ছুরিকাঘাতে মেয়রের মৃত্যু, পোল্যান্ডে শোক, প্রতিবাদ
১৫ জানুয়ারি ২০১৯পোল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী লুকাস সুমোস্কি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা মৃত্যুর কাছে পরাজিত হয়েছি৷ চিকিৎসকরা পাঁচঘণ্টা অস্ত্রোপচার করেও তাঁকে বাঁচাতে পারেনি৷ ছুরিকাঘাতের কারণে পাভেলের হৃদপিণ্ড ও পেটে গভীর ক্ষত হয়েছিল৷''
রবিবার ছিল গ্রেট অর্কেস্ট্রা অব ক্রিসমাস চ্যারিটির বাৎসরিক আয়োজনের শেষ দিন৷ ‘লাইটস টু হ্যাভেন' শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পোল্যান্ডের স্বাস্থ্যসুরক্ষা ব্যবস্থার জন্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি কিনতে অর্থ সংগ্রহ করা হয় ২৭ বছর ধরে৷ ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চে উঠে আডামোভিচকে ছুরিকাঘাত করে এক দুর্বৃত্ত৷ তাঁর মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার পরপরই গ্রেট অর্কেস্ট্রা অব ক্রিসমাস চ্যারিটির প্রধান স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন৷ উল্লেখ্য, এবার গ্রেট অর্কেস্ট্রা চ্যারিটি গত ২৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে৷ তবে উদ্যোগটি নানা মহলে বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছে৷
হামলার শিকার হওয়ার কিছুক্ষণ আগে মেয়র পাভেল আডামোভিচ মঞ্চ থেকে তোলা একটি ছবি ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন৷ সেই আয়োজনে উপস্থিত দর্শকরা উজ্জ্বল সাদা রঙের আলো ধরে রেখেছেন এমন দৃশ্য ধারণ করেছিলেন মেয়র৷
গ্রেট অর্কেস্ট্রা অব ক্রিসমাস চ্যারিটি আয়োজনের টেলিভিশন ফুটেজ থেকে দেখা যায়, এক লোক মঞ্চে ‘আডামোভিচ মারা গেছে' চিৎকার করে তাঁর দিকে ছুটে গিয়ে ছুরিকাঘাত করেন৷ মেয়র পাভেল মঞ্চে লুটিয়ে পড়েন৷
গ্রেপ্তার হওয়ার আগে মঞ্চে সেই তরুণ দাবি করেন, মেয়রের সাবেক দল তাকে কারাগারে পাঠিয়েছিল৷ সেখানে তাকে অনেক অত্যাচার করা হয়েছিল বলেও দাবি তার৷ স্থানীয় পুলিশ জানায়, হামলাকারীর নাম স্টেফান, বয়স ২৭৷ তার পুরো নাম পুলিশ প্রকাশ করেনি৷ মিডিয়াকর্মীর ছদ্মবেশে সে মঞ্চে উঠেছিল৷
পুলিশ জানায়, স্টেফানের বিরুদ্ধে অতীত অপরাধের রেকর্ড রয়েছে৷ ব্যাংক ডাকাতির অপরাধে দীর্ঘ সময় সে জেল খেটেছে৷ পুলিশ আরো জানায়, ধারণা করা হচ্ছে, সে একজন মানসিক রোগী৷ কারণ, কারাগারে থাকাকালীন বেশ কয়েকবার সিজোফ্রেনিয়া সংক্রান্ত জটিলতায় সে হাসপাতালে গিয়েছে৷
এদিকে মেয়র পাভেলের মৃত্যুর পরপরই সোমবার রাতে এক টুইটার বার্তায় পুলিশ জানিয়েছে, সেদিনই ওয়ারশ'র এক ৭২ বছর বয়্সি বৃ্দ্ধকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ সেই বৃদ্ধ আরেকটি দাতব্য সংস্থায় ফোন করে এরপর প্রেসিডেন্ট দুদাকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেন৷
এদিকে মেয়রের মৃত্যুর খবর জানাজানির পরই রাজপথে মোমবাতি ও ফুল হাতে নেমে আসে গেডানস্কবাসী৷ তাঁদের অনেকের হাতেই মেয়র পাভেলের ছবি দেখা যায়৷ উদারপন্থি এই মেয়র গত ২০ বছর ধরে গেডানস্ক শহরের মেয়রের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন৷ রাজনীতিবিদ হিসেবে তুমুল জনপ্রিয় ছিলেন তিনি৷
এফএ/এসিবি (এপি, এএফপি)