1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জঞ্জাল দিয়ে তৈরি গাড়ি

৭ এপ্রিল ২০২১

পরিবেশ সংরক্ষণ, জঞ্জালের পুনর্ব্যবহার এবং মোবিলিটি বা পরিবহণের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতমুখী সমাধানসূত্র – এক ঢিলে তিন পাখি যে মারা সম্ভব, নেদারল্যান্ডসের একদল ছাত্রছাত্রী তা দেখিয়ে দিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/3reqE
Niederlande TU Eindhoven | Elektroauto aus recyceltem Abfall
ছবি: Laurens van Putten/ANP/dpa/picture-alliance

নেদারল্যান্ডসের এইন্ডহোফেন শহরের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ‘লুকা' নামের এক প্রকল্পের আওতায় শুধু আবর্জনা দিয়ে গাড়ি তৈরি করেছেন৷ লিসা ফান এটেন সেই প্রকল্পের ম্যানেজার৷ তিনি বলেন, ‘‘গাড়ির কাঠামো ফ্ল্যাক্স অর্থাৎ শণ এবং রিসাইক্লিং করা পিইটি অর্থাৎ প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে তৈরি৷ আমরা আরও এমন উপকরণ ব্যবহার করি৷ বাসায় ফেলা দেওয়া রকমারি জঞ্জাল দিয়ে গাড়ির ভেতরের অংশের জন্য কিছু তৈরি করেছি৷''

ভবিষ্যতের জন্য তার সহজ বার্তা হলো, কোনো জঞ্জালই আসলে ‘ফেলনা' নয়৷ জঞ্জাল মানেই কাঁচামাল, যা নতুন পণ্যের জন্য রিসাইকেল করা সম্ভব৷ এই উদ্যোগের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে লিসা বলেন, ‘‘আমরা মাত্র ২২ জন ছাত্রছাত্রী৷ অনেকেই পার্ট-টাইম কাজ করেন৷ একেবারে শূন্য থেকে শুরু করতে হয়েছিল, সবকিছু ভেবে বার করতে হয়েছিল৷ কেউ তো আর আগে গাড়ি তৈরি করেনি!''

অভিজ্ঞতার অভাব আখেরে ভালোই হতে পারে৷ তখন মৌলিক বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া যায়৷ মাত্র ১৮ মাসেই ছাত্রছাত্রীরা অসাধ্যসাধন করে দেখালেন৷ জঞ্জাল দিয়ে আস্ত গাড়ি তৈরি হল৷

টেকসই ভাবনা তুলে ধরার লক্ষ্যে সেটা ছিল অসাধারণ এক বার্তা৷ সেই প্রক্রিয়ায় তাদের অনেক কিছু শিখতেও হয়েছিল৷ এইন্ডহোফেন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটেইস ফান ভেইক বলেন, লুকার ছয়টি ব্যাটারি রয়েছে৷ সেগুলি আসলে ছয়টি আলাদা মডিউল৷ ব্যাটারি শেষ হলেই বদলে ফেলা সম্ভব৷

সিটগুলি আলাদা করে এই গাড়ির জন্য তৈরি করা হয়েছে৷ নারকেলের তন্তু, ঘোড়ার লোম ও রিসাইকেল করা প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে সেগুলি ঢাকা দেওয়া হয়েছে৷ ফলে মোড়ক একই সঙ্গে  দেখতে সুন্দর এবং আরামদায়ক৷ দুই সিটের এই ইলেকট্রিক গাড়ির পেছনে দুটি ইলেকট্রিক ইঞ্জিন বসানো রয়েছে৷

দেখতে স্পোর্টস কারের মতো সুন্দর হলেও ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার গতির কারণে একই অনুভূতি পাওয়া সম্ভব নয়৷ তবে একবার চার্জ দিয়ে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত অতিক্রম করার ক্ষমতা রাখে এই গাড়ি৷ মাটেইস ফান ভেইক মনে করেন, ‘‘গাড়ি প্রস্তুতকারকসহ অন্যান্য কোম্পানিগুলি জঞ্জাল থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে ব্যবহার করবে বলে আমরা আশা রাখি৷ কারণ আমরা সত্যি দেখাতে চাই যে কত জিনিস দিয়ে সেটা করা সম্ভব৷ তবে এতে সময় লাগবে৷ আরও বেশি কোম্পানি কমপক্ষে গাড়ির ভিতরের অংশে অরগ্যানিক বা রিসাইকেল করা উপকরণ ব্যবহার করতে শুরু করছে৷ গাড়ির বডি বা বাইরের অংশেও যে সেটা সম্ভব, আমরা তা দেখাতে চাই৷ আশাকরি কয়েক বছর পর তা সম্ভব হবে৷''

এইন্ডহোফেন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সৃজনশীল ছাত্রছাত্রী এবং তাদের প্রোফেসরদের উদ্ভাবনী স্পৃহার কারণে বিখ্যাত৷ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অন্য একটি প্রকল্পে সৌরশক্তির মাধ্যমে ইলেকট্রোমোবিলিটি নিয়ে কাজ করছে৷ অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্ব সৌর চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় সেই প্রকল্প তুলে ধরা হয়েছিল৷ সেখানে নেদারল্যান্ডসের ছাত্রছাত্রীরা ‘সৌরশক্তিচালিত পারিবারিক গাড়ি বিভাগে স্বর্ণপদক লাভ করেছেন৷

ফ্রাংক লুকেইট/এসবি