জাকার্তায় ইকো-ইসলাম সেমিনার
পরিবেশ সুরক্ষায় কিভাবে ইসলাম ভূমিকা রাখতে পারে এ নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আয়োজন করা হয়েছে এক সেমিনারের৷ ডয়চে ভেলে এবং ইন্দোনেশিয়ার সিভিল সোসাইটি সংগঠন ওয়াহিদ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে৷
মানুষকে ভালোবাসা, প্রকৃতিকে ভালোবাসা
সবক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব থাকা সত্ত্বেও পরিবেশ রক্ষায় ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ধর্মকে খুব একটা কাজে লাগানো যায়নি এতোদিন৷ ধর্ম কিভাবে এই পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে, সেই সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতেই ইন্দোনেশিয়ার ওয়াহিদ ইন্সটিটিউটের সঙ্গে মিলে জাকার্তায় এক সেমিনার আয়োজন করেছে ডয়চে ভেলে৷ সেমিনারের মূল স্লোগান, ‘মানুষকে ভালোবাসা, প্রকৃতিকে ভালোবাসা’৷
ধর্ম ও পরিবেশের সম্মিলন
সেমিনারে শুধু ধর্মীয় নেতারাই যোগ দেননি, নানা ক্ষেত্র থেকে আসা তরুণরাও যোগ দিয়েছেন৷ পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর সমাধান কী হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করতে৷ আলোচনা হয় পরিবেশবান্ধব উপায়ে আমরা কিভাবে জীবনাচরণে পরিবর্তন আনতে পারি, তা নিয়েও৷
অগাস্টিনা ইসকান্দার, পরিচালক, ওয়ার্ল্ড ক্লিনআপ ডে ইন্দোনেশিয়া
‘‘আমাদের কোনো বিকল্প গ্রহ নেই৷ ফলে পরিবেশ সুরক্ষায় আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷ এই দায়িত্ব পালনে সবাই আরো মানুষ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন দায়িত্ব পালনে তাদের ভূমিকার কথা জানাচ্ছেন, এটা আনন্দের সংবাদ৷’’
হায়ু প্রাবোয়ো, পরিবেশবান্ধব মসজিদের ইমাম
‘‘ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয়, প্রকৃতির সঙ্গে সমাঞ্জস্য় বজায় রেখে কিভাবে আমরা বাঁচতে পারি৷ ধর্মীয় শিক্ষায় সম্পদের অপচয় রোধের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত৷’’
আহমেদ শাব্বার, পরিচালক, গারবেজক্যান পাকিস্তান
‘‘মানুষের ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশও প্রয়োজন৷ শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের জন্য টেকসই পরিবেশের ওপরও জোর দিতে হবে৷’’
তৌফিক পাশা, পাকিস্তানের পরিবেশকর্মী
‘‘এই পৃথিবীকে আমরা মা বলে ডাকি৷ কিন্তু আমরা গ্রহটিকে মায়ের মতো করে পরিচর্যা করি না৷ মা অসুস্থ৷ আমরা যেভাবে নিজের মায়ের সেবা করি, সেভাবে পৃথিবীরও সেবা করা প্রয়োজন৷ কারণ মায়ের সন্তানের মতো, আমাদের ভবিষ্যতও পৃথিবীর প্রকৃতি, পরিবেশের ওপরই নির্ভরশীল৷ তাকে রক্ষা করলেই কেবল মানবজাতির ভবিষ্যত নিশ্চিত করা সম্ভব৷’’
আবু সায়েম, প্রভাষক, ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
‘‘ইসলাম বলছে আমরা পরিবেশগত ভারসাম্যেও ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল৷ আমরা যদি প্রকৃতির একটি অংশও ধ্বংস করি, তাতে আমাদের স্রষ্টাকেই অপমান করা হয়৷’’
দেবারতি গুহ, ডয়চে ভেলে এশিয়া বিভাগের প্রধান
‘‘যেকোনো সভ্যতা ও অঞ্চলের ধর্মীয় শিক্ষাতেই মূল গুরুত্ব দেয়া হয়েছে পরিবেশ সুরক্ষার ওপর৷ পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিয়ে কোরানের বেশ কয়েকটি আয়াতও রয়েছে৷ সত্যি বলতে সব ধর্মেই অনুসারীদের শিক্ষা দেয়া হয় ভালোবাসার সঙ্গে পৃথিবীর যত্ন নিতে, কারণ পৃথিবী ঈশ্বরের উপহার৷’’
মুজতাবা হামিদি, নির্বাহী পরিচালক, ওয়াহিদ ইন্সটিটিউট
‘‘আল্লাহ তার প্রতিনিধিদের আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন এবং আল্লাহর সৃষ্টি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো প্রকৃতিকে রক্ষা করা৷’’