চির বিদায় নিলেন মার্কিন কূটনীতিক রিচার্ড হলব্রুক
১৪ ডিসেম্বর ২০১০মাত্র ২১ বছর বয়সে ভিয়েতনামে কূটনীতিক হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করেন তিনি৷ ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসনের প্রশাসনে দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ পদে উন্নীত হন হলব্রুক৷ ১৯৭৭ সালে তাঁর বয়স যখন মাত্র ৩৫ তখনই প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার তাঁকে এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হিসেবে নিয়োগ দেন৷ এরপর একাধারে পালন করে গেছেন নানা গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব৷
গত শুক্রবার পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বৈঠকে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ তিন দিন ধরে তাঁকে বাঁচানোর জন্য সবরকমের চেষ্টা চালান চিকিৎসকরা৷ তবে অস্ত্রপচারের পরও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি৷ মূলত হৃৎপিণ্ডের বাম দিক থেকে রক্তবহনকারী প্রধান ধমনী অ্যাওর্টা ছিঁড়ে যাওয়ায় তাঁকে আর বাঁচানো সম্ভব হলো না৷
৫০ বছরের কূটনৈতিক জীবনের অবসান ঘটল হলব্রুকের৷ ১৯৯৫ সালে তাঁর মধ্যস্থতায় ডেটন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা তিন বছর ধরে চলমান বসনীয় যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়েছিল৷ বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরই হলব্রুককে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের জন্য তাঁর বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেন৷ সেই থেকে তালেবান ও আল কায়েদা বিরোধী যুদ্ধের সফল সমাপ্তি ঘটাতে চেষ্টা করে আসছিলেন এই মার্কিন কূটনীতিক৷ এমনকি ঐ অঞ্চলে কাবুল এবং ইসলামাবাদকে যৌথভাবে জঙ্গি বিরোধী লড়াইয়ে নামাতে সফলও হন তিনি৷ কিন্তু সেই যুদ্ধের পরিপূর্ণ সমাপ্তি দেখে যেতে পারলেন না হলব্রুক৷
হলব্রুকের মারা যাওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে হলব্রুকের পরিবারের সদস্যদের বারাক ওবামা বলেছিলেন যে, দূত হলব্রুকের কাজের ফলেই অ্যামেরিকা এবং সারাবিশ্ব আজ অধিকতর নিরাপদ৷ হলব্রুক মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির এক সুউচ্চ চূড়া বলে মন্তব্য করেন ওবামা৷ ওবামা বলেন, তিনি জনগণের এমন একজন সেবক যিনি অ্যামেরিকান জনগণ এবং বিশ্ববাসীর প্রশংসা ও ভালোবাসা পেয়েছেন৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা