চীনাদের সঙ্গে ব্যবসা করে সফল যে জার্মান
১২ জানুয়ারি ২০১৭টানেলের প্রবেশ মুখটি বেশ বড়৷ মার্টিন হ্যারেনক্নেখ্ট নির্মাণ কাজের অগ্রগতি দেখতে সেখানে যাচ্ছেন৷ অল্পক্ষণের মধ্যেই সমুদ্রসীমার পঞ্চাশ মিটার নীচে চলে যান তিনি৷ দক্ষিণ চীন সাগরের নীচে চলছে টানেল তৈরির কাজ৷ টানেলের এক অংশের কাজ প্রায় শেষ৷ হংকং বিমানবন্দরের সঙ্গে নতুনঅঞ্চলকে যুক্ত করবে এই টানেল৷ অধিকাংশই কাজই একটি টানেল বোরিং মেশিন দিয়ে করা হয়েছে যেটি নির্মাণ করেছেন হ্যারেনক্নেখ্ট৷ তাঁর কথায়, ‘‘এটি টানেল করার পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মেশিন৷ এর ডায়ামিটার ১৭ দশমিক ছয় মিটার এবং প্রথম এক দশমিক দুই কিলোমিটারের জন্য আমরা এটা ব্যবহার করেছি৷ এরকম একটি মেশিন ব্যবহারের কথা ভাবলেই বিমোহিত হতে হয়৷ আমরা পরবর্তীতে ১৪ ডায়ামিটারের মেশিন ব্যবহার করেছি, আর সেটা অ্যাসেম্বেল করতে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করতে হয়েছে৷ মেশিনটির ওজন প্রায় তিন হাজার টন৷ পুরো দানবাকৃতির৷''
হ্যারেনক্নেখ্ট মনে করেন, এই মেশিন ছাড়া নির্মাণ কাজ সম্ভব হতো না৷ ইঞ্জিনিয়াররা এটি তৈরিতে দু'বছর সময় নিয়েছেন৷ জার্মানি শুধুমাত্র যন্ত্রাংশ সরবারহ করেছে৷ প্রকল্পটি ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি যেটি হংকং নির্ভর৷ টানেল দু'টোতে কয়েক লেনে গাড়ি চলাচল করবে৷ এটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় এক দশমিক আট বিলিয়ন ইউরো৷ এটি হংকংয়ে মেট্রো সম্প্রসারণের সঙ্গে অন্যতম বড় প্রকল্প এখন৷ মার্টিন হ্যারেনক্নেখ্ট জানিয়েছেন, চীনা পার্টনারের সঙ্গে কাজ করতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না তাঁর৷ তাঁর মূল লক্ষ্য ভালো কাজ করা৷
এই উদ্যোক্তা জানেন অন্য কোনো কোম্পানির পক্ষে তাঁর এই টানেল বোরিং মেশিন তৈরি সম্ভব নয়৷ একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে তিনি অন্যদের কাজে প্রশংসাও করতে জানেন৷ আন্তর্জাতিক যৌথউদ্যোগে প্রকল্পটি ভালো চলছে৷
মার্টিন হ্যারেনক্নেখ্ট ভবিষ্যতে নতুন নতুন টানেলে কাজ করার আশা করছেন, যেখানে তাঁর এ সব মেশিন কাজে লাগবে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা আরো নীচে যেতে পারি৷ রাস্তা এবং রেলওয়ের সমন্বয় ঘটিয়ে টানেল তৈরি করতে পারি যা ১৮ মিটার ডায়ামিটারের হবে৷ এমনি আপনি চাইলে উপরে তিনলেনের রাস্তা এবং নীচে মেট্রো থাকতে পারে৷ সুতরাং ভবিষ্যতে আমরা আরে বহুমুখী টানেল তৈরি করবো যেখানে সুয়েজ, টেলিকমিউনিকেশন, ইন্টারনেট সবই অন্তর্ভূক্ত থাকবে৷''
বিশ্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ বাজারে টিকে থাকতে চাইলে নিত্যনতুন উদ্ভাবন ছাড়া উপায় নেই৷ হ্যারেনক্নেখ্ট সেটা ভালোই জানেন৷ চীনে অন্যদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আরো অনেক টানেল গড়তে চান তিনি৷
মানুয়েলা কাস্পার-ক্ল্যারিজ/এআই