1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জঙ্গি দমনে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৩ আগস্ট ২০১৯

বাংলাদেশে আফগান ফেরত ‘মুজাহিদরা' হরকাতুল জিহাদের মাধ্যমে জঙ্গি তৎপরতা শুরু করে৷ এরপর জেএমবি হয়ে নব্য জেএমবি৷ হোলি আর্টিজান হামলায় ছিলো নব্য জেএমবি৷ এর বাইরেও নান ধারা ও উপধারা রয়েছে জঙ্গিদের৷

https://p.dw.com/p/3OMtT
ছবি: picture-alliance/AP Photo

বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের(সিটিটিসি) প্রধান এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম৷

ডয়চে ভেলে: বাংলাদেশে জঙ্গিদের সর্বশেষ অবস্থা কী?

মনিরুল ইসলাম: বাংলাদেশে হোলি আর্টিজান হামলা ছিলো আই ওপেনার৷ এরপর আমাদের অভিযান ছিলো কৌশলগত৷ একদিকে আমরা অব্যাহত জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালিয়েছি৷ অন্যদিকে জঙ্গিবিরোধী প্রচার যা সামাজিক, রাজনৈতিক এবং তৃণমূল পর্যায় থেকে হয়েছে৷ ফলে জঙ্গিবাদ ও জঙ্গিদের তৎপরতা দমন সম্ভব হয়েছে৷ আমরা গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে হোলি আর্টিজানের মত আরো অনেক হামলার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে পেরেছি৷ কিন্তু ভ্রান্ত মতাদর্শকে আমরা পুরোপুরি দমন করতে পারিনি৷ আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় পর্যায় মিলিয়ে সাইবার স্পেসে জঙ্গিদের বিচ্ছিন্ন তৎপরতা লক্ষ্য করছি৷ তারা কিছু ঘটনা ঘটানোরও চেষ্টা করছে৷ তবে হোলি আর্টিজানের সময় তাদের যে সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে উঠেছিল তা আমরা ভেঙে দিতে পেরেছি৷

জঙ্গি নেতা মেজর জিয়া তো এখনো গ্রেপ্তার হয়নি৷ সে কি কোনো থ্রেট হতে পারে?

আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তাতে সে সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় নেই৷ সক্রিয় থাকলে আমাদের নেটওয়ার্কে তা জানতে পারতাম৷ তারপরও আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই৷ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে আমাদের জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালিয়ে যেতে হবে৷

মনিরুল ইসলাম

জঙ্গিবাদের নতুন কোনো ধারা আপনারা লক্ষ্য করছেন কিনা?

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নিতে জঙ্গিরাও কৌশল পরিবর্তন করে৷ ফিজিক্যাল ওয়ার্কে দুর্বল হওয়ায় এখন তারা সাইবার স্পেসটাকে পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করছে৷ সেখানে সাইকোলজিক্যাল ও আইডিওলজিক্যাল ওয়ার্কটা তারা স্বার্থকভাবেই চালাচ্ছে৷ তারা অডিও, ভিডিও, ইমেইল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ভীতি ছড়িয়ে দিচ্ছে৷ তাদের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙ্গে দেয়ার পর তারা পুরনো কাঠামোতে না ফিরে ছোট ছোট সেলের মাধ্যমে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে৷

বাংলাদেশি জঙ্গিদের আইএস সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা?

আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ থেকে ২০ জনের মত সিরিয়া বা অন্যদেশে গিয়ে আইএস-এর হয়ে কাজ করেছে৷ সিরিয়ায় আইএস-এর পতনের পর একজন দেশে ফেরত এসেছে এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ আরো একজন ফেরত এসে গ্রেপ্তার হয়েছে৷ তবে সে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিক হলেও বাংলাদেশ থেকে সিরিয়া যায়নি৷ তার জন্ম সৌদি আরবে৷ সে সেখান থেকে গিয়েছিল৷

জঙ্গিবিরোধী লড়াইয়ে ঝুঁকি কতটা? আপনাদের কতটা আধুনিকীকরণ হয়েছে?

জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান সব সময়ই ঝুঁকির৷ কারণ যারা অভিযান পরিচালনা করেন তাদের হতাহত করা থাকে জঙ্গিদের লক্ষ্য৷ তারা বেপরোয়া থাকে৷ তবে এটুকু আমি আত্মবিশ্বাসের সাথেই বলতে পারি আমাদের যেসব বিশেষায়িত টিম আছে, সোয়াটের নেতৃত্বে হোলি আর্টিজানের পর ২২টি অভিযান হয়েছে৷ এইসব অভিযানে ওই অর্থে আমাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি৷ আমরা তাদের নিরস্ত্র করতে পেরেছি৷ আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে পেরেছি৷

আপনাদের অভিযানে এপর্যন্ত কতজন নিহত হয়েছেন?

অভিযানের সময় কখনো কখনো এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে আইদার টু কিল অর টুবি কিলড৷ ফলে কোনো অপশন থাকেনা৷ আবার জঙ্গিরা গ্রেপ্তার এড়াতে নিজেরাও আত্মঘাতী হয়৷ শুধু আমাদের অভিযান নয়, সব অভিযান মিলিয়ে এই ধরনের নিহতের সংখ্যা প্রায় একশ৷

জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কারণে নাগরিক অধিকার খর্ব হয় কিনা?

আসলে অভিযানের সময় নাগরিকদের নিরাপত্তার কারণেই আমাদের কিছু কাজ করতে হয়৷ চলাচল বন্ধ করে দিতে হয়৷ গ্যাস, বিদ্যুৎ বা টেলিফোনের মত সেবা সাময়িক বন্ধ রাখতে হয়৷ তবে আমরা দেখেছি নাগরিকরাই স্বতস্ফূর্তভাবে একাজে আমাদের সহায়তা করেন৷ নাগরিকদের সহায়তা ছাড়া জঙ্গিবাদ দমন সম্ভব নয়৷

কারা জঙ্গিবাদে জড়ায়?

বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সের তরুনরা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে৷ আগে নিম্নবিত্ত বা মাদ্রাসায় যারা পড়ে তারা জঙ্গিবাদে জড়ায় এমন একটি ধারণা ছিলো৷ কিন্তু আল-কায়েদা এবং আইএস-এর উত্থানে দেখা গেছে তথ্য প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় সব শ্রেণি ও সব ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকেই জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছে৷ এর মূল কারণ হতাশা ও ভ্রান্ত চিন্তা৷ হতাশা ও ভ্রান্তচিন্তার কারণ একেক জনের জন্য একেক রকম৷

জঙ্গিরা কি চায়, তাদের উদ্দেশ্য কী?

তারা আসলে কাপুরুষ৷ তারা নানা হতাশায় জীবন থেকে পালাতে চায়৷ তারা চায় সহজে শর্টকাট পথে বেহেস্তে যেতে৷ আবার অনেকে জানেই না আসলে তারা কি চায়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য