1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্ষুদ্র সেট তৈরি করেন বার্লিনের কারিগর

২৩ ডিসেম্বর ২০২১

স্টিভেন স্পিলবার্গ থেকে শুরু করে হলিউডের নামী চলচ্চিত্র পরিচালকরা জাদুময় পরিবেশ সৃষ্টি করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন৷ বার্লিনের এক প্রপ মেকার ক্ষুদ্র জগত তৈরি করে সেই কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন৷

https://p.dw.com/p/44jTf
DW Euromaxx | Simon Weisse
ছবি: DW

চলচ্চিত্র পরিচালক ওয়েস অ্যান্ডারসন বিংশ শতাব্দীর এক সংবাদপত্রের সম্পাদকীয়  দফতর তুলে ধরেছেন৷ তাঁর সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘দ্য ফ্রেঞ্চ ডিসপ্যাচ' এক কাল্পনিক মার্কিন সংবাদপত্রের ফরাসি শাখার কাজকর্ম ফুটিয়ে তুলেছে৷ বার্লিনে সিমন ভাইসে-র ওয়ার্কশপে চলচ্চিত্রের সেটের অনেক উপকরণ সৃষ্টি হয়েছে৷ তবে মজার কথা, তিনি ফিল্মের সব সেটেরই ক্ষুদ্র মডেল সৃষ্টি করেছেন৷ চলচ্চিত্রটি দেখলে অবশ্য সেটা টের পাবার জো নেই৷ সিমন বলেন, ‘‘ষাটের দশকের এমন প্রিন্টিং মেশিনের খোঁজ করে দেখুন, এমন কিছু পাবেন কিনা৷ খাঁটি যন্ত্র পেলেও অনেক খুঁত চোখে পড়বে৷ তবে তাতে কিছু এসে যায় না৷''

ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমে অঁগুলেম শহরে শুটিং হয়েছে৷ কিন্তু সিমনের তৈরি সেটই শহরটিকে যাটের দশকের ফ্রান্সের পরিবেশে রূপান্তরিত করছে৷ তিনি জানান, ‘‘অঁগুলেম শহরে একটি ভবনে শুটিংয়ের সময়ে একটি মাত্র অংশে ছাদ বসানোর অনুমতি পাওয়া গেছে৷ নিজস্ব এক জগত সৃষ্টি করাই ছিল উদ্দেশ্য৷ শুটিংয়ের জায়গায় যা আছে, তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলে চলে না৷ নিজস্ব শিল্পকীর্তি গড়ে তোলা জরুরি৷''

প্রপ মেকার হিসেবে সিমন সেটের নিখুঁত ক্ষুদ্র সংস্করণ সৃষ্টি করতে ভালোবাসেন৷ কখনো প্রতিভাধর অথচ অপরাধপ্রবণ এক চিত্রশিল্পীর কার্যকলাপ, কখনো বা ফ্রান্সের ছাত্র বিদ্রোহের সময় প্রেমকাহিনির দৃশ্য জীবন্ত করে তোলেন তিনি৷ চলচ্চিত্রে ‘দ্য ফ্রেঞ্চ ডিসপ্যাচ' সংবাদপত্রের সেরা প্রতিবেদনগুলি তুলে ধরা হয়েছে৷ সিমন ভাইসে ও মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক নিবিড় সহযোগিতার মাধ্যমে সেই অসাধ্যসাধন করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা আসলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছবির মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করি৷ তথাকথিত ‘অ্যানিমেটেড স্টোরিবোর্ড' সেই কাজে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে৷ গোটা চলচ্চিত্রের প্রতিটি ফ্রেম আঁকা হয়েছে এবং অ্যানিমেট করা হয়েছে৷ আমি দুই-তিন বার সেটা দেখেছি৷ ওয়েস অ্যান্ডারসনের কাছে সবাইকে নিয়ে সেই আঁকা ছবি ভালো করে দেখা ছিল অত্যন্ত জরুরি৷ আমরা কখনো কিছুটা নিজেদের খুঁটিনাটি সৃষ্টি তাতে অন্তর্গত করেছি বটে, কিন্তু আমাদের প্রতি তাঁর বিশাল আস্থা সত্যি বিস্ময়কর৷''

চলচ্চিত্রের সেট তৈরির কারিগর

সিমনের তৈরি মডেল অ্যান্ডার্সনের একাধিক চলচ্চিত্রের নান্দনিকতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ যেমন ‘আইল অফ ডগ' চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপট৷ ‘গ্র্যান্ড বুদাপেস্ট হোটেল'-এর মতো ছবিতে তার তৈরি মডেল অবিকল আসল ভবনের মতো দেখতে৷ সেই চলচ্চিত্রে ওয়েস অ্যান্ডার্সন এমনকি নিসর্গের কিছু অংশও মডেল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন৷ ওয়েস বলেন, ‘‘আমি মডেল খুব ভালোবাসি৷ এর মধ্যে এক ধরনের জাদু কাজ করে৷ মডেল বলেই আমি কাজ করছি৷ দেখলেই বোঝা যায় কোনটা আসলে মডেল৷ কাউকেই বোকা বানানো হচ্ছে না৷ চলচ্চিত্রের ইতিহাসের সঙ্গে আমি এর সঙ্গতি খুঁজে পাই৷''

১৯৮৮ সালে চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে সিমন ভাইসের কর্মজীবন শুরু হয়৷ তার প্রথম দিকের মডেলের মধ্যে ছিল তিমির গিলে ফেলা জাহাজ৷ টম টুইকার্সের ‘দ্য পারফিউম' চলচ্চিত্রের জন্যও তিনি ক্ষুদ্র কাচের বোতল সৃষ্টি করেছিলেন৷ কোয়েন্টিন তারান্তিনোর ‘ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস' চলচ্চিত্রের জন্য সিমন একটি সিনেমা হলের মডেল তৈরি করেছিলেন, যার মধ্যে নাটকীয় এক অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল৷ খোদ স্টিভেন স্পিলবার্গ তাঁর ‘ব্রিজ অফ স্পাইস' চলচ্চিত্রের জন্য তাঁকে দিয়ে এক বোমারু বিমানের ককপিটের মডেল তৈরি করিয়েছিলেন৷ সিমন ভাইসে মনে করেন, ‘‘ডিজিটাল পদ্ধতিতেও সেই কাজ করা যেত৷ কিন্তু আমার মতে এভাবে করলে গোটা প্রক্রিয়া অনেক প্রাণবন্ত হয়৷ কম্পিউটার অ্যানিমেশনে সবকিছু একেবারে নিখুঁতভাবে সৃষ্টি হয়৷ কিন্তু খুব কাছ থেকে এই মডেল দেখলে সবকিছু যে আঁকাবাঁকা, তা চোখে পড়বে৷ কিন্তু বাস্তব জীবনেও তো সে রকমই দেখা যায়!''

সে কারণেই এমন জাদু সৃষ্টি হয়৷ নিজের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে সিমন ভাইসে নিজস্ব জগত গড়ে তোলেন৷ তাঁর ছোঁয়ায় চলচ্চিত্রে আবেগ ও অ্যাকশনের আবহ সৃষ্টি হচ্ছে৷

গেয়ারহার্ড সনলাইটনার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য