ছোটদের জন্য ১০টি ক্ল্যাসিক জার্মান বই
ম্যাক্স আর মরিৎস থেকে শুরু করে বোবো ডরমাউজ অবধি জার্মান ভাষায় লেখা বহু ছোটদের বই সারা বিশ্বে নাম করেছে৷ সেরকম ১০টি ছোটদের ‘ক্ল্যাসিক’ নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছোট্ট ছুছুন্দরী
জার্মান ভাষায় তার নাম ‘মাউলভুর্ফ’, ইংরেজিতে বলে ‘মোল’৷ ভল্ফ অ্যারব্রুখ-এর ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত বইটির শীর্ষক ছিল: ‘যে ছোট্ট ছুছুন্দরী নিজের চরকায় তেল দিতে জানত’৷ বেচারা ছুছুন্দরীর মাথায় গু লেগে গেছে, এই হলো তার সমস্যা – বড়রা নাক কুঁচকোলেও, কাহিনিটা ছোটদের কাছে খুবই মজার৷ এমনকি অ্যারব্রুখ বইটার জন্য ২০১৭ সালে প্রথম জার্মান লেখক হিসেবে অ্যাস্ট্রিড লিন্ডগ্রেন পুরস্কার লাভ করেন৷
ম্যাক্স আর মরিৎস
উইলহেল্ম বুশের লিখিত ও চিত্রিত ‘ছেলেদের সাতটি দুষ্টুমি’ ১৮৬৫ সালে প্রকাশিত হয় এবং আজ প্রায় প্রবচনের পর্যায়ে উঠে গেছে৷ দু’টি পাজি ছেলের নানা ধরনের দুষ্টুমির গল্পগুলো আবার গদ্যে নয়, পদ্যে বলা হয়েছে৷
খরগোশের স্কুল
আলব্যার্ট সিক্সটাস-এর ‘ডি হেজশেনশুলে’ বইটি প্রকাশিত হয় ১৯২৪ সালে, অলঙ্করণ করেছিলেন ফ্রিৎস কখ-গোটা৷ এটাও বস্তুত ছড়ার বই৷ খরগোশ ভাই-বোন হান্স আর গ্রেটে – অবশ্যই গ্রিম ভাইদের প্রখ্যাত রূপকথা হান্সেল ও গ্রেটেল থেকে এদের নাম নেওয়া হয়েছে – এরা স্কুলে যেত এমন একটা সময়ে, যখন মাস্টাররা কড়া আর শেয়ালরা ধূর্ত ছিল৷
পুতুলনাচে গণ্ডগোল
নিল্স ভ্যার্নারের ১৯৫৮ সালের বইটির অলংকরণ করেছিলেন হাইঞ্জ বেহলিং৷ কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানিতে বইটি খুবই জনপ্রিয় ছিল, এমনকি তার উপর ভিত্তি করে একটি ফিল্মও তৈরি করা হয়েছিল৷ আজও জার্মানির পূর্বাঞ্চলে বইটির জনপ্রিয়তা অম্লান৷ কাহিনি হলো: ঠাম্মার জন্মদিনের পার্টির জন্য তৈরি করা প্যানকেকগুলো চুরি করেছে কোনো এক খুদে শয়তান৷ তারপর তাকে সে কি তাড়া, সে কি তাড়া...!
লেখার বদলে আঁকা
আলি মিটগুচ-কে তথাকথিত ‘লুকনো ছবির বই’-এর জনক বলে গণ্য করা হয়৷ তাঁর প্রথম বই বেরোয় ১৯৬৮ সালে, নাম ছিল ‘রুন্ডহেয়ারুম ইন মাইনার স্টাট’ বা ‘আমার শহরের চারপাশে’৷ বইটি তার পরের বছর জার্মান কিশোর সাহিত্য পুরস্কার পায়৷ সেযাবৎ মিটগুচের আরো বই বেরিয়েছে এবং শুধু জার্মানিতেই নয়৷ তাঁর বইতে কথা থাকে না বটে, কিন্তু থাকে ঠিক সেই পরিমাণ হাসি৷
তিন বন্ধু
হেল্মে হাইনে-র ‘ফ্লেন্ডস’ বইটি বেরোয় ১৯৮২ সালে: একটি শুয়োর, একটি মুর্গি ও এক ইঁদুরের অ্যাডভেঞ্চারের কাহিনি৷ আদতে বার্লিনের বাসিন্দা হাইনে বর্তমানে নিউজিল্যান্ডে বাস করেন৷ তাঁর বই নানা ভাষায় অনুবাদ হয়েছে৷ ‘ফ্রেন্ডস’ বইটিকে ভিত্তি করে জার্মান ভাষার একটি কার্টুন ছবি বেরোয় ২০০৯ সালে৷
বোবো ডরমাউজ
বোবো নামের খুদে ডরমাউজ ইঁদুরকে নিয়ে লেখা বইটিতে চিড়িয়াখানা, খেলার জায়গা অথবা খিড়কির বাগানে রোজ যা ঘটে, তা নিয়ে সহজ-সরল করে আঁকা ছবিগুলোর সাথে কিছু কিছু লেখা যোগ করা হয়েছে৷ সুইস লেখক মার্কুস অস্ট্যারভাল্ডার-এর বইটি বেরোয় ১৯৮৪ সালে; সেযাবৎ বোবো ডরমাউজকে নিয়ে নানা কার্টুন সিরিজ তৈরি হয়েছে৷
রংধনু মাছ
সুইশ লেখক মার্কুস ফিস্টার-এর রংচঙে ছবির বইটি বেরোয় ১৯৯২ সালে৷ নানারঙের আঁশযুক্ত মাছটির কাহিনির উপজীব্য হলো সব কিছু পরস্পরের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া, বন্ধুত্ব ও নিজেকে আবিষ্কার করা৷ গল্পটা বহু ভাষায় অনুবাদ হয়েছে ও একটি মিউজিক্যাল ও কার্টুন সিরিজে পরিণত করা হয়েছে৷ বাথটবে নিয়ে খেলা করার জন্যও প্লাস্টিকের রংধনু মাছ কিনতে পাওয়া যায়৷
‘নেক্সট প্লিজ’
ডাক্তারের চেম্বারে গেলে রোগীর যখন ডাক আসে, তখন তার হৃৎকম্প নিয়ে লেখা এই কবিতাটির রচয়িতা অ্যার্ন্সট ইয়ান্ডল৷ কবিতাটি প্রকাশিত হয় ১৯৭০ সালে৷ ১৯৯৭ সালে নর্মান ইয়ুঙ্গে কবিতাটির উপর ভিত্তি করে লেখা একটি ছোটদের বই-এর অলংকরণ করেন ও বইটি জার্মান কিশোর সাহিত্য পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়৷
‘গ্রাফেলো’
ব্রিটিশ লেখক জুলিয়া ডোনাল্ডসন আর জার্মান অলংকরণশিল্পী আক্সেল শেফলার মিলে এই ক্ল্যাসিকটি সৃষ্টি করেন ১৯৯৯ সালে৷ তার জার্মান সংস্করণ প্রকাশিত হয় ২০০২ সালে৷ কাহিনি হলো: একটি ইঁদুর অন্যান্য জীবজন্তুদের তার কাল্পনিক বন্ধুর কথা বলে ভয় দেখাচ্ছে৷ পরে দেখা গেল, সেই ভীতিকর গ্রাফেলো সত্যিই আছে! এই কাহিনির ভিত্তিতে তৈরি ২০১১ সালের একটি কার্টুন ছবি অস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল৷