1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে অভিবাসীরা আরো সুরক্ষা চান

২৩ মার্চ ২০১৮

সম্প্রতি একাধিক মসজিদের উপর আক্রমণ ও বহিরাগত বিদ্বেষের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জার্মানির অভিবাসী সম্প্রদায় শঙ্কিত৷ অভিবাসী নেতৃবর্গ পুলিশসহ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অধিকতর সাহায্য ও সহমর্মীতা প্রত্যাশা করছেন৷

https://p.dw.com/p/2uqad
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Zinken

বার্লিনের সামাজিক গণতন্ত্রী দলের সংসদীয় নেতা রায়েদ সালেহ বলেছেন, ‘‘আমি বাস্তবিক উদ্বিগ্ন৷ আমি দেখছি, ইসলাম বিদ্বেষ কিভাবে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে, দশ বছর আগেও যা অকল্পনীয় ছিল৷’’

সালেহ নিজে ধর্মপ্রাণ মুসলমান, আবার আন্তঃধর্ম সংলাপের ক্ষেত্রেও তিনি সক্রিয়৷ ক্রয়েৎসব্যার্গ আর নয়ক্যোলন এলাকা দু'টির মধ্যে ৮০ বছর আগে নাৎসিরা যে সিনাগগটি ধ্বংস করেছিল, বার্লিনের ইহুদি সম্প্রদায়ের সঙ্গে সেটিকে আবার গড়ে তুলতে চান সালেহ৷

বিভিন্ন মসজিদের উপর সাম্প্রতিক আক্রমণ ও জার্মানির নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট জেহোফারের ইসলামবিরোধী মন্তব্য নতুন করে বুঝিয়ে দিয়েছে, আন্তঃধর্ম সংলাপ ঠিক কতটা দুরূহ৷ ‘‘মসজিদের উপর আক্রমণ মেনে নেওয়া যায় না৷ মসজিদ, সিনাগগ বা গির্জার উপর আক্রমণ চিরকালই গোটা সমাজের উপর আক্রমণ,’’ ডয়চে ভেলেকে বলেন সালেহ৷

‘হেট ক্রাইম’

সাধারণভাবে জার্মানিতে অপরাধের সংখ্যা কমতির দিকে৷ গতবছর কোনো কোনো রাজ্যে তা সবনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছায়৷ তবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপরাধ বাড়ছে৷

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে জার্মানিতে ‘হেট ক্রাইম’-এর সংখ্যা ৩,৭৭০ থেকে ১০,৭৫১-য় পৌঁছেছে৷ বিশেষ করে ‘ধর্মীয় ও বিদেশি মতাদর্শ’ বিভাগে অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে৷ অপরদিকে এই সময়ে বিদেশে বিভিন্ন সংঘাতের দরুণ জার্মানিতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপরাধের সংখ্যা ১২০ থেকে বেড়ে ৪০৪-এ দাঁড়ায়৷ ধর্মীয় মতাদর্শ প্রণোদিত অপরাধের সংখ্যা বাড়ে ২৪৮ থেকে ১,৫১৬-তে৷

২০১৭ সালের পরিসংখ্যান এখনও প্রকাশিত না হলেও, বিভিন্ন রাজ্যের প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায় যে, এই প্রবণতা অক্ষুণ্ণ৷

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতে পুলিশ পাহারা?

ভবিষ্যতে কি জার্মানিতে মসজিদ আর সিনাগগগুলির জন্য পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা করতে হবে? এদেশে কি ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য অধিকতর সুরক্ষার প্রয়োজন?

তুর্কি সমীক্ষা ও অন্তর্ভুক্তি গবেষণা কেন্দ্রের ইউনুস উলুসয়-এর মতে, প্রত্যেকটি মসজিদ বা তুর্কি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা সম্ভব নয় – বিশেষ করে জার্মানিতে মসজিদের সংখ্যা যখন ২,০০০ অতিক্রম করেছে৷

দক্ষিণপন্থি চরমপন্থা, বর্ণবাদ ও ইহুদি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে সক্রিয় আমাদেউ আন্তোনিও নিধির বিশেষজ্ঞদের মতে, মসজিদগুলির বর্ধিত পুলিশ পাহারা প্রয়োজন, কিন্তু পুলিশ সুরক্ষা দিয়ে অন্তর্নিহিত সমস্যাটির সমাধান করা যাবে না৷

অভিবাসী সম্প্রদায়গুলির বিভিন্ন সমিতির কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ পর্যন্ত সরকারি তরফে কেউ যোগাযোগ করেনি, অথচ অভিবাসী সমিতি ও পুলিশের মধ্যে বর্ধিত সহযোগিতা সর্বাগ্রে প্রয়োজন বলে তুর্কি ও অপরাপর অভিবাসী সংক্রান্ত নিধির কর্মকর্তাদের অভিমত৷

সহানুভূতির অভাব

দৃশ্যত পুলিশ অভিবাসী বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের ভাবনা-চিন্তা বা ভয়-ভীতিকে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দেয় না এমন- একটি ধারণা বা অনুভূতি বিরাজ করছে৷ ‘গির্জার উপর আক্রমণ হলে কি পুলিশের এমন প্রতিক্রিয়া হতো?’ প্রশ্ন তুলেছেন তুর্কি সম্প্রদায়ের সদস্যরা৷

সবুজ দলের রাজনীতিক মেমেৎ কিলিচ ফেডারাল অন্তর্ভুক্তি পরিষদের সদস্য৷ কয়েক বছর আগে কিলিচ ও তাঁর পুত্র অন্তর্ভুক্তি পরিষদের এক সাবেক সদস্যের কাছ থেকে খুনের হুমকি পেতে থাকেন৷ পুলিশ কিন্তু গোটা ব্যাপারটাকে পরিষদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে গণ্য করে ও কিলিচকে কোনো আইনজীবীর কাছে যেতে বলে৷ ‘‘আমার মনে হয়, রাষ্ট্র যেন আমাকে বর্জন করেছে,’’ বলেন কিলিচ৷

অথচ বহির্বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতের ফলশ্রুতি হিসেবে জার্মানির অভিবাসী সম্প্রদায়গুলির মধ্যে যে দ্বন্দ্ব দানা বাঁধছে, তা থেকে বহ্নি, এমনকি দাবানল সৃষ্টি হবার বিপদ থাকতে পারে বলে কিলিচ সাবধান করে দিয়েছেন৷ 

আস্ট্রিড প্রাঙ্গে/এসি