ছবি এঁকে আনন্দ ও সাহায্য দিচ্ছে ব্রিটিশ কিশোরী
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১মাত্র ১১ বছর বয়সেই প্রতিষ্ঠিত শিল্পী হয়ে উঠেছে ব্রিটেনের ডেইজি ওয়াট৷ ছয় বছর বয়স থেকেই সে ছবি আঁকছে৷ ডেইজির চিত্রকর্ম শুধু শখের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই৷ তার আঁকা ফুলের ছবি কয়েক হাজার ইউরো দামে বিক্রি হয়৷ আয়ের কিছু অংশ ক্যানসার রোগীদের সহায়তায় দান করে ডেইজি৷
তবে তুলি হাতে নেবার কারণটা মোটেই সুখকর ছিল না৷ সেই সময়ের কথা মনে করে ডেইজি বলে, ‘‘কয়েক বছর আগে আমার নানা ও দাদির প্রায় একই সময় ক্যানসার হয়েছিল৷ তাদের মনে উৎসাহ জোগাতে আমি আঁকতে শুরু করি, কারণ তাদের খুব দুঃখ হয়েছিল৷ আমি আসলে মানুষকে আনন্দ দিতে ভালবাসি৷’’
ক্যারেন ওয়াট মেয়ের প্রতিভা লক্ষ্য করেন এবং ক্যানসার সংগঠনের কল্যাণে ছবিগুলি নিলাম করার সিদ্ধান্ত নেন৷ ডেইজির আঁকা ছবি বিক্রি করে বিভিন্ন ফাউন্ডেশনের জন্য প্রায় ৫৫,০০০ ইউরো সংগ্রহ করা হয়েছে৷ এমন মহৎ উদ্যোগ যথেষ্ট স্বীকৃতিও পাচ্ছে৷ যেমন ২০১৯ সালে ডেইজি ‘ইয়র্কশায়ার ইয়ং অ্যাচিভার অ্যাওয়ার্ড' পেয়েছিল৷ ক্যারেন জানান, ‘‘ডেইজি তার ইচ্ছামতো ছবি আঁকে৷ কখনো কম, কখনো বেশি৷ মানুষজন তার ছবি দেখে প্রশংসা করলে সে খুবই বিব্রত বোধ করে৷’’
ডেইজি একেবারে তার নিজস্ব শৈলি অনুযায়ী আঁকে বটে, কিন্তু তার রংচংয়ে ফুলের ছবির সঙ্গে প্রায়ই ইমপ্রেশনিস্ট ধারার ফরাসি চিত্রশিল্পী ক্লোদ মোনের তুলনা করা হয়৷
করোনা সংকটের সময় চিকিৎসাকর্মীদের সাহায্য করতে ডেইজি নিজের নামের ফুল দিয়ে একটি রংধনু এঁকেছে৷ গ্রিটিং কার্ড ও চুম্বকের মোটিফ হিসেবে সেটি ব্যবহার করা হচ্ছে৷ এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্রিটেনের স্বাস্থ্য পরিষেবা এনএইচএসের জন্য এরই মধ্যে ১,৯০০ ইউরো সংগ্রহ করা গেছে৷
ছবি আঁকা ছাড়াও ডেইজি স্কেটবোর্ডিং করতে, ঘোড়ায় চড়তে ও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে ভালবাসে৷ স্থানীয় এক ফুটবল ক্লাবেও সে খেলে৷ নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কেও একটা ধারণা জন্মাচ্ছে৷ বড় হলে সে বিশ্ব ভ্রমণ করে ছবি তুলতে চায়৷ তারপর ঘরে ফিরে ছবি আঁকতে চায়৷
ডেইজির মা হিসেবে ক্যারেন ওয়াট মনে করেন, ‘‘আশাকরি সে কোনো একদিন নিজের প্রতিভা টের পাবে এবং সেটি কাজে লাগিয়ে কত মানুষকে সাহায্য করেছে তা বুঝবে৷’’
ডেইজির ভবিষ্যৎ যে তারই আঁকা বর্ণিল চিত্রের মতো হবে, সে বিষয়ে তেমন সন্দেহ নেই৷
ডিনা ওসিনস্কি/এসবি