1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান এআই অ্যাপে ভারতের চাষিদের মুশকিল আসান

১৪ মে ২০২৪

প্রায় সব ক্ষেত্রেই এআই-এর প্রয়োগ বাড়ছে৷ ভারতের চাষিরা এক জার্মান অ্যাপের মাধ্যমে শস্যের সমস্যা চিহ্নিত করে চটজলদি সমাধান করছেন৷

https://p.dw.com/p/4fqZe
প্ল্যান্টিক্স অ্যাপ৷
ভারতে লাখ লাখ চাষী প্ল্যান্টিক্স নামের অ্যাপটি ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন বাড়াতে পেরেছেন৷ছবি: APTN

ক্ষেতে কোনো গাছ কাহিল মনে হলেই এই চাষিরা তাঁদের স্মার্টফোন বার করে তার ছবি তুলে সঙ্গে সঙ্গে জেনে যান, সেই গাছের কোনো রোগ আছে কিনা৷ অ্যাপ প্রয়োজনে ছবি বিশ্লেষণ করে রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে৷ চাষি হিসেবে সন্দীপ শিন্ডে মনে করেন, ‘‘প্ল্যান্টিক্স শস্যের ডাক্তারের মতো৷ ঠিক আমার নিজের ডাক্তারের মতোই৷ সেটি শস্যের রোগ শনাক্ত করে, চিকিৎসার পরামর্শ দেয়, ওষুধ লিখে দেয় এবং প্রতিরোধমূলক চিকিত্সাও করে৷''

কোদাল এবং বেলচার সঙ্গে স্মার্টফোনও মাঠে নিয়ে যাওয়া ভারতের চাষিদের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে৷ভারতে কৃষিক্ষেত্রে ডিজিটাল টুল প্রয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে৷ দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকেই কৃষিক্ষেত্রে কাজ করে৷

মানুষের পক্ষে খালি চোখে দেখে গাছের রোগ নির্ণয় করা অত্যন্ত কঠিন৷ অথচ এই অ্যাপ খেতের মধ্যেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তা করতে পারে৷ কিন্তু সেটি ঠিক কীভাবে কাজ করে? সন্দীপ শিন্ডে বলেন, ‘‘এই অ্যাপের ব্যবহার খুবই সহজ৷ সবার আগে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে প্ল্যান্টিক্স খুলতে হয়৷ তারপর ছবি তোলার পালা৷ আমরা নির্দিষ্ট অংশের ছবি তুলছি৷ তোলার পর সেটি আপলোড করতে হয়৷ অ্যাপ প্রথমে শস্য শনাক্ত করে৷''

শস্যের রোগ সারাতে অ্যাপ

প্ল্যান্টিক্স সংগৃহিত তথ্য জার্মানিতে বিশ্লেষণ করে৷ সেটি হেল্ম ফার্মাসিউটিকাল কোম্পানির অংশ৷ এই উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতারা ছাত্রজীবনে হানোফার বিশ্ববিদ্যালয়ে টমেটো নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করেছিলেন৷ সংস্থার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগের প্রতিনিধি কর্বিনিয়ান হার্টব্যার্গার বলেন, ‘‘সেটা আমাদের সার্ভারে পাঠানো হয়৷ এক ডিপ নিউরাল নেটওয়ার্ক সেটার বিশ্লেষণ করে৷ সেটা আসলে নির্দিষ্ট রোগ বা পোকার উপদ্রব চিহ্নিত করার এক মডেল৷ শনাক্ত করেই ফল বাতলে দেয়৷''

তথাকথিত গাছের ডাক্তাররা ছবির তথ্যভাণ্ডারে অপরিচিত ছবি চিহ্নিত করতে সাহায্য করেন৷ এভাবে এআই বাড়তি শিক্ষার ভিত্তিতে কোনো পদক্ষেপ বা চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারে৷ সন্দীপ শিন্ডে জানান, ‘‘এখন অ্যাপ রোগের লক্ষণ বিচার করে রোগ নির্ণয় করছে৷ পাতার ধারের অংশ হলুদ হয়ে গেছে৷ অ্যাপ বলছে রোগ নেই, পটাসিয়ামের অভাবের কারণে এমনটা হচ্ছে৷''

প্রায় ৮০ লাখ চাষি ইতোমধ্যেই প্ল্যান্টিক্স অ্যাপ ব্যবহার করছেন৷ তাদের প্রায় সবাই ভারতেই রয়েছেন৷

অ্যাপের ইমেজ ডেটাবেসে বিভিন্ন গাছের রোগের প্রায় সাড়ে তিন কোটি ছবি রয়েছে৷ ফলে অত্যন্ত নির্ভুলভাবে রোগ বা সমস্যা নির্ণয় করা যায়৷ হার্টব্যার্গার বলেন, ‘‘আপনি কি ৩০টি ভিন্ন শস্যের প্রায় ৭০০ সমস্যার কথা জানেন? সম্ভবত জানেন না, কারণ এত বেশি জানা বেশ কঠিন৷ তাছাড়া এমন নির্ণয়ের কাজ মানুষের পক্ষে সহজ নয়৷''

যেমন কোনো রোগ শনাক্ত করা হলে অ্যাপ ব্যবহারকারীদের উপযুক্ত কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেয়৷ এমনকি কোথায় সেটা কিনতে পাওয়া যায়, তাও জানিয়ে দেয়৷ কিন্তু স্থানীয় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সব সময়ে সব পণ্য থাকে না৷ ফলে চাষিরা ভুল বা এমনকি জাল পণ্যও কিনতে পারেন৷ তার পরিণতি ভালো হয় না৷ হার্টব্যার্গারের মতে, ‘‘আমাদের অনুমান অনুযায়ী ভারত এবং সম্ভবত অন্য দেশেও বিক্রিত পণ্যের প্রায় অর্ধেক কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য উপযুক্ত নয়৷ আমরা প্রথমত সঠিক প্রেসক্রিপশন দেই৷ দ্বিতীয়ত এমন নামী প্রতিষ্ঠানগুলির কাছ থেকে পণ্য কিনতে চাষিদের সাহায্য করি, যাদের কাছে সত্যি ভালো ও সহায়ক পণ্য আছে বলে আমরা জানি৷''

চাষিরা প্ল্যান্টিক্স ব্যবহারের পর আরো ভালো ফসলের মুখ দেখছেন৷এআই চাষিদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার বিকল্প না হয়ে উঠলেও খেতের কাজ অবশ্যই কিছুটা সহজ করে তুলবে৷

ফেলিক্স পাউশিঙার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান