1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান টেলিভিশনের টক শো বেশ তথ্যনির্ভর

২২ অক্টোবর ২০১৮

জার্মানিতে বেশ কয়েকটি টক শো চালু থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ার তুলনায় সেগুলি অনেক বেশি তথ্যনির্ভর ও মার্জিত৷ যথেষ্ট প্রস্তুতি ও সাংবাদিকতার উচ্চ মান বজায় রেখে বেশিরভাগ টক শো আয়োজন করা হয়৷

https://p.dw.com/p/36tD6
ছবি: DW

‘দ্য নেশন ওয়ান্টস টু নো' – এমন বুলি নিয়ে দর্শকদের মনে আগ্রহ জাগানোর চেষ্টা করে ভারতের এক টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব বেশ ‘খ্যাতি' অর্জন করেছেন৷ রাজনৈতিক নেতা, বিশেষজ্ঞ বা কোনো ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আলোচনায় আমন্ত্রণ জানিয়েও তাঁদের কথা বলার সময় বার বার বাধা দিয়ে, এমনকি হুমকি দিয়েও নিজের বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি৷ এমন ‘স্টাইল' দক্ষিণ এশিয়ার অন্য অনেক টেলিভিশন বিতর্কেও দেখা যায়৷ ফলে কোনো বিষয় বা ঘটনা সম্পর্কে তথ্যনির্ভর বিতর্ক, বিভিন্ন দিক তুলে ধরার প্রচেষ্টা, বিভিন্ন অবস্থানের মধ্যে ভারসাম্যের কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না৷ সাংবাদিকতার মান নেমে যায়৷ 

টেলিভিশনে এমন আলোচনা বা ‘টক শো' কি আদৌ কোনো বিষয়ের সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরতে পারে? জার্মানির টেলিভিশন জগতেও এমন অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়৷ তবে দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে তুলনার আগে জার্মানির সংবাদ মাধ্যমের নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করতে হয়৷ প্রথমত, টেলিভিশনের পর্দায় ২৪ ঘণ্টা ধরে সংবাদ বা চলতি ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে মাতামাতি দেখা যায় না৷ তার জন্য নির্দিষ্ট কিছু সময় ধার্য করা হয়েছে৷ তাজা ঘটনা ঘটলে রেডিও বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই মানুষ তা জানতে পারেন৷ দ্বিতীয়ত, ‘সরকারি' টেলিভিশন চ্যানেল বলতে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ যা বোঝেন, জার্মানিতে তার কাঠামো সম্পূর্ণ আলাদা৷ জনস্বার্থে যে ‘পাবলিক' সম্প্রচার কেন্দ্রগুলি জার্মানির বিভিন্ন অঞ্চল বা জাতীয় স্তরে অনুষ্ঠান প্রচার করে, সরকার বা করদাতাদের অর্থে সেগুলি চালু থাকলেও তাদের অনুষ্ঠানের উপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই৷ ফলে যথেষ্ট স্বাধীনভাবে তারা সংবাদ, বিশ্লেষণ ও আলোচনা করতে পারে৷

সরকারি বা বাণিজ্যিক চাপ না থাকায় ‘পাবলিক' সম্প্রচার কেন্দ্রগুলি যথেষ্ট উচ্চ মানের সাংবাদিকতার পরিচয় দিতে পারে৷ বিভিন্ন টক শো অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও তা দেখা যায়৷ এ ক্ষেত্রে ‘হার্ট আবার ফেয়ার' নামের এক সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানের উল্লেখ করা যেতে পারে, যার আক্ষরিক অর্থ ‘কঠিন হলেও ন্যায্য'৷ সবার আগে কোনো বিষয় বেছে নিয়ে সে বিষয়ে খোঁজখবর, গবেষণা ও প্রস্তুতি চলে৷ স্টুডিওতে অতিথিদের আনা হয়৷ দর্শকদের আসনেও এমন কিছু মানুষ থাকেন, যাদের সঙ্গে সেই বিষয়ের সরাসরি যোগাযোগ থাকে৷ সোশ্যাল মিডিয়া ও টেলিভিশন দর্শকদের প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করার জন্য থাকেন একজন সাংবাদিক৷ অতিথিদের প্রশ্নোত্তরের মাঝে ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ দেখিয়ে সত্য ঘটনা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চলে৷ এমনকি অনুষ্ঠানে যে সব প্রশ্নের চূড়ান্ত জবাব পাওয়া যায় না, অথবা যে সব বিষয় চ্যালেঞ্জ করা হয়, সে সবের নিষ্পত্তি করতে ওয়েবসাইট সক্রিয় থাকে৷ 

‘জার্মানিতে বাকস্বাধীনতা চর্চা করতে পারছি’

যে কোনো দেশের মতো জার্মানিতেও টক শো'র অতিথি বাছাই নিয়েও তর্ক-বিতর্ক রয়েছে৷ ঘুরেফিরে কিছু মুখ বার বার দেখা যায়৷ তাঁদের বক্তব্যও প্রায় একঘেয়ে হয়ে ওঠে৷ অন্যের কথার মাঝে বাধা দেবার ঘটনাও কম নয়৷ সঞ্চালকরা যতটা সম্ভব অনুষ্ঠানের রাশ নিজেদের হাতে রাখার চেষ্টা করেন৷

জার্মানিতেও ‘টিআরপি' গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ ‘প্রাইম টাইম' বা সেরা সময়ে প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলি দর্শকদের বেশি আকর্ষণ করে৷ বিভিন্ন টেলিভিশন নেটওয়ার্কের ওয়েবসাইটেও সাধারণত এক সপ্তাহ ধরে অনুষ্ঠানের ভিডিও রাখা থাকে৷ এমন ‘অন ডিমান্ড' পরিষেবার সুযোগ নেন অনেক দর্শক৷ ২০১৭ সালে ‘হার্ট আবার ফেয়ার' অনুষ্ঠানটি বাজারের প্রায় ১০ শতাংশ দখল করতে পেরেছিল৷ অনেক টক শো আবার সঞ্চালকের নামেই পরিচিত হয়৷ যেমন গত বছরের সবচেয়ে জনপ্রিয় টক শো'র নাম ‘আনে ভিল'৷ রবিবার রাতে ‘প্রাইম টাইম'-এ এই অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্য পরের দিন সংবাদ মাধ্যমে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে৷

এসবি/এসিবি

প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷