1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীন-অ্যামেরিকা সংঘাতের মুখে বিশ্ব বাণিজ্য

১৯ নভেম্বর ২০১৮

এই প্রথম যৌথ ঘোষণাপত্র ছাড়াই শেষ হলো অ্যাপেক সম্মেলন৷ অ্যামেরিকা ও চীনের মধ্যে জোরালো সংঘাতের ফলে বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আরো বাধাবিঘ্নের আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/38USP
Papua-Neuguinea APEC Gipfel
ছবি: Getty Images/AFP/S. Khan

এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২১টি দেশের বাণিজ্যিক গোষ্ঠী অ্যাপেক বিশ্ব অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির উপর বড় প্রভাব ফেলে৷ এতকাল এই গোষ্ঠীর বাৎসরিক শীর্ষ সম্মেলনে অনেক বিরোধ ও সংকট মিটিয়ে ফেলা সম্ভব হয়েছে৷ কিন্তু পাপুয়া নিউগিনির রাজধানী পোর্ট মর্সবি শহরে এ বারের সম্মেলনে গোষ্ঠীর ইতিহাসে এই প্রথম কোনো যৌথ ঘোষণাপত্র সম্পর্কে ঐকমত্য হাসিল করা সম্ভব হলো না৷মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বেড়ে চলা সংঘাতের কারণেইএমন অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে৷ আয়োজক দেশের প্রধানমন্ত্রী পিটার ও'নেইল বলেন, ‘‘ঘরে যে দুই দৈত্য রয়েছে, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে৷''

এবারের সম্মেলনে একাধিক বিষয়ে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে সংঘাতের প্রতিফলন ঘটেছে৷ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ডাব্লিইটিও-র সংস্কারের প্রস্তাব তার মধ্যে অন্যতম৷ বাণিজ্য সংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে এই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্ব নিয়েও বিতর্ক দেখা গেছে৷

পোর্ট মর্সবি শীর্ষ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনুপস্থিত ছিলেন৷ ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স অ্যামেরিকার প্রতিনিধিত্ব করেন৷রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমিরপুটিন-ও আসেননি৷ তবে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং অত্যন্ত জোরালোভাবে গোটা অঞ্চলে নিজের দেশের প্রভাব-প্রতিপত্তি আরো মজবুত করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন৷ উপস্থিত নেতাদের তিনি নিজের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড' উদ্যোগে অংশ নেবার আহ্বান জানিয়েছেন৷

মাইক পেন্স তাঁর ভাষণে এবং পরে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কোনো রাখঢাক না করেই চীনের তীব্র সমালোচনা করেন৷ তিনি সাফ জানিয়ে দেন, চীন তার নীতির পরিবর্তন না করলে প্রায় ২৫,০০০ কোটি ডলার মূল্যের চীনা পণ্যের উপর থেকে শাস্তিমূলক শুল্ক তুলে নেওয়া হবে না৷ তাঁর অভিযোগ, বেইজিং নিজস্ব স্বার্থের দোহাই দিয়ে শুল্ক ও কোটা ব্যবস্থা চালু রেখেছে, বিদেশি কোম্পানিগুলিকে প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে বাধ্য করে এবং মেধাসত্ত্ব চুরি করে৷ সেইসঙ্গে চীন গোটা অঞ্চলে সমুদ্রপথে বাধা সৃষ্টি করছে৷ সে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও দুশ্চিন্তার কারণ৷ চীন সহযোগিতার নামে বিভিন্ন দেশগুলির উপর অস্বাভাবিক মাত্রায় ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন পেন্স৷

চীন ও অ্যামেরিকার মধ্যে এই সংঘাতের ফলে অ্যাপেকের বাকি সদস্যদেশগুলির মধ্যেও অস্বস্তি লক্ষ্য করা গেছে৷ অনেকের পক্ষেই কোনো এক পক্ষের দিকে ঝুঁকে পড়া সহজ নয়৷ পাপুয়া নিউগিনির মতো দেশ এতকাল এই দুই দেশ থেকেই বিনিয়োগ আদায় করে উপকৃত হয়েছে৷ তবে অন্য অনেক দেশের পক্ষে দুই নৌকায় পা দিয়ে চলা সহজ হচ্ছে না৷ চীন ও অ্যামেরিকার মধ্যে এমন বিষাক্ত পরিবেশে এমনকি ভবিষ্যতে বাৎসরিক শীর্ষ সম্মেলনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে৷ বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আরো ব্যাঘাতের সম্ভাবনার প্রেক্ষাপটে সার্বিকভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাঠামোর ভবিষ্যৎ নিয়েও দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে৷

এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ)