1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চার দিনে শেয়ারের দাম বাড়ল নয়গুণ

২৮ জানুয়ারি ২০২১

নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত মার্কিন ভিডিও গেম বিক্রেতা ‘গেমস্টপ'-এর একটি শেয়ারের দাম ২১ জানুয়ারি ছিল ৪৩.০৩ ডলার (তিন হাজার ৬৫৩ টাকা)৷ সেই শেয়ার ২৭ জানুয়ারি ৩৪৭.৫১ ডলারে (২৯ হাজার ৫০৪ টাকা) বিক্রি হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3oWCd
GameStop Shop
ছবি: STRF/STAR MAX/IPx/picture alliance

অর্থাৎ মাত্র চারদিনে (মাঝে দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি ছিল) গেমস্টপের শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৫ হাজার ৮৫১ টাকা৷

একবছর আগে ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি তাদের শেয়ার দাম ছিল ৪.২১ ডলার (৩৫৭ টাকা)৷

গত ১১ জানুয়ারি তিনজন নতুন পরিচালক নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিল গেমস্টপ৷ সেদিন শেয়ারের দাম ছিল ১৯.৯৪ ডলার (১,৬৯৩ টাকা)৷ এরপর থেকে শেয়ারের দাম বাড়তে শুরু করে৷ এতে মূল ভূমিকা রাখে সামাজিক মাধ্যম ‘রেডিট’-এর চ্যাট ফোরাম ‘ওয়ালস্ট্রিটবেটস’ (reddit.com/r/wallstreetbets/)৷ রিটেল ট্রেডাররা এই ফোরামে বেশ সক্রিয়৷ এই ফোরামের মাধ্যমে রিটেল ট্রেডাররা নিজেরা গেমস্টপের শেয়ার কেনার পাশাপাশি অন্যদেরকেও তা কিনতে উৎসাহ দেন৷ ফলে দিনদিন শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে৷

অ্যান্ড্রু লেফট
অ্যান্ড্রু লেফটছবি: Brendan McDermid/REUTERS

তবে গেমস্টপের শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বাড়া শুরু করে ‘শর্ট-সেলার’ গুরু বলে পরিচিত সিট্রোন রিসার্চ কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্ড্রু লেফটের একটি সিদ্ধান্তের পর৷ ২১ জানুয়ারি তিনি জানান যে, তিনি গেমস্টপের বিপরীতে বাজি ধরেছেন৷ এর মানে হচ্ছে, লেফট মনে করছেন গেমস্টপের শেয়ারের দাম শিগগিরই পড়ে যাবে৷ এবং সেখান থেকে তিনি লাভবান হবেন৷ আসলে শর্ট-সেলার মানেই হচ্ছেন এমন এক ব্যক্তি, যিনি ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট একটি শেয়ারের দাম পড়ে যাবে, তা ধরে নিয়ে তার কাছে থাকা ঐ শেয়ার বিক্রি করেন৷ এবং আশা করেন, যখন ঐ শেয়ারের দাম পড়ে যাবে তখন তিনি আবার তা কিনবেন৷ অর্থাৎ শেয়ারের দাম পড়বে সেই বাজি ধরেন একজন শর্ট-সেলার৷

এই কৌশল কাজে লাগিয়ে প্রখ্যাত হয়েছেন অ্যান্ড্রু লেফট৷ তাই তিনি যখন গেমস্টপের শেয়ার নিয়ে বাজি ধরেন তখন রেডিটের ওয়ালস্ট্রিটবেটসের রিটেল ট্রেডাররা ক্ষোভে ফেটে পড়েন৷ তারা লেফটকে হুমকি দেয়া শুরু করেন৷ হুমকির বিষয়টি লেফট এফবিআইকে জানিয়েছেন৷

এছাড়া গেমস্টপের শেয়ারের দাম যেন না কমে তার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন ওয়ালস্ট্রিটবেটসের রিটেল ট্রেডাররা৷ ফলে গেমস্টপের দাম বেড়ে বর্তমানের পর্যায়ে এসেছে৷

অ্যান্ড্রু লেফট অবশেষে হার মেনে বুধবার বাজি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷

এদিকে রেডিটের ওয়ালস্ট্রিটবেটস ফোরামে এতজন মেসেজ দিচ্ছিলেন যে মডারেটররা কুলিয়ে উঠতে পারছিলেন না৷ তাই ঘণ্টাখানেকের জন্য ফোরামটি শুধু আমন্ত্রিতদের জন্য খোলা রাখা হয়েছিল৷ ঐ সময়টুকুতে গেমস্টপের শেয়ারের দাম ২০ শতাংশ পড়ে গিয়েছিল৷ পরে ফোরামটি সবার জন্য খুলে দেয়া হয়েছে৷

অ্যান্ড্রু লেফটের মতো ওয়াল স্ট্রিটের অনেক বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান গেমস্টপের শেয়ার নিয়ে বাজি (শর্ট পজিশনস) ধরে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে৷ গেমস্টপ ছাড়াও এএমসি এন্টারটেইনমেন্ট, কস কর্পোরেশন, ব্ল্যাকবেরির মতো প্রতিষ্ঠান নিয়েও বাজি ধরেছিল ওয়াল স্ট্রিটের বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো৷ এসব বাজিতে হেরে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় ওয়াল স্ট্রিটের মূল সূচকগুলোর মান দুই শতাংশের বেশি পড়ে যায়৷

ফলে বিষয়টি বাইডেনের নতুন প্রশাসনের নজরে পড়েছে৷ নতুন নিয়োগ পাওয়া অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেনসহ প্রশাসন ‘পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ' করছে বলে জানা গেছে৷

এই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমের পোস্টের কারণে শেয়ারের দাম বাড়া-কমার বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আর্থিক খাতে কর্মরত পেশাদার ব্যক্তিরা৷

জেডএইচ/কেএম (রয়টার্স)