1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ছেলেরা ভালোবাসার নামে লৌকিকতা করে'

১৪ জানুয়ারি ২০১৬

আচ্ছা বিয়ে কি একটা খেলা? বাংলাদেশে বিবাহবিচ্ছেদ কেন বাড়ছে? এর জন্য কি নারীরাই দায়ী? হ্যাঁ, আমাদের ফেসবুক পাতায় ‘ডিভোর্স'-এর জন্য অনেকেই নারীদের দায়ী করেছেন৷ তবে এর যুক্তিসঙ্গত পাল্টা মন্তব্যও রয়েছে৷

https://p.dw.com/p/1Hde0
ছবি: www.conrady.net

শুধুমাত্র নারীর কারণে কখনো তালাক বা ‘ডিভোর্স' হতে পারে না৷ আর এ কথাটাই বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু নুরুন নাহার বকুল৷

বকুলের ভাষায়, ‘‘নারীর কারণে ডিভোর্স হয় তখন, যখন পুরুষের হাজারো নির্যাতনের স্বীকার হয়ে সে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে বা একবুক যন্ত্রণা আর সে বহন করতে পারে না৷ তখনই নারী হয়ে ওঠে বেহায়া, নির্লজ্জ, চরিত্রহীন৷ তাকে নিয়ে আর সংসার করা যায় না৷ এমনকি তখন নারীই বাধ্য হয় ডিভোর্স দিতে৷ এ হলো আমাদের সমাজের অধিকাংশ রূপ৷ তবে আমি ‘সেলুট' করি সেসব পুরুষদের, যাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে নারীও ‘মানুষ'৷ কন্যা-জায়া-জননীর প্রতি যাদের মমত্ববোধ রয়েছে, সহযোগিতা ও ভালোবাসা আছে৷''

বন্ধু মোহাম্মদ সুমন অবশ্য একেবারে নিশ্চিত যে নারীর কারণেই ডিভোর্স হয়৷ তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘আমার ‘পার্সোনাল এক্সপেরিয়েন্স' থেকে বলছি, সম্পূর্ণ নারীর কারণে ডিভোর্স হয়৷''

রকিবুল আওয়াল তৃষ্ণার পাল্টা প্রশ্ন, সব ত্যাগস্বীকার কেন শুধু মেয়েরা করবে? তাঁর মতে, পুরুষরাও যদি কিছুটা ত্যাগস্বীকার করে, তাহলে তালাক আটকানো সম্ভব৷ তাঁর কথায়, ‘‘ছেলেরা ভালোবাসার নামে লৌকিকতা করে৷''

ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু দিপ্তীর মতও প্রায় রফিকুল আওয়ালের মতোই৷ অবশ্য শুধু তিনি-ই নন, মঞ্জুরুল হাসান, ইসরাত এমা, সাব্বির তালুকদার এবং অনাথবন্ধু দেবানাথেরও ঐ একই মত৷

তবে মোহাম্মদ নূরের পুরোপুরি ভিন্ন মত৷ অর্থাৎ ডিভোর্সের কারণ হিসেবে তিনি জি বাংলা, স্টার প্লাসের মতো টিভি চ্যানেল এবং বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাবকে দায়ী করছেন৷ তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিবাহবিচ্ছেদ বাড়ার তো কথাই৷ সব খাইলো আমাদের অতি আধুনিকতা৷ জি বাংলা, স্টার প্লাস ইত্যাদির মতো টিভি চ্যানেলগুলো ছাড়া বিদেশের অপসংস্কৃতি তো আছেই৷ বিশ্বাস যেখানে ক্ষীণ, ভালোবাসা যেখানে নামেমাত্র, কাজে নয়৷''

‘সমস্যা নারীদেরই বেশি' – এই মন্তব্য মোহাম্মদ সুমনের৷ তাঁর মতে, শতকরা ৯৮ ভাগ ক্ষেত্রেই নারীদের কারণে ডিভোর্স হয়৷

মোহাম্মদ সুমনের মন্তব্যকে একদমই সমর্থন করেন না পাঠক অশিকা জ্যোতি৷ পরিসংখ্যান কী বলছে সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে, পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন কামনা করে তিনি বলছেন, ‘‘ভাই, আপনারা শুধু নারীকেই দোষারোপ করছেন৷ পরিসংখ্যান কিন্তু এটাও বলে যে ৯০ শতাংশের বেশি নারী দাম্পত্য জীবনে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন৷ তফাতটা এই যে, এখন তারা তা মুখ বুজে সহ্য করছেন না৷ প্রতিবাদ করছেন কারণ, আজকের নারী অনেক বেশি যোগ্যতা রাখে৷ তারা সচেতন, তারা শিক্ষিত৷ ফলাফল – বিচ্ছেদের আবেদন৷ সুতরাং, এই সমস্যা সমাধানে আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজের পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন কামনা করি৷''

‘‘নারীরা ধর্মের মূল্যবোধ মানছে না৷ স্বামীর ‘কেয়ার' তাই তাদের কাছে নির্যাতন মনে হয়৷ তার উপর আছে ভারতীয় সিরিয়ালের প্রভাব৷'' বিবাহবিচ্ছেদ বেড়ে যাওয়ায় এই মন্তব্য মোবাস্সার হোসেনের৷

তৌদিদ খোকনও মেয়েদেরই দায়ী করেছেন তালাকের কারণ হিসেবে৷ শুধু তাই নয়, তিনি এর পেছনে কিছু অবাস্তব যুক্তিও দেখিয়েছেন৷ তবে জুহায়ের ইসরাক তৌহিদ খোকনের মন্তব্যের প্রতিবাদ করে লিখেছেন, ‘‘শুধু মেয়েদের দোষারোপ করা ঠিক নয়৷''

নারীদের শিক্ষার বিপক্ষে পাঠক বাদশাহ খান নকিব৷ তিনি মনে করেন, ‘‘নারীদের যত শিক্ষিত করে তুলবেন, নারীরা ততই স্বাধীন হতে চাইবে৷ আর ততই বিবাহবিচ্ছেদ বাড়বে৷''

আবু বকর সিদ্দিকীর মতে ডিভোর্স হলো ‘‘উদ্দাম জীবনের ফল৷''

বিবাহবিচ্ছেদের কারণ হিসেবে ছেলেদের দায়ী করা মন্তব্যগুলো পড়ে সাফিনা ফেরদৌস মেঘলার পাল্টা মন্তব্য, ‘‘হাস্যকর মন্তব্যগুলো পড়ছি আর খুব আশ্চর্য হচ্ছি এই ভেবে যে, বর্তমান সমাজেও এই ভ্রান্ত ধারণা রয়ে গেছে যে নারীরা সংসার ভাঙে৷ নারীরা যদি সংসার ভাঙার কাজ করে, তাহলে সংসার বলে বর্তমানে আর কোনো শব্দই থাকতো না৷''

সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান