1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জামায়াত কি বিএনপিকে ছেড়ে দিয়েছে

২৮ আগস্ট ২০২২

জামায়াতে ইসলামির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিএনপি জোটের সঙ্গে তারা আর নেই৷ তবে যুগপৎ আন্দোলন হতে পারে৷ তিনি জামায়াতের এই জোটে না থাকার জন্য বিএনপিকেই দায়ী করেছেন৷

https://p.dw.com/p/4G9j3
কয়েক বছর আগে ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর ইফতার মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া
কয়েক বছর আগে ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর ইফতার মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছবি: DW/M.Rahman

তার বক্তব্যের এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে৷ তবে কয়েকজন জামায়াত নেতা দাবি করেছেন, ‘‘ডা. শফিকুর রহমান অনলাইনে এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে ওই কথা বলেছেন৷ তবে এটা জামায়াতের দলীয় সিদ্ধান্ত কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়৷ 

জানা গিয়েছে, জামায়াতের আমির এখন প্রায়ই নেতাদের সঙ্গে অনলাইনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন৷ ওই ভিডিওটি সাম্প্রতিক কোনো ভিডিও কনফারেন্সের৷ তিনি সেখানে বলেছেন, ‘‘আমরা এতদিন একটা জোটের সঙ্গে ছিলাম ৷ ছিলাম বলে আপনারা হয়তো ভাবছেন কিছু হয়ে গেছে নাকি? ২০০৬ সাল পর্যন্ত এটি একটি জোট ছিল ৷ ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর জোট তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে৷ সেদিন বাংলাদেশ পথ হারিয়ে ছিল৷ সেটা আর ফিরে আসেনি৷ বছরের পর বছর পর এই ধরনের অকার্যকর জোট চলতে পারে না৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘এই জোটের সঙ্গে বিভিন্ন দল যারা আছেন, বিশেষ করে প্রধান দলের(বিএনপি) এই জোটকে কার্যকর করার কোন চিন্তা নাই৷ বিষয়টা আমাদের কাছে স্পষ্ট দিবালোকের মতো এবং তারা আমাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ এখন বাস্তবতা হচ্ছে নিজস্ব অবস্থান থেকে আল্লাহর উপর ভর করে পথ চলা৷ তবে হ্যাঁ জাতীয় স্বার্থে একই দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করব ইনশাআল্লাহ৷''

তার এই বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে আসার পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে৷ আওয়ামী লীগের মধ্যে উল্লাস লক্ষ্য করা গিয়েছে৷ আর বিএনপি নেতারা সতর্কভাবে কথা বলছেন৷ রবিবার জামায়াত নেতারাও যার যার বলয়ে বৈঠক করেছেন৷

এই অবস্থায় জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জামায়াতের আমিরের এটা কোনো অফিসিয়াল বক্তব্য নয়৷ এটা অফিসিয়াল বক্তব্য হলে তো আমরা প্রেস রিলিজ দিয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানাতাম৷''

‘‘জামায়াতের আমিরের এটা কোনো অফিসিয়াল বক্তব্য নয়’’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘জোট ছাড়ার কোনো প্রক্রিয়া শুরু হয়নি৷ কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি৷ তবে এখন আমরা আলাদা কর্মসূচি দচ্ছি৷ তার মাধ্যমে যুগপৎ আন্দোলন করছি আলাদা প্লাটফর্মে৷''

আর সিলেটের শুরা সদস্য নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘‘জামায়াতের আমির বলেছেন ২০ দলীয় জোট আর ২০০৬ সালের পর সক্রিয় নেই৷ জামায়াত যে জোটে নেই সেকথা তিনি বলেননি৷

তার কথায়, ‘‘বিএনপির নেতারা বিভিন্ন সময় দেশে বিদেশে বলেছেন জামায়তে ছাড়ার জন্য তাদের ওপর দেশি-বিদেশি চাপ আছে৷ আমরা কিন্তু কখনোই এটা বলিনি৷''

তিনি বলেন,‘‘ আসলে জোটের এখন কোনো কার্যক্রম নাই৷ দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে আমাদের জেটগত যোগাযোগও নাই৷ আমরা ১৯৯৬ সালের মত লিয়াঁজো কমিটির মাধ্যমে সামনে যুগপৎ আন্দোলন করব৷ যার যার অবস্থান থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে৷''

  ১৯৯৯ সালে জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি চারদলীয় জোট গঠন করে৷ এই জোটই পরে হয় ২০ দলীয় জোট৷ তবে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সখ্যতা আরো পুরোনো৷ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘‘ ২০ দলীয় জোট ভেঙে যাওয়া বা জামায়াত জোট ছেড়ে গেছে এরকম কোনো বিষয় আমাদের জানা নাই৷ আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি৷ আমরা যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি৷ আমাদের লক্ষ্য এই সরকারের পতন এবং নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন৷ যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলনে যোগ দেবেন৷ জামায়াতের আমিরও তো বলেছেন তারা যুগপৎ আন্দোলনে আছেন৷ জামায়াকে এই আন্দোলন থেকে বাইরে রাখার কোনো ইচ্ছা আমাদের নাই৷''

‘‘সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি’’

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে জবাবে বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনে বিএনপির কর্মসূচির ওপর হামলা বেড়ে গেছে৷ এর কারণ আন্দোলনে ভীত হয়ে সরকারের লোকজন হামলা করছে৷ আর শেখ হাসিনা মুখে এক কথা বলেন, অন্তরে আরেক চিন্তা৷ তিনি হামলা বা গ্রেপ্তার হবেনা বললেও হামলা গ্রেপ্তার আরো বেশি হচ্ছে৷''

এদিকে জামায়াতের আমিরের বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান উল্লসিত হয়ে রবিবার বলেছেন, ‘‘বিএনপির বড় উইকেট পড়ে গিয়েছে৷ জামায়াতে ইসলাম বলেছে বিএনপির সঙ্গে তারা আর নেই৷''

জামায়াতের কোনো কোনো নেতা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলেও শোনা যাচ্ছে৷ তবে জামায়ত নেতা এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘‘ এই কথার কোনো সত্যতা নেই৷ আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে কোনো ধরনের কোনো বৈঠক আমাদের হয়নি৷''