জার্মানিতে নিরক্ষর মানুষের সংখ্যা কমছে
জার্মানিতে প্রায় ৬২ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক সঠিকভাবে লিখতে ও পড়তে পারেন না৷ খুব সহজ বাক্যের ক্ষেত্রেও তাঁদের অসুবিধা হয়৷ তবে আশার কথা, নিরক্ষর মানুষের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে জার্মানিতে৷
ছোট ছোট বাক্য পড়তে ও লিখতে পারা
জার্মানিতে ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়সিদের মধ্যে ১২ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ ছোট ছোট বাক্য পড়তে ও লিখতে পারেন৷ তবে বড় টেক্সটগুলোর অর্থ তাঁরা বোঝেন না৷
যাঁদের মাতৃভাষা জার্মান
শতকরা ৫২ দশমিক ৬ ভাগ, অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি মানুষ, যাঁরা ছোটবেলা মাতৃভাষা হিসেবে জার্মান শিখেছেন, তাঁদের মধ্যে ৩৩ লাখই প্রাপ্তবয়স্ক৷ জার্মানির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত একটি সমীক্ষার ফলাফল থেকে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে৷
জার্মানির শিক্ষামন্ত্রী
২০১১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা কোনোরকমে পড়তে ও লিখতে পারে, সেরকম মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৫ লাখ৷ বর্তমানে এমন মানুষের হার কমায় এটাকে এই শিক্ষা নীতির সাফল্য হিসাবে বর্ণনা করেছেন জার্মানির শিক্ষা মন্ত্রী আনিয়া কার্লিৎজেক৷
অভিবাসীদের শিক্ষার সুযোগ বাড়বে
শিক্ষামন্ত্রী মনে করেন, ভবিষ্যতে জনসাধারণ পেশাগত জীবনে আরো বেশি অংশগ্রহণে সক্ষম হবে৷ দীর্ঘদিন ধরে জার্মানিতে বসবাসরত অভিবাসীদের জন্য শিক্ষার সুযোগ আরো বাড়বে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
অক্ষমতা
কম অক্ষর-জ্ঞান সম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বিভিন্ন মেশিন বা অন্যান্য উপকরণের ব্যবহার নির্দেশাবলী, কিংবা অফিসিয়াল প্রয়োজনীয় চিঠিপত্র পড়া বা লেখার মতো কাজগুলো যাঁরা করতে পারতেন না, তাঁদের জন্য অনেক কাজই চ্যালেঞ্জস্বরূপ৷এমন কারণে, বা লেখা-পড়া একেবারে না জানায় অনিশ্চয়তায় ভোগেন ৬২দশমিক তিন শতাংশ মানুষ৷
কম উপার্জনকারী
তাঁরা দৈনন্দিন জীবনে অনিশ্চয়তায় ভোগেন৷ তাঁদের অধিকাংশই কম উপার্জনকারী এবং দু-জনের মধ্যে একজনই অর্থের অভাবে ছুটি কাটাতে যেতে পারেন না৷ এই তথ্য জানান, হামবুর্গের গবেষক আঙ্কে গ্রোটল্যুশেন৷
রাজনৈতিক বিষয়ে জ্ঞান নেই
এদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ মানুষেরই রাজনৈতিক বিষয় বোঝা এবং এমন বিষয়ে মতামত জানাতে সমস্যা হয়৷ তাঁদের পাঁচ জনের মধ্যে একজনের স্কুল সমাপণী সার্টিফিকেটও নেই৷
‘আলফাডিকেড’ প্রকল্প
২০১৮ সালের গ্রীষ্মে, ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়সিদের মধ্যে ৭,২০০ প্রাপ্তবয়স্ককে নিয়ে একটি সমীক্ষা পরিচালিত হয়৷ সেই সমীক্ষায় প্রায় এক ঘণ্টায় বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তাঁদের যথেষ্ট জার্মান বলতে হয়৷ প্রাপ্তবয়স্কদের পড়া এবং লেখার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য জার্মানির শিক্ষা মন্ত্রণালয় তিন বছর আগে ‘আলফাডিকেড’ শিরোনামে একটি প্রকল্প চালু করে৷ সেই প্রকল্পের পেছনে খরচ হবে প্রায় ১৮০ মিলিয়ন ইউরো৷
শিক্ষার মানদণ্ডে ইউরোপের অন্যান্য দেশ এগিয়ে
সারা বিশ্বে প্রাথমিক স্কুলগুলোতে বছরে গড়ে প্রায় ১৬০ ঘন্টা পড়ার জন্য ব্যয় করা হয়৷ আর জার্মানিতে ব্যয় করা হয় মাত্র ৯০ ঘন্টা৷ এর সমালোচনা করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্রান্স এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশের শিক্ষার মানদণ্ড জার্মানির চেয়ে উন্নত৷