1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে চিকিৎসাখাতে ভালো করছেন বাংলাদেশিরা

২৮ আগস্ট ২০২০

জার্মানিতে ডাক্তারি পড়ার পাশাপাশি চিকিৎসাখাতের গবেষণাতেও খুব ভালো করছেন বাংলাদেশিরা৷ এখানকার পড়াশোনা ও গবেষণার মান বিশ্ব মানের হওয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নাম করার সুযোগ রয়েছে এই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের৷

https://p.dw.com/p/3hdMe
Deutschland Heidelberg | Zwei Medizinstudenten aus Bangladesch im Gespräch mit DW
ছবি: DW/Z. Ahmed

এইচএসসি পাশ করে একাই জার্মানিতে চলে এসেছেন উর্মি রহমান৷ উদ্দেশ্য ডাক্তারি পড়া৷

‘‘আমি এখানে এসে প্রথমে ভাষা শিখি৷ তারপর স্টুডিয়েনকলেগ (ব্যাচেলর পড়ার প্রস্তুতি কোর্স) করি৷ তারপর ডাক্তারি পড়া শুরু করি,'' বলেন ঊর্মি৷ 

বাংলাদেশের এই শিক্ষার্থী এখন ডাক্তারি পড়ছেন জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল ফ্যাকাল্টিতে৷ আর তিন বছর লাগবে ডাক্তারি পাশ করতে৷ কাজটা কঠিন ছিল ঊর্মির কাছে৷ কিন্তু সেই কঠিন কাজটিই করেছেন ধৈর্য্যের সঙ্গে৷

‘‘আমরা তো বাংলাদেশে পরিবারের সহযোগিতা নিয়ে সবকিছু করে অভ্যস্ত৷ তাই এটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল,'' বলেন তিনি৷ ‘‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ভাষা শেখা৷ আর আমার পড়া যেহেতু জার্মান ভাষায়, তাই চ্যালেঞ্জ ছিল সি১ লেভেল পর্যন্ত শেখা৷''

বাংলাদেশ থেকে যারা ডাক্তারি পড়ে এখানে আসেন, তাদের একটি লাইসেন্স টেস্ট দিতে হয় বলে জানান ঊর্মি৷ সেই পরীক্ষাটি জার্মান ভাষায় হয়৷ তাই ডাক্তারি পড়তে হলে জার্মান ভাষা জানতেই হয়৷

উৎস আলী হায়দারের অবশ্য ভাষা নিয়ে এতটা সমস্যায় পড়তে হয়নি৷ হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাস্কুলার বায়োলজি অ্যান্ড টিউমার এনজিওজেনেসিস বিভাগে পিএইচডি শুরু করেন তিনি৷ গবেষণার এ পর্যায়ে ইংরেজি ভাষা চলে৷

‘‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিক্যুলার বায়োলজি  থেকে পাশ করে জার্মানিতে সেল বায়োলজি ও ফিজিওলজির ওপরে মাস্টার্স করি৷ এরপর এখানে ডায়বেটিস নিয়ে গবেষণার জন্য পিএইচডি পজিশনটি দেখে আগ্রহী হই এবং আবেদন করি,'' বলেন তিনি৷  তবে তার চ্যালেঞ্জ ছিল অন্য৷

‘‘পড়াশোনার জন্য না লাগলেও প্রাত্যহিক জীবনে জার্মান ভাষাটা লাগে৷ তাই আমি সেটা শিখেছি৷ তবে বাংলাদেশে যেটা আমরা খুব বেশি শিখি না, যেমন নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেয়া বা সময়ানুবর্তিতা, সেটি জার্মান শিক্ষার্থীরা খুব ছোটবেলা থেকে শেখেন৷ আমি তাদের কাছ থেকে সেটা শেখার চেষ্টা করেছি,'' বলেন উৎস৷

এই দুই শিক্ষার্থী জানান, জার্মানিতে পড়াশোনার খরচ (টিউশন ফি) কোনো কোনো রাজ্যে একেবারে শূন্য৷ তবে যেখানে হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত সেই বাডেম ভ্যুটেমব্যর্গ রাজ্যে এখন সেটি সেমিস্টার প্রতি দেড় হাজার ইউরো৷ তারা বলেন, জার্মানিতে পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি পাওয়া কঠিন নয়৷ তবে এর পাশাপাশি ডাক্তারি বা চিকিৎসা খাতে গবেষণা করার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপের সাপোর্ট থাকা ভালো৷

‘‘যেহেতু ডাক্তারিতে পড়াশোনা বেশি, তাই একটার বেশি জব করা সম্ভব নয়৷ সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন কাজ করা যায়৷ তাতে বাড়ি থেকে কিছুটা সাপোর্ট থাকলে সুবিধা,'' বলেন ঊর্মি৷

আর উৎস বলেন, ‘‘যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিছুটা সাপোর্ট পাচ্ছি এবং একটি জব করছি, তাতে আমার বেশ ভালোই চলে যাচ্ছে৷''

শুধু ঊর্মি ও উৎসই নন, জার্মানিতে অনেক বাংলাদেশিই ডাক্তারি পড়তে আসছেন এবং তারা ভালো করছেন৷ অনেকে এখান থেকে গবেষণা করে দেশে ফেরত যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন দেশের গবেষকদের সঙ্গে মিলে নতুন নতুন গবেষণাও করছেন৷