1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চুক্তি ছাড়াই সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকি দিলো ব্রিটেন

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

আগামী বছর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কের রূপরেখা প্রকাশ করে ব্রিটেনের সরকার আরো কড়া অবস্থান নিলো৷ ক্যানাডা-ইইউ চুক্তির আদলে বোঝাপড়া না হলে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের হুমকি দিচ্ছে লন্ডন৷

https://p.dw.com/p/3YZnH
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Dunham

চলতি সপ্তাহে প্রথমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তারপর ব্রিটেন দুই পক্ষের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখা তুলে ধরেছে৷ ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন পর্যায় শেষ হবার পর ২০২১ সাল থেকে ব্রিটেন ও ইইউ-র মধ্যে বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সম্পর্ক কী হবে, আগামী সপ্তাহ থেকে সে বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু হবে৷ বৃহস্পতিবার লন্ডনে ব্রিটেনের সরকার আলোচনার যে ম্যানডেট প্রকাশ করেছে, তার ফলে সংঘাতের আশঙ্কা আরো জোরালো হলো৷

ব্রেক্সিট পুরোপুরি কার্যকর হবার পরও ব্রিটেন ইইউ-র বিধিনিয়ম মেনে চললে সেই রাষ্ট্রজোটের অভ্যন্তরীণ বাজারে অবাধ প্রবেশের প্রস্তাব দিয়েছে ইইউ৷ ব্রিটেন শুরুতেই সেই প্রস্তাব পুরোপুরি নাকচ করে দিয়েছে৷ অর্থাৎ, এমন শর্ত নিয়ে আলোচনা করতেই নারাজ বরিস জনসনের সরকার৷ ইইউ-র সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দরকষাকষি করতে আগ্রহ দেখালেও তার মৌলিক শর্ত মানতে নারাজ লন্ডন৷ ব্রেক্সিটের পর প্রধানমন্ত্রী জনসন ব্রিটেনের ‘সার্বভৌমত্ব' পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর৷ এমনকি নিজস্ব জলসীমানার মধ্যে মাছ ধরার অধিকার নিয়েও কড়া অবস্থান নিচ্ছে ব্রিটেন৷

ব্রিটেনের এই কড়া অবস্থানের প্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, সবরকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে৷ এমনকি কোনো চুক্তি ছাড়াই ২০২১ সালে ব্রেক্সিট পুরোপুরি কার্যকর হতে পারে, এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না ব্রাসেলস৷ সে ক্ষেত্রে ব্রিটেনকে অন্য যে কোনো দেশের মতো শুল্ক দিয়ে ও অন্যান্য নিয়ম মেনে ইইউ-র সঙ্গে বাণিজ্য করতে হবে৷ ইইউ-র বহির্সীমানায় ব্রিটেনের ট্রাক, জাহাজ ইত্যাদি থামিয়ে নথিপত্র পরীক্ষা করা হবে৷ ব্রিটেনে রপ্তানির ক্ষেত্রে ইইউ-কেও সেই একই বাধার সম্মুখীন হতে হবে৷ ক্যানাডা ও ইইউ-র মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তির আদলে ব্রিটেনের সঙ্গে বোঝাপড়া চায় না ব্রাসেলস৷ ভৌগোলিক দূরত্ব ও নিবিড় অর্থনৈতিক সম্পর্কের কারণে ইইউ সেই পথে যেতে চায় না৷

ব্রিটেন এরই মধ্যে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির উদ্যোগ শুরু করে দিয়েছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটহাইজার বৃহস্পতিবার লন্ডন সফর করেছেন৷ ব্রিটেনের সরকার তাঁকে জানিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিকে চূড়ান্ত অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে৷

জনসন সরকারের এমন বেপরোয়া মনোভাব নিয়ে ব্রিটেনের মধ্যেও দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, এতকাল রপ্তানিবাণিজ্য ও আর্থিক পরিষেবার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর অনেকটা নির্ভরশীল থাকার পর কোনো বোঝাপড়া ছাড়াই আচমকা বিচ্ছেদের পরিণতি মোটেই সুখকর হবে না৷ বিরোধী পক্ষ এ কারণে সরকারের কড়া সমালোচনা করছে৷ বাণিজ্য ছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিন্ন করলেও ব্রিটেনের মারাত্মক ক্ষতি হবে বলে তাঁরা সতর্ক করে দিয়েছেন৷ ব্রিটেন ইউরোপীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কাঠামো ত্যাগ করায় এমন আশঙ্কা আরো জোরালো হচ্ছে৷

এসবি/কেএম (এএফপি, এপি)