1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে নববর্ষে পুলিশের ওপর হামলার নেপথ্যে কারা­?

৩ জানুয়ারি ২০২৩

জার্মানির কয়েকটি বড় শহরে বর্ষবরণের আয়োজন বাধাগ্রস্ত হয় পুলিশ, দমকল এবং অন্য জরুরি সেবাকর্মীদের ওপর হামলায়৷ হামলাকারীদের চিহ্নিত করা ও কঠোর শাস্তির জোর দাবি উঠেছে৷

https://p.dw.com/p/4LhFR
Deutschland Berlin Silvester 2022/23 | Brennender Reisebus, Sonnenallee
ছবি: Paul Zinken/dpa/picture alliance

নববর্ষের প্রাক্কালে ৩৮ হামলার ঘটনা কথা জানিয়েছে বার্লিনের দমকল বাহিনী৷ এর মধ্য়ে ১৪টি ঘটনায় দমকলের গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে ঝোপের মধ্যে ফেলে দেয়া এবং বিয়ার ও আতশবাজি ছুঁড়ে মারার অভিযোগও করা হয়েছে৷

বার্লিন দমকলের মুখপাত্র টমাস কারস্টাইন পাবলিক রেডিও আরবিবিকে বলেছেন, জরুরি পরিষেবা কর্মীদের প্রতি আগ্রাসনের মাত্রা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল। বার্লিনে মোট ১৫ জন কর্মী আহত হয়েছেন, একজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে তাদের ১৮ জন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।

অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছে, জরুরি সেবা দানকারী কর্মীদের প্রতি সহিংসতা বেড়ে চলার পেছনে কী কারণ রয়েছে? কেন তারা আক্রমণের বিশেষ লক্ষ্য হয়ে উঠেছেন?

বার্লিন দমকল টুইটারে এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করেছেন।

পুলিশ, জরুরি সেবা কর্মীদের বিরুদ্ধে 'মারাত্মক হামলা' 'অত্যন্ত বিরল'

হামবুর্গ পুলিশ একাডেমির পুলিশ সমাজবিজ্ঞানী রাফায়েল বের মনে করেন, কোনও সিদ্ধান্তে আসার আগে ঘটনাগুলি বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করা দরকার।

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, "সহিংসতার আশেপাশের পরিস্থিতির জটিলতা সম্পর্কে আমাদের কাছে সত্যিকার তথ্য নেই৷ আমাদের কাছে কেবল পুলিশ বা জরুরি পরিষেবা ইউনিয়ন এবং অন্যান্যদের বিবৃতি রয়েছে, যেগুলতো  সহিংসতা বাড়ার কথা বলা হয়েছে৷ এর সত্যতা আমরা জানি না৷ আমরা এও জানি না যে এই সহিংসতার উদ্দেশ্য কি ছিল৷”

তিনি বলেন, "এই ধরনের ঘটনা খুবই পীড়াদায়ক৷ কারণ আমরা জানি যে জরুরি সেবার দায়িত্ব মানুষের ভালো করা, জীবন বাঁচানো৷ পুলিশের যেমন সংঘর্ষে জড়ায়, জরুরি সেবা তেমন না হওয়ায় তাদের ওপর আক্রমণের কথা শুনে আমরা অভ্যস্ত নই।"

ফেডারেল ক্রিমিনাল পুলিশ অফিস ২০২১ সালে জানিয়েছিল, পুলিশের ওপর সহিংসতার ঘটনা ৬৮৯টি বেড়ে ৩৯ হাজার ৬৪৯ হয়েছে। ২০১২ সালের তুলনায় পুলিশের ওপর সহিংসতার ঘটনা মোট ২২ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে বের মনে করেন, সহিংসতার প্রতি জার্মান সমাজ অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে৷ বিশেষ করে পুলিশ এবং জরুরি সেবা কর্মীদের বিরুদ্ধে কটূক্তিও এখন সহিংসতা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা আগে করা হতো না।

সহিংসতায় পুরুষত্ব প্রদর্শন?

সহিংসতায় জড়িতদের বেশিরভাগই পুরুষ৷ এই তথ্যটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চান মুনস্টার ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড অ্যাডমিনিস্ট্র্য়াটিভ সায়েন্সেস এর মনোবিজ্ঞান এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আলফ্রেড গেবার্ট৷

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘২০ থেকে ২৯ বছর বয়সি তরুণদের মধ্যে ইউনিফর্ম পরা কর্মীদের প্রতি সম্মান ক্রমশ কমছে৷ তারা মাতাল হয়ে উন্মত্ততার মাধ্যমে বন্ধুদের সামনে নিজেদের জাহির করতে চায়৷ আমি মনে করি স্কুলে সম্মানবোধ শেখানোতে ঘাটতি রয়েছে৷ পাশাপাশি বিভিন্ন ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি না হওয়াও বড় একটা কারণ৷''

রাফায়েল বের মনে করেন, এক ধরনের পুরুষত্ব প্রকাশের ঝোঁক থেকেও এইসব হামলার ঘটনা ঘটে৷ তিনি বলেন, ‘‘কিছু তরুণ নিজেদের এই রূপ জনসমক্ষে দেখাতে চান৷ তারা মনে করেন, এতে তাদের শক্তি প্রকাশ পায়৷'' তবে মদ্যপ তরুণদের জড়িত থাকা এসব ঘটনা গণমাধ্যমে নাটকীয় উপায়ে পরিবেশন করা হয় বলেও মনে করেন রাফায়েল৷

গেবার্ট বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি না যে সহিংসতায় জড়ানো এই দলের সমাজে বড় কোনো প্রভাব রয়েছে৷ বরং আমি মনে করি সমাজের বৃহত্তর অংশ এইসব হামলার ঘটনাকে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করে এবং জড়িতদের কঠোরতর শাস্তি চায়৷''

জার্মানির পুলিশ ইউনিয়ন গেভ্যার্কশাফট ডের পোলিৎসাই এরই মধ্যে জরুরি সেবাকর্মীদের ওপর হামলায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে৷

হেলেন ভিটল/এডিকে