1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছুটিতে বেড়ানোর দশটি গন্তব্য

মোস্তাফিজুর রহমান
১৪ জানুয়ারি ২০১৮

আয়তনে ছোট হলেও বাংলাদেশে ভ্রমণের জায়গা অনেক৷ সাগর, পাহাড়, স্থাপত্য– সবরকম পর্যটন আকর্ষণই আছে বাংলাদেশে৷ এরকমই জনপ্রিয় দশটি ভ্রমণ গন্তব্য তুলে ধরা হলো এখানে৷

https://p.dw.com/p/2qkis
ছবি: DW/M. Mamun

সেন্টমার্টিন দ্বীপ
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন৷ স্থানীয়ভাবে জায়গাটি নারিকেল জিঞ্জিরা নামেও পরিচিত৷  টেকনাফ থেকে ৩৫ কিলোমিটার সমুদ্রগর্ভে এই দ্বীপের অবস্থান৷ প্রায় ১৬ বর্গকিলোমিটার দীর্ঘ এ দ্বীপের আকর্ষণ সৈকত জুড়ে সারিসারি নারিকেল গাছ, বেলাভূমিতে প্রবাল পাথর, দিগন্তজুড়ে সমুদ্রের নীল জলরাশির মনমাতানো সৌন্দর্য৷ ছোট্ট এই দ্বীপটিতে বৈচিত্র্য ঠাসা৷ উত্তর থেকে দক্ষিণ আর পুর্ব থেকে পশ্চিম, সব জায়গাতেই সৌন্দর্যের পসরা৷ যেমন, উত্তরের সৈকতে জোয়ারভাটায় জেলেদের মাছ ধরা, পশ্চিমের সৈকতে সারিসারি নারিকেল বাগান৷ পূর্ব আর দক্ষিণ পাশের সৈকতজুড়ে মৃত প্রবালের সঙ্গে নীলসমুদ্র৷ এত নীল পানির সমুদ্র বাংলাদেশের আর কোথাও নেই৷

সেন্টমার্টিনের আরেক আকর্ষণ ছেঁড়াদ্বীপ৷ মূল দ্বীপের একেবারে দক্ষিণে অবস্থিত৷ একসময় মূল দ্বীপ থেকে এটি বিচ্ছিন্ন ছিল, এখন প্রায় মিলে গেছে৷ তবে জোয়ারের সময় এখনো এর সংযোগস্থল ডুবে যায়৷

টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে নিয়ে যাওয়ার জন্য চালু আছে বেশকিছু সমুদ্রগামী জাহাজ৷

কক্সবাজার
পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার৷ এর সঙ্গে নতুন যোগ হয়েছে দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভও৷ ভ্রমণে তাই কক্সবাজার এখন আরো বেশি উপভোগ্য৷

কক্সবাজারের প্রধান আকর্ষণ সমুদ্র সৈকত৷ শহর থেকে শুরু করে মেরিন ড্রাইভ ধরে টেকনাফ পর্যন্ত এখানে বেশ কয়েকটি সুন্দর সুন্দর সৈকত আছে৷ কক্সবাজার শহরের লাবনী ও সুগন্ধা সৈকত ছাড়াও মেরিন ড্রাইভে আছে হিমছড়ি, ইনানী, শামলাপুর, হাজামপাড়া আর টেকনাফ৷ এর একেকটি সৈকত যেন বৈচিত্র্যের ভান্ডার৷  

সমুদ্র সৈকত ছাড়াও কক্সবাজার শহরের পার্শ্ববর্তী থানা রামুতে আছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বেশ কিছু কেয়াং ও প্যাগোডা৷ আর চকোরিয়ার ডুলাহাজরায় আছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক৷

ঢাকা থেকে সড়ক ও আকাশপথে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়া যায়৷

কুতুবদিয়া
কক্সবাজার জেলার একটি দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া৷ প্রায় ২১৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ছোট্ট এই দ্বীপে আছে নানান পর্যটন আকর্ষণ৷ নির্জন সমুদ্র সৈকত, একমাত্র বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র, প্রাচীন বাতিঘর, কুতুব আউলিয়ার মাজারসহ দেখার মতো অনেক কিছুই আছে এ দ্বীপে৷

চকোরিয়ার মাগনামা ঘাট থেকে কুতুবদিয়া চ্যানেল পাড়ি দিয়েই পৌঁছতে হয় দ্বীপে৷ এখানকার সমুদ্র সৈকত উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ৷ বেশিরভাগ এলাকাই বেশ নির্জন৷ সৈকতের তীরে অনেক জায়গাতেই আছে ঝাউগাছের বাগান৷ বাংলাদেশের একমাত্র বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও কুতুবদিয়ায়৷ এক হাজার কিলোওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তের আলী আকবরের ডেল এলাকায়৷

আর দ্বীপের উত্তর প্রান্তে আছে কুতুবদিয়ার প্রাচীন বাতিঘর৷ সমুদ্রপথে চলাচলকারী জাহাজের নাবিকদের পথ দেখাতে বহুকাল আগে কুতুবদিয়ায় তৈরি করা হয়েছিল একটি বাতিঘর৷ পুরানো সেই বাতিঘর সমুদ্রে বিলীন হয়েছে বহু আগে৷ তবে ভাটার সময় সেই বাতিঘরের ধ্বংসাবশেষ কখনো কখনো জেগে উঠতে দেখা যায়৷

দ্বীপের মাঝামাঝি ধুরং এলাকায় কুতুব আউলিয়ার দরবার শরীফ৷ এই দরবারের প্রতিষ্ঠাতা শাহ আব্দুল মালেক আল কুতুবী জন্মস্থান এটি৷ জনশ্রুতি আছে দ্বীপটির নামকরণ হয়েছে কুতুব আউলিয়ার পূর্বপুরুষদের নামানুসারেই৷ বর্তমানে কুতুব শরীফ দরবারের দায়িত্বে আছেন তাঁরই পুত্র শাহজাদা শেখ ফরিদ৷ এছাড়া কুতুবদিয়ার সর্বত্রই লবণ চাষ হয়৷ প্রাকৃতিক উপায়ে লবণ উৎপাদনের নানান কৌশল দেখা যাবে এখানে৷

বান্দরবান
তিন পার্বত্য জেলার অন্যতম বান্দরবান৷ এখানে রয়েছে বেড়ানোর মতো সুন্দর সব জায়গা৷
বান্দরবান শহরের এক পাশেই আছে বোমাং রাজার বাড়ি৷ বোমাং রাজার উত্তরসূরীরা এখন বসবাস করেন এ বাড়িতে৷ আর বান্দরবান শহরের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে সাঙ্গু নদী৷

বান্দরবান শহর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে বান্দরবান চন্দ্রঘোনা সড়কের পুল পাড়ায় জাদির পাহাড়ে আছে স্বর্ণ মন্দির৷ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের এ মন্দিরের নাম বুদ্ধধাতু জাদি৷ শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের পাশে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স৷ প্রকৃতির কোলে এখানে আছে ঝুলন্ত সেতু, চিড়িয়াখানা আর হ্রদ৷

শহরের কাছে সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের নাম নীলাচল৷ শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে টাইগার পাড়ায় এ পাহাড়টির উচ্চতা প্রায় এক হাজার ফুট৷ এখানে দাঁড়িয়ে বান্দরবান শহরসহ দূর দূরান্তের অনেক জায়গার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়৷

বান্দরবান শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে শৈলপ্রপাত৷ এখানে আছে একটি ঝরনা৷ শৈল প্রপাতের পাশেই স্থানীয় আদিবাসীদের ভ্রাম্যমাণ বাজারটি দেখার মতো৷ তাঁদের তৈরি চাদর আর পাহাড়ি ফলমূল পাওয়া যায় এ বাজারে৷ এখানে আরো আছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বম সম্প্রদায়ের একটি গ্রামও৷

শৈলপ্রপাত থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে রয়েছে চিম্বুক পাহাড়৷ এ পথে বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার দূরে অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র নীলগিরি৷ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ২শ' ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এ পর্যটন কেন্দ্র থেকে চারপাশের দৃশ্য ছবির মতো৷ 

রাঙ্গামাটি
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা পার্বত্য চট্টগ্রামের আরেকটি জেলা রাঙ্গামাটি৷ এখানকার জেলা শহরে আছে উপজাতীয় জাদুঘর৷ জেলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি আর ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা পেতে এ জাদুঘরের জুড়ি নেই৷ এর কাছেই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান রাজবনবিহার৷ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নানান আচার অনুষ্ঠান নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয় এখানে৷ রাজবনবিহারের পাশেই কাপ্তাই লেকের ছোট্ট একটি দীপ জুড়ে রয়েছে চাকমা রাজার বাড়ি৷

রাঙ্গামাটি শহরের শেষ প্রান্তে কাপ্তাই হ্রদের তীরে খুব ব্যস্ত দুটি জায়গা রিজার্ভ বাজার আর তবলছড়ি বাজার৷ দুটি বাজারেই মূলত আদিবাসীদের আনাগোনা বেশি৷ তবলছড়ি ছাড়িয়ে আরও প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে রয়েছে পর্যটন কমপ্লেক্স৷ বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল ছাড়াও এর ভেতরে আছে রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতু৷

রিজার্ভ বাজার থেকে নৌকায় চড়ে যাওয়া যায় শুভলং বাজার৷ বাজারের আগেই  বাঁ দিকের পাহাড়ে আছে শুভলং ঝরনা৷ তবে শীতে এ ঝরনায় পানি থাকে না৷ শুভলং যেতে পথে কাপ্তাই হ্রদের মাঝের ছোট দ্বীপজুড়ে আছে টুক টুক ইকো ভিলেজ ও পেদা টিংটিং৷ এখানকার রেস্তোরাঁয় মেলে হরেক পদের পাহাড়ি খাবার৷

রাঙ্গামাটির সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রটি হলো সাজেক৷ জায়গাটির অবস্থান রাঙামাটি জেলায় হলেও যাতায়াত সুবিধা পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি থেকে৷ সেখান থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার৷ বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণগন্তব্যগুলোর একটি সাজেক৷ রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় জায়গাটির অবস্থান৷ সাজেকের পাহাড়চূড়া থেকে পুরো রাঙামাটির চারপাশ দৃষ্টিগোচর হয় বলে একে রাঙামাটির ছাদও বলেন অনেকে৷

খাগড়াছড়ি
পার্বত্য চট্টগ্রামের আরেকটি জেলা খাগড়াছড়ি৷ এখানেও ভ্রমণের অনেক জায়গা রয়েছে৷ চট্টগ্রাম থেকে এই জেলা শহরের দূরত্ব প্রায় ১২২ কিলোমিটার৷ চারিদিকে পাহাড়ের মাঝে অনেকটা সমতলে এই শহর৷  

খাগড়াছড়ির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভ্রমণের জায়গা হলো আলুটিলা পাহাড়৷ জেলা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পশ্চিমে মহাসড়কের পাশেই রয়েছে এই পাহাড়৷ প্রায় এক হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়ালে পুরো খাগড়াছড়ি শহরকে পাখির চোখে দেখা যায়৷ আলুটিলা পাহাড়ের আরেকটি আকর্ষণীয় জায়গা হলো এর নিচের গুহাপথ৷ পাহাড়ের নীচে গুহার ভেতর দিয়ে বয়ে চলছে শীতল জলধারা৷

আলুটিলা পাহাড় থেকে তিন কিলোমিটার দূরে রিসাং ঝরনাটিও বেশ সুন্দর৷ আর শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে নুনছড়ির পাহাড় চূড়ায় দেবতার পুকুরও মনোরাম জায়গা৷ 

সুন্দরবন
প্রায় দশ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনের ছয় হাজার বর্গকিলোমিটারই বাংলাদেশে৷ ১৯৯৭ সালে সুন্দরবন ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পায়৷ ৭৯৮তম বিশ্ব ঐতিহ্য এটি৷ পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বেঙ্গল টাইগারের বাস ছাড়াও এ বনে আছে চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, বন্য শূকর, বানর, গুঁইসাপ,  ভোদর,  ডলফিন,  লোনাপানির কুমিরসহ আরো অনেক বন্যপ্রাণী৷ সুন্দরবনের প্রায় ৩৩০ প্রজাতির গাছপালার মধ্যে  উল্লেখযোগ্য হলো সুন্দরী, কেওড়া, পশুর, ধুন্দল, আমুর, গরান, গর্জন, খোলশী, হেতাল, গোলপাতা, টাইগার ফার্ন, হারগোজা ইত্যাদি৷

মংলার কাছাকাছি করমজল আর হারবাড়িয়া ছাড়াও সুন্দরবন ভ্রমণের সবচেয়ে ভালো জায়গা হলো কটকা, কচিখালী, হিরণপয়েন্ট, দুবলার চর, কোকিলমনি, মান্দারবাড়িয়া, পুটনি দ্বীপ ইত্যাদি৷ এরমধ্যে কচিখালী, দুবলার চর, হিরণ পয়েন্ট, মান্দারবাড়িয়া এবং পুটনি দ্বীপ উল্লেখযোগ্য৷

সুন্দরবনে ভ্রমণে এখন অনেক পেশাদার ভ্রমণ সংস্থা এখন প্যাকেজ ট্যুর পরিচালনা করে৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বেঙ্গল ট্যুরস, গাইড ট্যুরস, সিলভার ওয়েভ ট্যুরস, পাগমার্ক ট্যুরস ইত্যদি৷

শ্রীমঙ্গল
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি চা বাগান মৌলভী বাজার জেলায়৷ আর এ জেলার শ্রীমঙ্গলেই সবচেয়ে বেশি চা বাগান৷ জীব বৈচিত্রে ভরা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানও শ্রীমঙ্গলের পাশেই৷

শ্রীমঙ্গলে বেশ কিছু সুন্দর চা বাগান আছে৷ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর সময় চারিদিকে চোখে পড়বে শুধুই চা বাগান আর চা বাগান৷ পছন্দসই যে কোনো বাগানে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দেখতে পারেন৷

শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের থাকার জন্য গড়ে উঠেছে বিভিন্ন মানের হোটেল রিসোর্টও৷ তাই চা বাগান বেড়ানোর সাথে সাথে এখানে আরো বেড়াতে পারেন বাইক্কা বিল৷ এ বিল অতিথি পাখির অন্যতম অভয়াশ্রম৷ শ্রীমঙ্গলের সীমান্তবর্তী থলই এলাকায় আছে বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতি সৌধ৷ আর কমলগঞ্জের মাধবপুর লেকও শ্রীমঙ্গল থেকে খুবই কাছের একটি দর্শনীয় স্থান৷ 

বাগেরহাট
প্রাচীন মসজিদের একটি শহর বাগেরহাট৷ বেশ কিছু প্রাচীন মসজিদ এখানকার অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ৷ ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদসহ খানজাহান আলীর এসব প্রাচীন স্থাপনা ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ৷

বাগেরহাট শহরের মাঝে হযরত খানজাহানের (র) সমাধিসৌধ, মসজিদ আর প্রাচীন দীঘি৷ এছাড়া এই দিঘীর তীরে জিন্দাপীর মসজিদ আর নয় গম্বুজ মসজিদ নামে আরো দুটি মসজিদ আছে৷ হযরত খান জাহান আলীর (র) সমাধিসৌধ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ষাট গম্বুজ মসজিদ৷ এটি বাগেরহাটের প্রধান পর্যটন আকর্ষণ৷ বিশাল এই মসজিদ ইটের তৈরি৷ ষাট গম্বুজ নাম হলেও মসজিদটিতে একাশিটি গম্বুজ আছে৷ তবে মসজিদের ভেতরের ষাটটি স্তম্ভ থাকার কারণে এর নাম হতে পারে ষাট গম্বুজ৷  স্তম্ভগুলো কালো পাথরের তৈরি৷

এছাড়া বাগেরহাটের অন্যান্য প্রাচীন মসজিদগুলো হলো ষাট গম্বুজের পাশেই সিংড়া মসজিদ, রণবিজয়পুর গ্রামে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ রণবিজয়পুর মসজিদ৷ চুনাখোলা গ্রামের চুনাখোলা মসজিদ উল্লেখযোগ্য৷ 

কুয়াকাটা
বাংলাদেশের দক্ষিণে কুয়কাটাকে বলা হয় সাগরকন্যা৷ একই সৈকত থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখতে পাওয়ার কারণে এ জায়গাটি বেশি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র৷

কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ৷ এখানকার সৈকত লাগোয়া পুরো জায়গাতেই আছে নারিকেল গাছের বাগান৷ তবে এর অনেকটাই সাগরে বিলীন হয়েছে৷ বিভিন্ন সময়ে সমুদ্রের জোয়ারের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় ভাঙনের কবলে পড়েছে সমুদ্র তীরের এই নারিকেল বাগান৷

এ সৈকতের পশ্চিম প্রান্তে আছে জেলে পল্লী৷ এখানে প্রচুর জেলেদের বসবাস৷ শীত মৌসুমে এ পল্লীর জেলেরা ব্যস্ত থাকেন শুঁটকি তৈরির কাজে৷ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পশ্চিম পাশে নদী পার হলেই সুন্দরবনের শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল৷ এর নাম ফাতরার বন৷ সুন্দরবনের অংশ হলেও তেমন কোনো হিংস্র বন্যপ্রাণী নেই সেখানে৷

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পূর্ব প্রান্তে গঙ্গামতির খাল৷ এখান থেকেই শুরু হয়েছে গঙ্গামতির জঙ্গল৷ এখান থেকে আরো সামনে গেলে ছোট্ট একটি দ্বীপে আছে লাখ লাখ লাল কাঁকড়া৷দ্বীপটি ক্রাব আইল্যান্ড বা কাঁকড়ার দ্বীপ নামে পরিচিত৷