জার্মান পপ সংগীত: সুইং থেকে ইউরোডান্স
জার্মান সংগীত বলতেই ক্ল্যাসিক, অর্থাৎ বাখ-বেটোফেনের কথা মনে পড়ে৷ কিন্তু বার্লিনে ‘ও ইয়া!’ নাম দিয়ে একটি প্রদর্শনী শুরু হয়েছে, যার বিষয় হল জার্মানিতে বিগত ৯০ বছরের পপ মিউজিক৷
‘শ্লাগার’ নয়, পপ
‘শ্লাগার’ কথাটার মানে হলো ‘হিট’ গান৷ বাংলা গানের সঙ্গে হিন্দি গানের যে সম্পর্ক, ‘শ্লাগার’ আর পপ সংগীতের মধ্যে সম্পর্কটা অনেকটা সেইরকম৷ ওরই মধ্যে আবার হিপি ফ্যাশন ইত্যাদি ঢুকে পড়েছে৷ বার্লিনের মিউজিয়াম অফ কমিউনিকেশনে জার্মানিতে পপ সংগীতের সুদীর্ঘ ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে৷
ওয়াকম্যানের জাদু
সোনি কোম্পানি সত্তরের দশকের শেষে প্রথম ওয়াকম্যানটি বাজারে আনে৷ আর কিছু নয়, পথে-ঘাটে ক্যাসেট শোনার একটি পন্থা৷ কিন্তু তাতেই যেন পপ সংগীতের অনুরাগীরা হাতে স্বর্গ পেয়ে যান – জার্মানিতে তো বটেই৷ আজকের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের ওয়াকম্যান দেখতে মিউজিয়ামে যেতে হবে!
‘একো’ হলো জার্মানির ‘গ্র্যামি’
জার্মানির রেকর্ড কোম্পানিগুলি মিলে, আগের বছরের বিক্রিবাটার ভিত্তিতে ‘একো’ পুরস্কার বিজয়ীদের নির্ধারণ করে থাকে – আবার একটি জুরিও আছে৷ প্রক্রিয়াটা খুব সহজবোধ্য না হলেও, বাণিজ্যিক সাফল্যই এই পুরস্কারের মূল কথা৷
কিম্ভুত
‘ডি প্রিনৎসেন’ বা ‘দ্য প্রিন্সেজ’ নামের একটি জার্মান পপ ব্যান্ডের লিড গায়ক মার্টিন ক্রুমবিগেল তাঁর এই স্টেজে পরার স্যুটটি ধার দিয়েছেন বার্লিনের প্রদর্শনীকে৷ কালো কাপড়ের গায়ে নানা ধরনের জার্মান শব্দ – ভালো-মন্দ দুই’ই – লেখা আছে৷ বাকিটা নিজের ব্যক্তিগত রুচি৷
‘প্রভুর কণ্ঠ’
১৮৯৮ সালে নিপার নামের একটি কুকুর তার প্রভুর ফোনোগ্রাফের সামনে বসে ইতিহাস সৃষ্টি করে (ছবিতে অবশ্য ফোনোগ্রাফটি বাদ পড়েছে), যা থেকে হিজ মাস্টার্স ভয়েস লোগোটির সৃষ্টি৷ জার্মানির ইএমআই কোম্পানিও এই লোগোটি ব্যবহার করে থাকে৷
জার্মানিতে ‘কিং’ এলভিস
এলভিস প্রেসলি বাধ্যতামূলক সামরিক রংরুট হিসেবে মাত্র ২৩ বছর বয়সে জার্মানিতে আসেন – ১৯৫৮ সালে৷ এলভিস ছিলেন বাড নাউহাইম নামের একটি ছোট্ট শহরে; ভবিষ্যৎ ঘরণী প্রিসিলা প্রেসলির সঙ্গেও সেখানেই তাঁর প্রথম পরিচয়৷ মনে রাখা দরকার, এলভিস যখন জার্মানিতে পা দেন, তখন তিনি রীতিমতো একজন ওয়ার্ল্ড স্টার৷
বিটলসরাও ছিলেন হামবুর্গে
ষাটের দশকে হামবুর্গ বন্দরনগরীর ছোট ছোট বারে গান গেয়েছেন রিঙ্গো স্টার বাদে পাঁচজন আদি বিটলস৷ ১৯৬০ সালের আগস্ট থেকে ১৯৬২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিটলসরা ছিলেন হামবুর্গে৷ জার্মানিতে বিটলসদের জনপ্রিয়তার সঙ্গে একমাত্র তুলনা করা যায় জার্মান পপ সংগীতশিল্পীদের উপর তাদের প্রভাবের – সে আমলের পশ্চিম জার্মানির সবচেয়ে নামকরা ব্যান্ড ‘দ্য লর্ডস’ যার প্রমাণ৷ (ছবিতে ‘দ্য লর্ডস’ গোষ্ঠীর এক সদস্যের গিটার)৷
টেকনো এবং লাভ প্যারেড
যন্ত্রপ্রধান টেকনো মিউজিককে জার্মানির একটা বিশেষত্ব বলা চলতে পারে৷ অপরদিকে লাভ প্যারেড নামের শোভাযাত্রাটিতে টেকনো মিউজিক, যৌনতা ও উদ্ভুটে সাজগোজের কোনো বাধাবাঁধন নেই৷ প্রদর্শনীতে যে সুবিশাল ‘প্ল্যাটফর্ম’ যুক্ত জুতোটি রাখা হয়েছে, সেটা পরেছিলেন ১৯৯৯ সালের মিস লাভ প্যারেড – এবং পা না ভেঙেই৷ শোনা যায়, এই জুতো নাকি হাই হিলের চেয়ে বেশি আরামপ্রদ৷