জার্মানিতে নেকড়ে নিয়ে শঙ্কা ও সম্ভাবনা
২০০০ সালে হঠাৎ করেই জার্মানিতে নেকড়ের পুনরাবির্ভাব হয়, যা ক্রমশ বাড়ছে৷ বর্তমানে জার্মানিতে প্রাপ্তবয়স্ক নেকড়ের সংখ্যা ১৬০টি৷
একসময় নিগৃহীত, এখন সুরক্ষিত
১৫শ শতাব্দী থেকে ইউরোপের পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে নেকড়েদের উপর অত্যাচার চলেছে৷ মানুষ এই পশু এত বেশি শিকার করেছে যে ঊনবিংশ শতাব্দীতে এসে এই অঞ্চল থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে প্রাণীটি৷ তাই বর্তমানে এগুলো রক্ষায় বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে এবং এদের শিকার করা বা হত্যা করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷
ক্রমশ প্রত্যাবর্তন
পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা বিএফএন-এর নতুন তথ্য অনুযায়ী, পুরো জার্মানিতে নেকড়েদের ৬০টি দল রয়েছে৷ ২০১৬-তে যেখানে ১৩টি দলের বেশি ছিল না৷ গবেষকরা দেখেছেন, বর্তমানে ১৫০ থেকে ১৬০টি প্রাপ্তবয়স্ক নেকড়ে রয়েছে, যাদের মধ্যে ১৩টি যুগল৷
রাস্তা যখন শত্রু
সড়কে যান চলাচল নেকড়েদের জন্য একটা বড় হুমকি৷ ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০০টি নেকড়ের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ১৪০টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে৷
শিকার
সড়ক দুর্ঘটনার পাশাপাশি, অবৈধভাবে শিকারও নেকড়ের সংখ্যা কমার অন্যতম কারণ৷ কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্তত ২৬টি নেকড়েকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে৷ one.
নির্দিষ্ট সময়ের আগে মৃত্যু
জঙ্গলে ১৩ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে নেকড়েরা৷ তবে এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই অর্ধেক নেকড়ে শাবকের মৃত্যু হয়৷ নানা ধরণের সংক্রমণের কারণে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়, বিশেষ করে যদি তারা অপুষ্টিতে ভোগে৷ আর যদি এই শাবকদের বাবা-মা’র কোনো কারণে মৃত্যু হয়, তাহলে তাদের বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়৷
কৃষকদের জন্য সমস্যা
নেকড়ে কখনো মানুষের উপর হামলা করেছে, এমনটা শোনা যায়নি৷ কিন্তু এদের বিরুদ্ধে ভেড়া হত্যার অভিযোগ রয়েছে৷ কুকুর পুষে বা খামারের চারপাশে বেড়া দিয়ে এদের হাত থেকে পরিত্রাণের চেষ্টা করছেন কৃষকরা৷ যদি কোন প্রাণী নেকড়ের হামলায় মারা যায়, জার্মান সরকার সেই কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেয়৷
নেকড়ে কি বন্ধু হতে পারে?
টানটিয়ানা স্নাইডের নেকড়েদের বেশ ভালোই চেনেন৷ তাঁর মতে, ‘‘আমাদের পোষ্য কুকুরগুলো হলো নেকড়ের গৃহপালিত সংস্করণ৷ মূল পার্থক্য হল: নেকড়ের মুখটা কুকুরের চেয়ে একটু বেশি লম্বা হয়৷’’