অন্তত তিন লক্ষ মানুষের জন্য অবিলম্বে কর্ম সংস্থানের সুযোগ করে দেয়া সম্ভব হবে৷ রিজেন বলছেন,

‘‘এটা শুধু জার্মানির জন্যই ভাল হবে না, এটা থেকে জার্মান সমাজও লাভবান হবে৷ দেশ এবং সমাজ দুই'ই আরো এগিয়ে যাবে৷''

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য