1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জামায়াতের তিন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি

৩১ মে ২০২২

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের দায়ে নওগাঁ জামায়াতের সাবেক নেতা রেজাউল করিম মন্টুসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত৷

https://p.dw.com/p/4C4SB
ছবি: Nerijus Liobe/Zoonar/picture alliance

ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের খবর অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধের সময় নওগাঁয় সাতজনকে হত্যার পাশাপাশি আরও অনেককে আটকে রেখে নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠণ ও অগ্নিসংযোগের মত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত  করে তাদের এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে৷

দণ্ডিত আসামিরা হলেন- নওগাঁর মো. রেজাউল করিম মন্টু, মো. নজরুল ইসলাম ও মো. শহিদ মণ্ডল৷ তাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম পলাতক; বাকি দুজন রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷

বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করে৷ ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার এবং কে এম হাফিজুল আলম৷

১৪৪ পৃষ্ঠার রায়ের সারসংক্ষেপে আদালত বলেছে, এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন মানবতাবিরোধী অপরাধের যে তিন ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছিল, তার সবগুলোই প্রমাণিত হয়েছে৷

আসামিদের মধ্যে রেজাউল করিম মন্টু ১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী জয়পুরহাট জেলার আমির ছিলেন৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মন্টু তখন থেকেই জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন৷ বাকি দুই আসামি জামায়াতের সমর্থক৷

তাদের পক্ষে এ মামলায় শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান ৷ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, আবুল কালাম আজাদ ও তাপস কুমার বল৷

তিন আসামির বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর তদন্ত শুরু করে প্রসিকিউশনের তদন্ত

দল৷ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করে৷

পরের বছর মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি অভিযোগে তাদের অভিযুক্ত করে বিচার শুরু হয়৷ প্রসিকিউশনের ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে৷ সেই যুক্তিতর্ক শেষে গত ২৬ মে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে৷  

আসামিদের মধ্যে রেজাউল করিম মন্টুকে ২০১৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করে জয়পুরহাট দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়৷ শহিদ মণ্ডল ও ইসহাক আলীকে গ্রেপ্তার করা হয় একই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি৷

আসামি রেজাউল করিম মন্টু সর্বশেষ জয়পুরহাট সদরে থাকতেন৷ জেলা শহরের প্রফেসর পাড়ায় যে বাসায় তিনি থাকতেন সেটি পিরিচিতি পেয়েছেরাজাকার বিল্ডিং নামে৷
আর পলাতক নজরুল ইসলাম থাকতেন ঢাকায় তেজগাঁওয়ে৷ শহীদ মণ্ডলের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছী থানার চাঁপাডাল গ্রামে৷

যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে তিন অভিযোগ

অভিযোগ ১ 

১৯৭১ সালের ৭ অক্টোবর বিকাল আনুমানিক ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সময়ে আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের রানাহার গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র সাহেব আলী, আকাম উদ্দিন, আজিম উদ্দিন মণ্ডল, মোজাফফর হোসেনকে হত্যাসহ ওই সময় ১০-১২টি বাড়ি লুট করে অগ্নিসংযোগ করে৷

অভিযোগ ২

 ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর দুপুর আনুমানিক দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টার মধ্যে আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খোজাগাড়ী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র মো. নুরুল ইসলামকে হত্যা করে৷ এসময় তারা ১৫-২০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে৷

অভিযোগ ৩ 

১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর বিকাল আনুমানিক ৫টা থেকে এবং পরদিন ৯ অক্টোবর আনুমানিক বিকাল ৫টা পর্যন্ত সময়ে নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের মো. কেনার উদ্দিন এবং মো. আক্কাস আলীকে অবৈধভাবে আটক করে নির্যাতন করে৷ পরে অপহরণ করে জয়পুরহাটের কুঠিবাড়ি ব্রিজে নিয়ে হত্যা করে৷ ওই সময়ের মধ্যে আসামিরা ৪০ থেকে ৫০টি বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে৷

এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)