1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান নির্বাচনে গানের গন্ডগোল

৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

গানের মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচারণা নতুন বিষয় নয়। কিন্তু জার্মানিতে এই চর্চা জন্ম দিচ্ছে কপিরাইটসহ নানা বিতর্কের।

https://p.dw.com/p/3zySM
Screenshot YouTube Wahlwerbespot Ein schöner Land Grüne Bundestagswahl 2021
ছবি: YouTube/BÜNDNIS 90/DIE GRÜNEN

জার্মান নির্বাচন হবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর। কিন্তু এর প্রচারণায় সেভাবে সংগীতের ব্যবহার চোখে পড়ছিল না। অবশেষে, গ্রিন পার্টি তাদের সোশাল মিডিয়া একাউন্টে একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে বিভিন্ন বয়সের মানুষদের দেখা যায় একসাথে একটি জনপ্রিয় জার্মান লোকগান গাইতে। গানটির নাম 'কাইন শ্যোনার ল্যান্ড ইন ডিজার সাইট', অর্থাৎ 'এখনকার সবচেয়ে সুন্দর দেশ'। কিন্তু এই ভিডিওতে পুরনো বাণীকে অল্প বদলে নেওয়া হয়েছে।

নতুন রূপের এই গানে জার্মানির রাস্তাঘাট, যান চলাচল থেকে ইন্টারনেট পরিষেবাসহ সব ধরনের যোগাযোগমাধ্যমের কথা।

জনগণ এই নতুন গান পছন্দ করেছে কি না, তা এখন বোঝা না গেলেও গ্রিন পার্টি এই গানের ভিডিওর দৌলতে আলোচিত হয়ে উঠেছে, তা নিশ্চিত। ইউটিউবে এই ভিডিওটি দেখা হয়েছে ছয় লাখ বার, টুইটারে ১৫ লাখেরও বেশি।

সংগীত যে শুধু মানুষকে আনন্দ দেয় তা নয়। একসাথে গান গাওয়া বা শোনার মধ্যে রয়েছে এক ধরনের গোষ্ঠী চেতনা, যা নির্বাচনি প্রচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফলে, প্রচলিত গান বা সুর উঠে আসা নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিছু নতুন নয়।

তবে সব সময় যে ভোটাররা বা গানের স্রষ্টারা তা পছন্দ করবেন, এমনটাও ঠিক নয়।

গান নিয়ে বিপাকে

২০০৫ সালে আঙ্গেলা ম্যার্কেলের প্রচারণার সাথে অলিখিতভাবেই জুড়ে যায় রোলিং স্টোনস ব্যান্ডের 'অ্যাঞ্জি' গানটি। ব্যান্ডটির পক্ষে বলা হয় যে, বিনা অনুমতিতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের গান ব্যবহারের জন্য তারা ক্ষুব্ধ।

একইভাবে জার্মান গানের দল 'ডি টোটেন হোজেন' ২০১৩ সালে আপত্তি জানায় তাদের হিট গান 'টাগে উই ডিজে' সিডিইউদলের প্রচারণায় বিনা অনুমতিতে ব্যবহারের জন্য।

যদিও প্রচারের সময় এই গান ব্যবহার করা বন্ধ করে দেয় ম্যার্কেলের দল, কিন্তু পরে নির্বাচনে জেতার পর বিজয় উল্লাসে এই গান ব্যবহৃত হয়, ব্যান্ডটির অনুমতি নিয়েই।

কপিরাইটের জটিলতা

জার্মান আইন অনুযায়ী, 'যে ব্যক্তি একটি গান সৃষ্টি করেন, তার অধিকার রয়েছে নির্ধারণ করার কে সেই গান ব্যবহার করবেন। তবে সব সময় যে স্রষ্টার অনুমতি লাগবেই, এমনটা নয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কপিরাইট সংস্থা জিইএমএ ঠিক করে দেয় যে কে ব্যবহার করতে পারে সেই সৃষ্টি।' এমনটাই জানাচ্ছেন কপিরাইট বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ফাবিয়ান রাক।

গণপরিসরে কোনো গান বা সংগীত ব্যবহার করতে হলে এই সংস্থাকে নির্দিষ্ট ফি দিতে হয়। এই ফি দেওয়া হলে জিইএমএ-এর আওতায় থাকা সকল সংগীত ব্যবহারের অনুমতি পেয়ে যান ফি-দাতা।

রাজনৈতিক দলগুলিও চাইলে জিইএমএ-কে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে এই সংস্থার অন্তর্ভুক্ত শিল্পীদের সৃষ্টি সংগীত প্রচারণায় ব্যবহার করতে পারেন। স্রষ্টার অনুমতি এক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় তার সৃষ্টিকে কোন ভিডিও আকারে প্রস্তুত করার সময়।

কিন্তু 'ফি দেবার পরেও জটিলতা সৃষ্টি হয় যখন মূল গানের অর্থ বা বাণী বিকৃত করা হয় নির্বাচনি প্রচারের উদ্দেশ্যে, বা বারবার একই গান বাজিয়ে যখন গানটিকে রাজনৈতিক অর্থ দেবার চেষ্টা করা হয়', জানান রাক।

শিল্পীর ভাবমূর্তিতে প্রভাব

সম্প্রতি, জার্মানির অতি-ডানপন্থি দল এনপিডি শিল্পী হেলেনে ফিশারের সবচেয়ে জনপ্রিয় গান 'আটেমলোস ডুর্শ ডি নাখট' ব্যবহার করে নিজেদের প্রচারে। ফিশার দলের বিরুদ্ধে মামলা করেন ও জয়ী হন।

আদালত জানায় যে, একটি সংবিধান-বিরোধী রাজনৈতিক দল ফিশারের গান ব্যবহার করায় শিল্পীর নিজস্ব ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

দলের রাজনৈতিক মতাদর্শ যাই হোক না কেন, দলমত নির্বিশেষে জনপ্রিয় গানের নির্বাচনি প্রচারে ব্যবহার নানা ধরনের জটিলতা বয়ে আনে। এঢ় ফলে, জার্মান নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলি আজকাল আগের চেয়ে বেশি গান ব্যবহার করছে, তবে এর মধ্যে খুব কম গানই অন্য কোনো শিল্পীর সৃষ্টি। বদলে, বিশেষভাবে নির্বাচনের জন্যই লেখা হয়েছে, এমন গান ব্যবহার করার দিকে ঝুঁকছে তারা।

গ্রিন পার্টি ছাড়া, এবারের নির্বাচনে আর কোনো দলই পূর্বপ্রচলিত কোনো গান তাদের প্রচারণায় রাখেনি। শুনতে চিত্তাকর্ষক না হলেও, আইনি জটিলতা এই পন্থায় তুলনামূলকভাবে কম। তবে গ্রিন পার্টির এবারের গানটি নিয়ে মাথাব্যথা কম। কারণ, প্রচারে ব্যবহৃত লোকগানটি ৭০ বছরেরও বেশি আগে রচিত। ফলে, কপিরাইটের দাবি জানানোর সময় অনেক আগেই পেরিয়ে গেছে।

আনাবেল স্টেফেস-হালমের/এসএস

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য