1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু পরিবর্তনের কবলে বাংলাদেশের পাট

সাগর সরওয়ার ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৯

জলবায়ু পরিবর্তনের কবলে বাংলাদেশ৷ এই পরিস্থিতিকে সামনে রেখে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে থার্ড ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অফ কমিউনিটি বেসড এডাপশন টু ক্লাইমেট চেঞ্জ৷ বাংলাদেশ এই সম্মেলনের আয়োজক৷

https://p.dw.com/p/GxTn
পাটের তৈরি পরিবেশ বান্ধব ব্যাগ বিশ্বের অনেক দেশেই জনপ্রিয়৷ছবি: picture-alliance/ dpa

এই সম্মেলন চলবে ২৪ ফেব্রুয়ারি পযর্ন্ত৷ আশা করা হচ্ছে এই সম্মেলনে শতাধিক বিজ্ঞানী এবং পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা অংশ নেবেন৷ এবারের এই সম্মেলনে অন্যতম আলোচ্য বিষয় বাংলাদেশের কৃষি খাত৷

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের কৃষিখাত মারাত্মকভাবে বিপদের মুখোমুখি৷ বিশেষ করে অর্থকরী ফসল হিসাবে সেই সোনালী আশের কথা ধরা যাক৷ কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি শিকার হয়েছে বাংলাদেশের সোনালী সুতো বলে পরিচিত পাট৷ বাংলাদেশের জিডিপির চার থেকে পাঁচ শতাংশ আয় হয় পাট থেকে৷

Bildgalerie Zyklon Sidr in Bangladesch Bild 13
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের কৃষিখাত মারাত্মকভাবে বিপদের মুখোমুখি৷ছবি: DW

কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পাটের উৎপাদন কমে যাবার কারণে কৃষকরা এর চাষ বিষয়ে বিমুখ হয়ে পড়ছে৷ অন্যদিকে, যে সব এলাকায় আগে উৎপাদন ভালো হতো , সে সব এলাকায় তা হচ্ছে না৷

কমছে পাট চাষ

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পাট চাষের উপরে কেমন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বাংলাদেশের কৃষি তথ্য সার্ভিসের এক রিপোর্টে দেখা যায়, ৩৫ বছরে হিসাবের দিকে লক্ষ্য করলেই চিত্রটি স্পষ্ট হবে৷ ১৯৭২-৭৩ সাল থেকে ১৯৮০-৮১ সাল পর্যন্ত পাটের গড় চাষ জমি ছিল ১ হাজার ৭৭৯ একর ৷ সে সময়ে পটের গড় উৎপাদন ছিল ৯৫৩ টন৷ ১৯৯১-৮২ সাল পর্যন্ত গড় চাষ জমি ছিল ১ হাজার ৫৫৬ একর৷ উৎপাদন ছিল ৯৭৩ টন৷ কিন্তু এরপর থেকে চাষ এলাকা আর উৎপাদন দুই-ই কমতে থাকে ৷ ১৯৯০ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত মোট চাষের এলাকা ছিল ১ হাজার ২৭১ একর ৷ আর এ সময়ে উৎপাদন হয়েছে ৮৬৪ টন৷ তবে এর পরে – অর্থাৎ ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সর্বশেষ হিসাবে দেখা যায় উৎপাদন এলাকা কমে দাঁড়ায় ৮৬৪ একর এবং উৎপাদন এ সময়ে কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৯১২ টনে৷

আগে বাংলাদেশে দেশী জাতের পাট বেশী চাষ হতো৷ বর্তমানে হয় তোষা জাতের চাষ৷ আগে নিচু এলাকায় পাট চাষ হতো এখন স্থান পাল্টে চাষ করা হয় একটু উঁচু জায়গায়৷ বাংলাদেশে আগে পূর্বাঞ্চলের জমিতে বেশী ও ভালো পাট জন্মাতো৷ এখন অঞ্চলও পাল্টে গেছে৷ এখন দেশের অন্যান্য স্থানের চেয়ে বেশী চাষ হয় দেশের উত্তরাঞ্চলে৷

Motia chowdhury is the agriculture minister of Bangladesh Government.
বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী৷ছবি: Samir Kumar Dey

কৃষকদের উন্নয়নে বর্তমান সরকার ১৭ দফা

জানা গেছে, কৃষকদের উন্নয়নে বাংলাদেশের নতুন সরকার ১৭ দফা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে৷ এগুলো হচ্ছে – সারের মূল্যে ভর্তুকি প্রদান, ডিজেলের দাম কমানো, সেচ কাজে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, উচ্চ মান সম্পন্ন বীজের সরবরাহ বৃদ্ধি, মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় জৈব সার তৈরি ও ব্যবহার বৃদ্ধি, সমন্বিত ফসল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি, গবেষণা, সম্প্রসারণ কার্যক্রম জোরদার, সার ব্যবস্থাপনার গতি সঞ্চার, ইউরিয়া সার সাশ্রয়ের জন্য গুটি ইউরিয়া ব্যবহার কার্যক্রম গ্রহণ, যেসব এলাকায় সেচ সুবিধা নেই সেসব এলাকায় সেচ সম্প্রসারণ কার্যক্রম গ্রহণ, আশুগঞ্জ ও ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কুলিং ওয়াটার সেচ কাজ ব্যবহার প্রকল্প সম্প্রসারণ, অচল গভীর নলকূপ পুনর্বাসন প্রকল্প গ্রহণ, ফোর্স মোড নলকূপ প্রকল্প গ্রহণ, অঞ্চলভিত্তিক সেচ প্রকল্প গ্রহণ, খামারে সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রকল্প গ্রহণ, কৃষি বাজার স্থাপন, কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ এবং কৃষি প্রযুক্তি ও আধুনিক কলাকৌশল বৃদ্ধি৷ কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদকে এই তথ্য জানিয়েছেন৷