1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রেশমা উদ্ধার বিতর্ক

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২ জুলাই ২০১৩

বাংলাদেশের সাভারে রানা প্লাজা ধসের ১৭ দিনের মাথায় জীবিত অবস্থায় গার্মেন্টস কর্মী রেশমাকে উদ্ধারের পর, এখন এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে৷ বিতর্ক হয়েছে সংসদে৷ আর এই বিতর্কে এখন কথা বলছেন সাংবাদিকরাও৷

https://p.dw.com/p/190Id
Bangladeshi rescuers retrieve garment worker Reshma from the rubble of a collapsed building in Savar on May 10, 2013, seventeen days after the eight-storey building collapsed. The death toll from last month's collapse of a garment factory complex in Bangladesh rose past 1,000 as piles of bodies were found in the ruins of a stairwell where victims had sought shelter. AFP PHOTO/STR (Photo credit should read STRDEL/AFP/Getty Images)
ছবি: Getty Images/STRDEL

গত রবিবার যুক্তরাজ্যের ট্যাবলয়েড ‘সানডে মিরর' ১৭ দিন পর ধংসস্তূপের নীচ থেকে রেশমাকে উদ্ধারের ঘটনাকে ‘সাজানো নাটক' বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷ এর এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশের ‘দৈনিক আমার দেশ' তাদের অনলাইন সংস্করণে একই ধরণের প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷ দুটি প্রতিবেদনই বলা হয় যে, রানা প্লাজা ধসের দিনই রেশমা তাঁর এক পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে বেরিয়ে আসেন৷ এরপর তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেলে দুই দিন চিকিত্‍সা দেয়া হয়৷ তাই ১৭ দিন পর রেশমাকে উদ্ধারের ঘটনা একটি ‘সাজানো নাটক'৷ তবে প্রতিবেদনে রেশমার সহকর্মীর নাম বা পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি৷

এ নিয়ে জাতীয় সংসদে মঙ্গলবার বিতর্ক হয়েছে৷ বিএনপির সংসদ সদস্য এবং বিরোধী দলের ভারপ্রাপ্ত চিফ হুইপ শহীউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি সংসদে বলেছেন, সরকার রানা প্লাজা ধসের দায়-দায়িত্ব থেকে বাঁচতে এই নাটক সাজিয়েছে৷ সরকারের উচিত আসল ঘটনা প্রকাশ করা৷ এর জবাবে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, মিররের রিপোর্টই সাজানো নাটক৷ আর এই ট্যাবলয়েড পত্রিকার কাজই হলো গাল-গল্প প্রচার করে কাটতি বাড়ানো৷ তিনি বলেন, রেশমাকে উদ্ধারের ৫০ দিন পর মিররের সাংবাদিক সাইমন রাইট এই রিপোর্টটি করেছেন৷ হলুদ সাংবাদিকতার কারণে দাক্ষিণ আফ্রিকায় একবার গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন তিনি৷

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার বার্তা প্রধান জ ই মামুন ডয়চে ভেলেকে বলেন, মিররের রিপোর্টের সত্যতা নিয়ে তাঁর প্রশ্ন আছে৷ তারা যে সব তথ্যের ভিত্তিতে বলছে যে, রেশমা উদ্ধার সাজানো নাটক – সেসব তথ্য তারা প্রমাণসহ হাজির করতে পারেনি৷ আর রেশমার সহকর্মীর কোনো পরিচয় প্রকাশ না করায় রিপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে৷ তিনি বলেন, রিপোর্টে সাভারের যে এনাম মেডিকেলে রেশমার চিকিত্‍সা নেয়ার কথা বলা হয়েছে সেই এনাম মেডিকেলে এটিএন বাংলাও অনুসন্ধান করেছে৷ সেখানে রেশমার ভর্তির কোনো কাগজ পত্র নেই৷ আর মিররও কোনো কাজপত্র বা হাসপতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হাজির করতে পারেনি৷ তাহলে তথ্য-প্রমাণ ছাড়া মিরর কিভাবে একে ‘সাজানো নাটক' বলে? তাঁর মতে, ট্যাবলয়েড পত্রিকার বৈশিষ্ট্যই এরকম৷ তাই জ ই মামুনের প্রশ্ন, মিরর জানালো আর বাংলাদেশের সাংবাদিকরা জানলো – না এটা কিভাবে সম্ভব? তিনি বলেন, মিরর যদি রেশমার সহকর্মীকে হাজির করতে পারে তাহলে তাঁর কথা প্রচার করবে এটিএন বাংলা৷

একুশে টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক ইব্রাহিম আজাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, মিররের রিপোর্ট একটি বিতর্ক তৈরি করেছে৷ তবে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কোনো সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে কোনো খবর তাঁর চোখে পড়েনি৷ এখন মিররেরই দয়িত্ব হলো নিজেদের রিপোর্ট প্রমাণ করা৷ তিনি অবশ্য মনে করেন, রেশমা সংক্রান্ত সব তথ্য প্রকাশ করলেই বিতর্কের অবসান ঘটবে৷ তিনি মনে করেন, এ নিয়ে যদি কেউ অনুসন্ধান করতে চান তাহলে সরকারের উচিত হবে সব ধরণের তথ্যে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা৷

এদিকে সাভার এনাম মেডিকেলের পরিচালক (জনসংযোগ) জাহিদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান যে, তারা রানা প্লাজা ধসের পর পর ১,৭০০ জনকে চিকিত্‍সা দিয়েছেন৷ ধসের পর জরুরি চিকিত্‍সার কারণে প্রথম দিকে অনেকের নাম-ঠিকানাই তারা ঠিকভাবে লিখতে পারেননি৷ তবে পরে যাঁদের নাম ঠিকানা ঠিকভাবে লেখা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রেশমা নামে কেউ নেই৷ আর যাঁদের নাম-ঠিকানা রাখা যায়নি, তাঁদের মধ্যে রেশমা নামে কেউ ছিলেন কিনা, তা তাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়৷

Bangladeshi rescuers retrieve garment worker Reshma from the rubble of a collapsed building in Savar on May 10, 2013, seventeen days after the eight-storey building collapsed. The death toll from last month's collapse of a garment factory complex in Bangladesh rose past 1,000 as piles of bodies were found in the ruins of a stairwell where victims had sought shelter. AFP PHOTO/STR (Photo credit should read STRDEL/AFP/Getty Images)
জীবিত অবস্থায় গার্মেন্টস কর্মী রেশমাকে উদ্ধারের পর, এখন এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছেছবি: Getty Images/AFP/STRDEL

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, রেশমাকে উদ্ধার করা হয় সবার সামনে৷ কোনো কোনো টেলিভিশন চ্যানেল তা সরাসরি সম্প্রচারও করে৷ তাই এ নিয়ে কোনো লুকোচুরি বা গোপনীয়তার কিছু নেই৷

গত ২৪শে এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় মোট ১,১৩১ জন নিহত হন৷ ধসের ১৭ দিন পর ১০ই মে রেশমাকে উদ্ধারের ঘটনা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য