1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাপানিদের আশ্চর্য মানসিক স্থৈর্য

২১ মার্চ ২০১১

ভূমিকম্প, সুনামি এবং পারমাণবিক বিপর্যয়ের ত্রহস্পর্শ সত্ত্বেও জাপানিরা এরকম শান্ত থাকে কি করে? এ’প্রশ্ন এখন শুধু বাকি বিশ্বেরই নয়৷ জাপানিদের মনেও সেই প্রশ্ন জেগেছে৷

https://p.dw.com/p/10d7B
সুনামির ন’দিন পরে উদ্ধার করা হল এই আশি বছর বয়সী মহিলাকেছবি: picture-alliance/dpa/ASAHI SHIMBUN

জাপানিদের কর্তব্যবোধ, দায়িত্ববোধ, এ'সব বিখ্যাত৷ তাদের আচার-আচরণ অতি শৃঙ্খলাবদ্ধ৷ ভদ্রতায়, ভব্যতায়, তাদের মতো কেউ নেই৷ সবাই যেন সর্বক্ষণ ঝুঁকে পড়ে বাকি সকলকে অভিবাদন জানাচ্ছে৷ আবার আকিরা কুরোসাওয়া'র ছবিতে সামুরাই যোদ্ধাদের দেখে জাপানের‘মার্শিয়াল' বা যোদ্ধৃসুলভ ইতিহাসের একটা আন্দাজ পাওয়া যেতে পারে৷ একদিকে হাইকু কবিতা থেকে গেইশা সঙ্গিনী কিংবা সুমো কুস্তিগির - অন্যদিকে এজরা পাউন্ডের সেই মন্তব্য: সভ্যতার সংজ্ঞা হল, জাপানের সম্রাট তাঁর পারিষদদের নিয়ে নীরবে ধূপদান থেকে ধূপের ধোঁয়া ওঠা দেখছেন৷ এবং আজ হয়তো সুশি রেস্তরাঁ, সোনি ক্যামেরা, টয়োটা গাড়ি ইত্যাদি যোগ করতে হবে৷ এই সব মিলেই হল জাপান৷

Fukushima 2011 Bevölkerung
ত্রাণশিবিরেও কোনো বিশৃংখলা নেইছবি: AP

কিন্তু উত্তর জাপানের যে তোহুকু এলাকায় সুনামি হাজার হাজার মানুষের প্রাণ নিয়েছে, সেখানকার মানুষরা যে এখনও এরকম অবিচলিত, সাহায্য পৌঁছক আর না পৌঁছক, তারা যে অনুযোগ-অভিযোগ করতে জানে না - এ'সবের কারণ তাদের পূর্বপুরুষরা কৃষিজীবী এবং মৎসশিকারী৷ তারা জানে যে, তুমি যেই হও না কেন, তুমি আবহাওয়ার উপর নির্ভরশীল৷ তোহুকুর মানুষরা পরষ্পরকে সাহায্য করেই অভ্যস্ত, তারা বাইরের কি পরের সাহায্য নিতে জানে না৷

আর সাধারণভাবেই জাপানি সংস্কৃতিতে আছে সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ৷ ফুকুশিমায় যে ৫০ জন ইঞ্জিনিয়ার তেজস্ক্রিয়তা সত্ত্বেও আণবিক চুল্লিগুলিতে কাজ করে চলেছেন, তারাই সেই দায়িত্ববোধের প্রমাণ৷ মিয়াজাওয়া'র একটি ছোটদের কাহিনীর নায়ক নিজের প্রাণ বলি দিয়ে একটি আগ্নেয়গিরিতে আগুন জ্বালান, যা'তে গাঁয়ের বাকি লোকেরা শীতে জমে না যায়৷ আসলে প্রতিটি মানুষ যে সমাজের সঙ্গে সূক্ষ্ম সুতোয় বাঁধা থাকে, তা'ই প্রমাণ করে দিয়েছে উত্তর জাপানের মানুষ৷ বিপর্যয়ের পরিস্থিতিতে পরষ্পরের উপর দোষারোপ করে না তারা৷

এবং এতো বড় বিপর্যয়ে জাপানে আতঙ্ক বা লুটতরাজ, দু'টোর কোনোটাই নেই৷ এর চাইতে বড় প্রমাণ কিছু থাকতে পারে?

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম