জার্মানিতে চাকরির জন্য যেভাবে আবেদন করবেন
৪ আগস্ট ২০১৯তবে এখনও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগ সিভির সঙ্গে একটি ছবি দেখতে পছন্দ করে।
যে কোনো চাকরির আবেদন করাই জটিলতার৷ কিন্তু জার্মানিতে বিষয়টি আরো বেশি জটিল৷
একটা সময় ছিল যখন আবেদনকারীকে একটি বড় খামের ভেতর সিভির সঙ্গে পাসপার্ট আকারের ছবি জুড়ে দিয়ে পোস্ট করতে হত৷ এখন আর সেই অবস্থা নেই, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনলাইনে আবেদন নেয়া হয়৷
কীভাবে চাকরি খুঁজবেন
চাকরি খোঁজার অনেকগুলো পদ্ধতি আছে৷ এরমধ্যে ইউরোপের জব পোর্টাল এবং বিভিন্ন কোম্পানির ওয়েবসাইেট খোঁজ করা যেতে পারে৷ কারণ এসব সাইট সব সময় হালনাগাদ থাকে৷ এছাড়া সংবাদপত্র, চাকরি মেলা, নিয়োগকারী সংস্থা এবং পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের মাধ্যমে খবর পাওয়া যায়৷
গতানুগতিক এসব পদ্ধতির বাইরে কিছু কোম্পানি নিজ থেকে অনলাইন প্ল্যার্টফর্ম এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে মেধাবীদের সন্ধান করে৷
ক্যারিয়ারভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্ম এক্সইং-এর নিয়োগ বোর্ডের প্রধান ক্যাটরিন হুগোর মতে, সবারই একটি হালনাগাদ প্রোফাইল 'অপরিহার্য', কারণ সংস্থাগুলি সক্রিয়ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগ্যকর্মীদের খোঁজ করে৷
যে কাজ পারবেন তা পেতে আবেদন করুন
চাকরির বিজ্ঞপ্তি ভালোমত পড়ে যে কাজ আপনি করতে পারবেন সে ধরনের পদে আবেদন করুন৷ বিদ্যালয় পাসের সনদ নিয়ে সিইও পদে আবেদন করবেন না৷ তবে একইসঙ্গে নিজেকে কম দামে বিক্রিও করা যাবে না৷ কোম্পানিগুলো সাধারণত একেকজন আবেদনকারীকে পাঁচ মিনিট করে সময় দেয়৷ ওই সময়ের মধ্যে যে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন তার সঙ্গে আপনার পড়াশোনার কোনো মিল খুঁজে না পেলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অযোগ্য বলে চিহ্নত করে৷
অসম্পূর্ণ আবেদন পাঠানো যাবে না
চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে যেসব তথ্যউপাত্ত চাওয়া হয়েছে তার সব ঠিকমত আবেদনের সঙ্গে দেয়া হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত হতে হবে৷ কাগজপত্র এমনভাবে রাখুন যেন অল্প সময়ে তা পাঠানো যায়৷ একটি কভার লেটার, সিভি, রেফারেন্স লেটার ছাড়াও সকল সনদপত্রের পিডিএফ কপি পাঠাতে হবে৷
বেনামে আবেদন পাঠাবেন না
'যার জন্য প্রযোজ্য', 'ডিয়ার স্যার', 'ডিয়ার ম্যাডাম' এসব আবেদনপত্রে লেখা যাবে না৷ যে প্রতিষ্ঠানে আবেদন করছেন সেখানকার প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তার নাম সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনে সময় নিন৷ কারণ এটা ওই কোম্পানিতে আপনার চাকরি পাওয়ার আগ্রহের বিষয়টিকে তুলে ধরবে৷ এজন্য কোম্পানির ওয়েবসাইট, লিংকডইন বা এক্সিংয়ের মতো নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোর সহায়তা নিতে পারেন৷ আপনার আবেদনপত্রে কোম্পানির ঠিকানা ঠিকমত লিখেছেন কি না তাও নিশ্চিত করুন।
বানান চেকার ব্যবহার করুন
আবেদনপত্রে আপনি যা লিখছেন তা যেন নির্ভুল হয় তা নিশ্চিত করতে হবে৷ বানানের পাশাপাশি লাইন স্পেসিংয়েও যেন কোনো ভুল না থাকে তা পরীক্ষার জন্য বানান চেকার ব্যবহার করুন৷
অন্যের সহায়তা নিন
আপনি জার্মান নাগরিক না হলে বা জার্মান ভাষা জানা না থাকলে অন্য কারো সহায়তা নিন৷ আপনি আবেদনপত্রের সঙ্গে যা পাঠাচ্ছেন তা ঠিক আছে কি না যাচাই করিয়ে নিন৷ ইংরেজিতে সিভি লিখলে জার্মান ভাষায় কাভার লেটার লেখা উচিত৷
বেমানান কিছু যেন না থাকে
জীবনবৃত্তান্ত একটি নির্দিষ্ট ফরম্যাটে লিখুন৷ কারণ লেখার ফ্রন্ট, স্পেসিং, হেডিং এসব বিষয় নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ প্রথমেই দেখেন৷ সিভিতে যা উল্লেখ করছেন তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে৷ আবেদন খুব ছোটা না লিখে একটু বড় করে লেখাই ভালো৷ একসঙ্গে ৩০টির বেশি পিডিএফ দেবেন না৷
অনলাইনে কী পোস্ট করছেন নজর রাখুন
অনেকে মাতাল হওয়া ছবি অনলাইনে পোস্ট করেন, কিন্তু কল্পনা করুন আপনার ভবিষ্যতের কোনো বস তা দেখেছেন৷ আপনার নেটওয়ার্কিং প্রোফাইলগুলো হালনাগাদ রাখুন যাতে তার মধ্য দিয়ে একটি ইতিবাচক চিত্র প্রতিফলিত হয় এবং আপনি যে চাকরির সন্ধান করছেন তার জন্য আপনিই উপযুক্ত প্রার্থী তা বোঝা যায়৷
অন্যান্য
সিভিতে ছবির ব্যবহার জার্মান ঐতিহ্য হলেও এখন আর তা নেই৷ তবে মানবসম্পদ কর্মকর্তারা সিভিতে একটি ছবি দেখতে পছন্দ করেন কারণ তারা মনে করেন এতে তাদের হাতে সব কিছুই থাকছে৷
সব সময় সঠিক তথ্য দিতে হবে৷
টিমোথি রুকস/এসআই